ভারত, হাওড়া, ৬ জানুয়ারি: ত্রাণ বিলিতেও তৃণমূলের বাধা! রাজ্যে যখন প্রচন্ড শীতে মানুষ কাবু, তখন তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের বাধায় নির্দিষ্ট গ্রামের মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্র বিলি করতে পারলেন উত্তর ২৪ পরগনার ঘোলার বিবেকানন্দ পার্ক সপ্তরথী ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সদস্যরা। বাধ্য হয়ে তারা প্রায় ৩০ কিমি. দূরে অন্য একটি গ্রামের দুস্থ মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্র বিলি করলেন।
ঠিক ছিল হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর ব্লকের খুরদার ইটারাই গ্রামে ত্রাণ বিলি করা হবে। কারণ, গত বন্যায় এই গ্রামের মানুষ ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। সেই সময় বিবেকানন্দ পার্ক ওয়েলফেয়ার সোসাইটি সদস্যরা ইটারাই গ্রামের মানুষের মধ্যে চাল, ডাল, তেল, বিস্কুট এবং শিশুদের জন্য দুধ বিলি করেছিলেন। এবারও তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ইটারাই গ্রামের গরিব মানুষদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিলি করবেন। সেই মত ত্রাণ বিলির আগে তারা খুরদা গ্রামে যান এবং ২৫০ জন মানুষের ভেতর কুপন বিলির উদ্যোগ নেন। কিন্তু সেই সময় তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের বাধার মুখে পড়েন। সোসাইটির অন্যতম সদস্য মৃত্যুঞ্জয় পাল জানান, পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে বলা হয়, সমস্ত জিনিসপত্র তাদের হাতে তুলে দিতে হবে, তারপর তারা তা বিলি করবেন। কিন্তু সপ্তরথী ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সদস্যরা তা মেনে নেননি। পরে আরএসএসের ব্যবস্থাপনায় ইটারাই গ্রাম থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে আমতা বিধানসভার জয়পুর ব্লকের কাশমলি গ্রামে শীত বস্ত্র বিলি করলেন তাঁরা।
মৃত্যুঞ্জয় পাল জানান, গত বন্যায় এই গ্রামটিও ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এখনো মাঠে ফসল লাগানোর মত অবস্থা নেই। প্রচন্ড শীতে ছেলেমেয়ে নিয়ে কষ্টে আছেন গ্রামের গরিব মানুষরা। তাই তৃণমূলের বাধার পর এই গ্রামটিকে বেছে নেওয়া হয়েছিল। গতকাল গ্রামের ২৫০ জন মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্র বিলি করা হয়। বিলি করা সামগ্রীর মধ্যে ছিল কম্বল, বাচ্চাদের সোয়েটার, চাদর এবং মহিলাদের জন্য শাড়ি। এই শীতের মধ্যে দানসামগ্রী পেয়ে খুশি গ্রামের গরিব মানুষরা।
মৃত্যুঞ্জয় পাল জানান, প্রথমবার বাধা পেয়ে এবার চুপচাপ বিলি করা হচ্ছিল। তবে, শেষ মুহূর্তে জানতে পেরে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য এসে হাজির হয়েছিলেন। তবে, তিনি কোনও সমস্যার সৃষ্টি করেননি, কিছুক্ষণ পরে চলে যান।
এই ত্রাণ বিলিতে সপ্তরথীর সদস্যদের মধ্যে আগ্রহ ছিল চূড়ান্ত। উত্তর ২৪ পরগনার ঘোলা থেকে গতকাল রবিবার ২৮ জন সদস্য হাওড়ার কাশমলি গ্রামে গিয়েছিলেন। তার মধ্যে ১২ জন মহিলাও ছিলেন। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন আরএসএসের জেলা কার্যবাহ চিত্ত মান্না, জেলা সেবা প্রমূখ শ্যামগোপাল রিত, সহ প্রচার প্রমূখ নরেন দত্ত এবং খন্ড সেবা প্রমূখ।