বিজেপির দখলে থাকা খড়্গপুর সদর বিধানসভার আসনে জয়ী তৃণমূল

কুমারেশ রায়, আমাদের ভারত, খড়গপুর, ২৮ নভেম্বর: প্রত্যাশা মতোই ফল পেল তৃণমূল। গত ৪ বছর ধরে বিজেপির দখলে থাকা খড়্গপুর সদর বিধানসভার আসন ছিনিয়ে নিল। এই প্রথম খড়্গপুর আসনে জয়ী হল তৃণমূল।

দীর্ঘ ৫ দশক ধরে এখানে জয়ী হয়ে আসছে কংগ্রেস প্রার্থী। ২০১৬ র বিধানসভা ভোটে প্রয়াত কংগ্রেস নেতা ও টানা ১০ বারের বিধায়ক জ্ঞানসিং সোহান পালকে হারিয়ে জয়ী হন বিজেপির দিলীপ ঘোষ। ব্যবধান ছিল ৬৫০০ ভোট। তিনি লোকসভা ভোটে প্রার্থী হয়ে শুধু খড়্গপুরের আসনে বিজেপির ব্যবধান বাড়িয়ে নেন ৪৫ হাজার ভোট। একাধারে সাংসদ, একাধারে বিজেপির রাজ্য সভাপতি এবং সর্বপরি খড়্গপুরকে কংগ্রেস মুক্ত করতে পেরে খড়্গপুরের রাজনৈতিক মানচিত্রে একছত্র মাইলেজ পেয়ে আসা বিজেপিকে যে এভাবে মুখ থুবড়ে পড়তে হবে তা অনেক তৃণমূল নেতা কর্মীরও ভাবতে পারেননি।

২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ভোট পেয়েছিল ৩৯ .২৯ শতাংশ। তৃণমূলের ভোট ছিল ২১.৭৩ শতাংশ। আর ২০১৯ এর লোকসভা ভোটে বিজেপি ভোট পেয়েছিল ৪৮.৭২ শতাংশ। তৃণমূল পেয়েছিল ৪২.৩১ শতাংশ। এই ব্যবধান টপকে জয় ছিনিয়ে আনা মোটেই সহজ ছিল না।

উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী প্রদীপ সরকার পেয়েছেন ৭২৪২৮ টি ভোট। মোট ভোটের ৪৭.৬৬ শতাংশ। বিজেপি প্রার্থী প্রেমচাঁদ ঝাঁ পেয়েছেন ৫১৬৪০ টি ভোট। মোট ভোটের ৩৩.৯৮ শতাংশ। বাম ও কংগ্রেস জোট প্রার্থী চিত্তরঞ্জন মন্ডল পেয়েছেন ২২৫৩২ টি ভোট। মোট ভোটের ১৪.৮৩ শতাংশ। মোট ভোট পড়েছিল ১৫১৯৭০ টি। সংখ্যাতত্বের হিসেবে তৃণমূল এই আসন বিজেপির থেকে শুধু ছিনিয়েই নেয়নি। নিজেদের ভোট প্রায় ৬০ শতাংশে নিয়ে যেতে পেরেছে। বিজেপি থেকে বহিস্কৃত নির্দল প্রার্থী প্রদীপ পট্টনায়েক পেয়েছেন মাত্র ৭৫৩ টি ভোট। যা নোটার থেকেও কম। নোটায় ভোট পড়েছে ১৬৯৭ টি, যা শিবসেনা, ভারতীয় নয়া অধিকার রাখা পার্টি এবং আরও দুই নির্দল প্রার্থীর থেকে বেশি।

জয়ের পর তৃণমূলের প্রদীপ সরকার জানান, এই জয় মমতা ব্যানার্জির জয়। উন্নয়নের জয়। খড়্গপুরের মানুষ একজন পূর্ণ সময়ের বিধায়ক চাইছিলেন যাকে খড়্গপুরের মধ্যেই পাওয়া যাবে।

বিজেপির প্রেমচাঁদ ঝাঁ জানান, তৃণমূল প্রচুর টাকা ঢেলেছে। পুলিশ – প্রশাসনকে ব্যবহার করেছে। বুথ কব্জা করেছে। ফলাফল বিশ্লেষণ করে তাঁরা হারের কারণ খুঁজবেন।

বিক্ষুদ্ধ বিজেপি তথা নির্দল প্রার্থী প্রদীপ পট্টনায়েক জানান, এই ফল দিলীপ ঘোষের অহংকারের ফল। এনআরসি ভয়, কর্মহীনতা, রেলের অনুন্নয়নের ফল। অবিলম্বে দিলীপ ঘোষকে রাজ্য সভাপতি থেকে সরানো উচিত বলে বলে তিনি মনে করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *