মহুয়ার কর্মিসভার পরেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে খুন হতে হল তৃণমূল নেতাকে

স্নেহাশীষ মুখার্জি, আমাদের ভারত, নদিয়া,
৮ ডিসেম্বর: মহুয়া মৈত্রের কর্মিসভার দুদিনের মধ্যেই খুন হলেন এক তৃণমূল নেতা। নিহত তৃণমূল নেতা বাপ্পা সরকার (৪০) গয়েশপুর পৌরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের যুব শক্তির কনভেনার ছিলেন। গতকাল রাতে ওষুধ আনতে যাওয়ার সময় পথের মাঝে তাঁকে বুকে গুলি করে খুন করা হয়। এই ঘটনায় তীব্র উত্তেজনায় ছড়িয়েছে গয়েশপুর এলাকায়।

গত দুদিন আগে ছিল গয়েশপুরে তৃণমূলের কর্মিসভা। সেখানে নদীয়া জেলা সভাপতি তথা সাংসদ মহুয়া মৈত্র আসার পরেই প্রাক্তন এবং বর্তমান তৃণমূলের নেতারা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। শুরু হয়ে যায় মহুয়া মৈত্র কে ঘিরে বিক্ষোভ। প্রসঙ্গত কর্মিসভা শুরুর আগেই সেদিন সাংবাদিকদের বের করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন মহুয়া মৈত্র। কারণ তিনি জানতেন যে এখানে গন্ডগোল হবেই। সে কারণে তিনি সাংবাদিকদের কটু কথা বলে সভা থেকে বের করে দেওয়ার নির্দেশ দেন বলে দলীয় নেতাদের অনেকেই জানিয়েছিলেন। কিন্তু এর পরও যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটেনি তা গয়েশপুরের ঘটনা থেকেই বোঝা যায়। গতকাল রাতেই খুন হতে হল গয়েশপুরের সুকান্তনগরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের ২২৫ নম্বর বুথের তৃণমূল যুব শক্তির কনভেনার বাপ্পা সরকার কে।

তৃণমূলের প্রাক্তন নেতাদের বক্তব্য, বাপ্পা সরকার দলের এক নিষ্ঠ কর্মী ছিলেন। সুকান্তনগরে ওর যেখানে বাড়ি ছিল সেই ২২৫ নম্বর বুথেরই বাপ্পা তৃণমূলের যুবশক্তির কনভেনার ছিল। ও একজন দক্ষ সংগঠক ছিল। আমাদের দলের খুব পুরনো ছেলে। ওর হাত দিয়ে অনেক ছেলে যুবশক্তি তে যোগদান করেছিল। এখানে নতুন যে সভাপতি সে লোক পাচ্ছে না। তাই বাপ্পাকে সরতে হলো। বাপ্পা থাকলে তাদের অসুবিধা হচ্ছিল কারণ বাপ্পা ডাকলে শয়ে শয়ে ছেলেরা তার কথায় ছুটে আসত। আর এটাই হয়েছে গাত্র জ্বালা।
তৃণমূলের কর্মীদের একাংশের দাবি এটা কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ব্যাপার নয়। আসলে ওই এলাকায় বিজেপির একটা বাড়বাড়ন্ত ছিল। গতকাল বাড়ি বাড়ি বিজেপির জনসংযোগ ছিল। সেই সময় বাপ্পার সঙ্গে বিজেপি কর্মীদের মধ্যে একটা বচসা হয়েছিল। হয়তো সেই খুনটা এখান থেকেও হতে পারে।

তৃণমূলের গয়েশপুরের প্রশাসক মরন দে জানান, বাপ্পা সরকার তৃণমূলের ১৮ নম্বর বুথের যুব শক্তির কনভেনার ছিলেন। দুষ্কৃতীরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি করেছে। কে বা কারা এই কাজ করল তা এখনও পরিষ্কার নয়। পুলিশকে বলেছি যারা এই কাজ করে থাকুক তারা যেন কঠিন সাজা পায়। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।

বাপ্পা সরকারের ছেলে বিশাল সরকার বলেন, হঠাৎ আমার ফোনে একটা বন্ধুর ফোন আসে। আমি জানতে পারি আমার বাবার বুকে গুলি লেগেছে। আমার বাবা আর নেই। আমার বাবার একটা চায়ের দোকান ছিল আর দোকানের পেছনে একটা ফ্যাক্টরিতে বাবা ক্যাটারিং এর কাজ করতো। গতকাল বাবা চায়ের দোকান থেকে বেরিয়ে ছিল ওষুধ কিনতে কিন্তু পথের মধ্যেই আমার বাবাকে কে বা কারা গুলি করে। আমার বাবা তৃণমূল করত। কারো সাথে কোনো গন্ডগোল ছিল না। কিন্তু তা সত্ত্বেও কেন যে আমার বাবাকে চলে যেতে হল কে জানে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *