তিন বছর পর ফের কালোচিতাবাঘ দর্শন বক্সা বাঘ বনে

আমাদের ভারত, আলিপুরদুয়ার, ১ জানুয়ারি: বক্সা বাঘ বনে আবারও কালো চিতার দর্শন। বনদফতরের ট্র‍্যাপ ক্যামেরায় প্রায় ৩ বছর পর অতি বিরল কালো চিতার ছবি উঠে এসেছে। নতুন বছরের শুরু দিনই কালো চিতার একটি ছবি প্রাকশ করেছেন বক্সার আধিকারিকরা। স্বাভাবিকভাবে উচ্ছ্বাসিত বনাধিকারিক, বনকর্মী থেকে প্রকৃতিপ্রেমী সংগঠনগুলি।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে শেষবার বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ভেতর বনদফরের ট্র‍্যাপ ক্যামেরাতে ধরা পড়েছিল কালো চিতাবাঘ। ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে বাঘ বনের জয়েন্তীতে স্থানীয় এক গাইড শুধুমাত্র মোবাইল ক্যামেরাতে জোড়া ব্ল্যাক প্যান্থারের ছবি তুলেছিলেন। এরপর উত্তরবঙ্গে কারোর পক্ষেই আর ব্ল্যাক প্যান্থারের ছবি তোলা সম্ভব হয়নি। স্বাভাবিকভাবেই বছরের প্রথম দিনেই অতিবিরল প্রজাতির চিতাবাঘের ছবিটি বনদপ্তর প্রকাশ করায় উৎসাহ ছড়িয়েছে। ব্যাঘ্র প্রকল্পের ফিল্ড ডিরেক্টর শুভঙ্কর সেনগুপ্ত জানান, “নিরাপত্তার কারনেই ছবিটি ঠিক ব্যাঘ্র প্রকল্পের কোথায় তোলা হয়েছে তা আমরা বলছি না। তবে ব্ল্যাক প্যান্থারের অস্তিত্ব রয়েছে। শীতকালে এদের দৃশ্যমানতা বেড়ে যায়। বক্সার জীব বৈচিত্র্য যে যথেষ্টই ভালো সুন্দর রয়েছে তা বলা যায়।”

জানা গেছে, শরীরে মেলানিনের পরিমান বেশি হলে হলুদ-কালো চিতাবাঘ কালো কুচকুচে চেহারার হয়ে যায়। তবে তেমন ঘটনা সচরাচর ঘটে না। আফ্রিকাকে বাদ দিলে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার জঙ্গলে কালো চিতাবাঘ দেখা যায়। উত্তরবঙ্গের ন্যাওড়াভ্যালি,গরুমারা, জলদাপাড়া, বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পতে কালো চিতাবাঘের অস্তিত্ব রয়েছে। এরা পুরোপুরি নিশাচর। দিনের বেলা তাদের দেখা পাওয়ার ঘটনার কোনও পরিস্কার নজির নেই। এবার প্রায় ৩ বছর পর বক্সাতে ফের বনদপ্তরের নিজস্ব ট্র‍্যাপ ক্যামেরাতে উঠে এসেছে ছবি। খুশি বনকর্তারাও। জানা গেছে, শীতের পাতাঝড়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। জঙ্গল অনেকটাই পরিস্কার।পাহারের উপরের দিকে ঠান্ডা বেশি থাকায় বিভিন্ন ধরনের বন্যপ্রাণীরা ইতিমধ্যে অনেকটাই সমতলের জঙ্গলে চলে এসেছে।

ন্যাফের কোয়ার্ডিনেটর অনিমেশ বসু বলেন,”বক্সার জঙ্গলে প্রথম থেকেই ব্ল্যাক প্যান্থার রয়েছে। এমনিতেই প্রচন্ড লাজুক। তারপর বক্সার গভীর জঙ্গলে দিনের বেলা এর দেখা পাওয়া প্রায় অসম্ভব। তবে এটা পরিস্কার বোঝা যাচ্ছে বক্সায় সাধারণ লেপার্ডের সংখ্যা যেমন যথেষ্টই রয়েছে তেমনি মেলানেস্টিক বা কালো চিতাবাঘ রয়েছে। নতুন বছরের শুরুতে এটা খুবই ভাল খবর।” এদিকে,শুধু কালো চিতাবাঘ নয়, সাধারণ লেপার্ডের পাশাপাশি ক্লাউডেড লেপার্ড বা মেঘলা চিতাবাঘের দেখা মেলে বক্সার জঙলে। গত কয়েক বছরে একাধিক বার বনদপ্তরের ক্যামেরায় ক্লাউডেড লেপার্ডের ছবিও উঠে আসার নজির রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *