আমাদের ভারত, ৩০ জুলাই: ট্রেন দুর্ঘটনা নিয়ে তৃণমূল কেন্দ্রকে আক্রমণ করার পরই জবাব দিয়েছেন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ তথা বঙ্গ বিজেপির মুখপাত্র শমিক ভট্টাচার্য। তাঁর কথায়, রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলকে আইসিইউতে ঢুকিয়ে দিয়ে গেছেন। তার খেসারত দিতে হচ্ছে এখন।
একের পর এক রেল দুর্ঘটনা ঘটছে। মঙ্গলবার ঝাড়খন্ডে রেল দুর্ঘটনার পর প্রশ্ন তুলে কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। রেল দুর্ঘটনা মোকাবেলিয়ায় কেন কবচের ব্যবস্থা দেশজুড়ে চালু হলো না? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারা। একদিকে সংসদে রেল দুর্ঘটনা নিয়ে কেন্দ্রকে আক্রমণ করেছেন তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পাল্টা দিয়ে বিজেপি বলেছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন রেলকে আইসিইউতে পাঠিয়েছিলেন। এটা আমাদের কথা নয়, মমতার পর তার দলের যিনি রেলমন্ত্রী ছিলেন তিনি এ কথা বলেছেন
সংসদে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এখন প্রায় নিত্যদিন রেল দুর্ঘটনা ঘটছে। রেলওয়ে স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান থাকাকালীন বারবার বলেছি নিরাপত্তায় জোর দেওয়া প্রয়োজন। এখন দুর্ঘটনা প্রায় ঘটছে। রেলমন্ত্রী কেন সংসদে এসে আমাদের কাছে তথ্য তুলে ধরছেন না?
কিন্তু এর পাল্টা জবাব দিতে দেরি করেনি বিজেপি। রাজ্যসভার সাংসদ তথা রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শৌমিক ভট্টাচার্য বলেছেন, রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলকে আইসিইউতে ঢুকিয়ে দিয়ে গেছেন। এটা আমাদের কথা নয়, মমতার পর তার দলের যিনি রেলমন্ত্রী হয়েছিলেন তিনি এ কথা বলেছেন। পরবর্তীকালে তাকে সরিয়ে মুকুল রায়কে মন্ত্রী করা হয়। তিনি কী করেছিলেন তা সকলেরই জানা। ঘোষণা সর্বস্ব তৃণমূলের যে রেলমন্ত্রক পরিচালনা, তারই খেসারত আজ দিতে হচ্ছে। আর এখন রেলের ট্র্যাকগুলো ঠিক করার জন্য বর্তমান সরকার চেষ্টা করছে। দুর্ঘটনা ঘটছে, এটা দুর্ভাগ্যজনক। তাঁর দাবি, সরকার দায় এড়াবে না। সরকার পাশে থাকবে।
২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেল মন্ত্রিত্ব ছেড়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হন। তখন তার জায়গায় রেলমন্ত্রী হয়েছিলেন দীনেশ ত্রিবেদী। পরে তাকে সরিয়ে মুকুল রায়কে রেলমন্ত্রী করা হয়।
রেল দুর্ঘটনা নিয়ে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, দুর্ঘটনা কেন ঘটছে সেটা দেখা দরকার। ত্রুটি থাকলে সে ত্রুটি সংশোধন করা উচিত। আর যদি করমন্ডলের মতো ষড়যন্ত্র থাকে সেটাও চিহ্নিত করার ব্যবস্থা করতে হবে। রেল দুর্ঘটনাকে কেউ সমর্থন করে না। রেল যাত্রা নিরাপদ হোক। ভারতের ৭০ শতাংশ লোক রেলের উপর নির্ভর।
মঙ্গলবার হাওড়া থেকে মুম্বাই গামী সিএসএমটি মেল ঝাড়খণ্ডের চক্রধরপুরের কাছে লাইনচ্যুত হয়ে যায়। এই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। আগে ১৮ জুলাই উত্তরপ্রদেশের গুন্ডায় ডিব্রুগড়- চন্ডিগড় এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল চারজনের। তার আগে ১৭ জুন দার্জিলিং জেলার রাঙাপানি রেল স্টেশনের সামনে মালগাড়ির ধাক্কায় কাঞ্চনজঙ্গা এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল ১০ জনের। একের পর এক দুর্ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে রেলের সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে।