আমাদের ভারত, দিঘা, ১৪ ডিসেম্বর : নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল এর প্রতিবাদে রবিবার থেকে রাজ্য জুড়ে পথে নামতে চলেছে তৃণমূল। সোমবার থেকে নিজেও পথে নামতে চলেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বানিজ্য সম্মেলন শেষ করে দিঘা থেকে কলকাতা ফেরার পথে গতকাল দুপুরে দিঘা হেলিপ্যাড ময়দানে সাংবাদিক সম্মেলন করে এই কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি বলেন, মানুষে মানুষে ভাগ করে দেশ জ্বলছে, রাজ্য জ্বলছে। অশান্তির আগুনের চিতায় আর যেন মানুষ বলি না হয়। আমাদের রাজ্যে এখন পর্যন্ত ৩০ জন হয় আত্মহত্যা করেছে, নয় মারা গেছে। আসামেও প্রচুর লোক মারা গেছে। ত্রিপুরাতেও মারা গেছে। এসব বন্ধ করতে এবং নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে আগামী সোমবার বাবা সাহেব আম্বেদকরের মূর্তি থেকে শুরু করে গান্ধী মূর্তির পাদদেশ স্পর্শ করে রবি ঠাকুরের জন্মস্থান জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ি পর্যন্ত পদযাত্রা করবেন তিনি। আর মঙ্গলবার পদযাত্রা করবেন যাদবপুর ৮ বি বাসস্ট্যান্ড থেকে গান্ধী মূর্তির পাদদেশ পর্যন্ত। তৃণমূল কংগ্রেসের ডাকা কর্মসূচিতেও সকল রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী ও সর্বস্তরের মানুষকে আহ্বান জানান তৃণমূল নেত্রী। বিজেপি ছাড়া সারা দেশের সকল রাজনৈতিক দলকে এনআরসি ও সিএবি’র বিরুদ্ধে গণ আন্দোলন গড়ে তোলার ডাক দেন তিনি। পাঞ্জাব, কেরালার মূখ্যমন্ত্রীদের উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, বহু রাজ্য নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল প্রয়োগ করতে দেবেনা। পশ্চিমবঙ্গে যে এনআরসি বা সিএবি হবে না তা আরও একবার নিশ্চিত করেন মুখ্যমন্ত্রী। সব ধর্ম, সব বর্ণ, সব সম্প্রদায়ের মানুষকে সংঘবদ্ধভাবে এনআরসি ও সিএবি’র প্রতিবাদে এগিয়ে আসার আহবান জানান রাজ্যের প্রশাসনিক শীর্ষকর্তা। ‘নো এনআরসি, নো ক্যাব’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে সব ধর্ম, সব বর্ণ, সব সম্প্রদায়ের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে রবিবার সব জেলা সদরে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের পথে নামার নির্দেশ দেন তিনি। সোমবার দিন রাজ্যের প্রতিটি ব্লকে তৃণমূল কর্মীদের পথে নামতে বলেন তৃণমূল নেত্রী। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও প্রতিবেশী রাজ্য আসাম, ত্রিপুরার অস্থির পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে গান্ধীজির দেড়শত বর্ষ পূর্তি উপলক্ষে আগামী ১৭ ডিসেম্বর দিল্লি যাওয়ার পরিকল্পনাও স্থগিত করেন মুখ্যমন্ত্রী। ফলে, ডিসেম্বরের শীতে বাংলার রাজনৈতিক উত্তাপ আগামী সপ্তাহের প্রথমদিন থেকে বাড়বে বলেই মনে করছেন
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।