আগামী ৫-৬ মাসে হাজার হাজার স্বামীদের গ্রেপ্তার করা হবে: হিমন্ত বিশ্বশর্মা

আমাদের ভারত, ২৮ জানুয়ারি: ভারতে মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮ বছর হলেও এর নিচের বয়সের মেয়েদের জোর করে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তার ফলে অপ্রাপ্ত বয়সেই তারা মা হচ্ছে এবং একটা বড় অংশের কিশোরী মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। ১৮-র নীচের কিশোরীদের বিয়ে করা আইনের চোখে অপরাধ। এবার এই সমস্যা সামাল দিতেই কঠোর আইন প্রণয়নের পরিকল্পনা করছে অসম সরকার। গুয়াহাটিতে একটি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, আগামী পাঁচ থেকে ছয় মাসে হাজার হাজার স্বামীদের গ্রেপ্তার করা হবে। বৈধভাবে বিবাহিত স্বামী হলেও ১৪ বছরের নিচে কোনো কিশোরীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক আইনত অপরাধ।

অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, যৌন অপরাধ মোকাবিলায় কঠোর পক্সো আইন এবং বাল্যবিবাহ ও অপ্রাপ্তবয়স্ক মাতৃত্ব রোধে কঠোর আইন প্রণয়নের পরিকল্পনা করছে তার সরকার। আগামী পাঁচ থেকে ছয় মাসের মধ্যে সে আইন আনার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। তিনি বলেন, “আগামী পাঁচ থেকে ছয় মাসে হাজার হাজার স্বামীদের গ্রেপ্তার করা হবে। কারণ যতই বৈধভাবে বিবাহিত স্বামী হোক না কেন ১৮ বছরের নিচে কোনো কিশোরীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক আইনত অপরাধ।” ভারতের বিয়ের জন্য মেয়েদের বৈধ বয়স ১৮ বছর। এর নিচে কোনো কিশোরীকে বিয়ে করা আইনের চোখে অপরাধ। অসমের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এবার অনেকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। যারা অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের বিয়ে করেছেন।

একই সঙ্গে বিয়ের বয়স নিয়ে কথা বলার সময় মেয়েদের মাতৃত্বের সময় নিয়েও নিজের মত প্রকাশ করেন হিমন্ত। তিনি বলেন, মা হবার জন্য মেয়েদের বেশি দিন অপেক্ষা করা উচিত নয়, তাতে বেশি জটিলতা বাড়তে পারে। তার মতে মা হওয়ার সঠিক বয়স ২২ থেকে ৩০ বছর। এরপরে মুচকি হেসে তিনি বলেন, যে সব মহিলারা এখনো বিয়ে করেননি তাদের তাড়াতাড়ি করে নেওয়া উচিত। তার কথায়, “আমরা অপ্রাপ্তবয়স্ক মাতৃত্বের বিরুদ্ধে লড়াই করছি। একইসঙ্গে বলতে চাই মহিলাদের মাতৃত্বের জন্য বেশি দিন দেরি করা উচিত নয়। অনেকে সেটা করে থাকেন। ভগবান আমাদের শরীরটা এমন ভাবে তৈরি করেছে যে, সেখানে সব কিছুর জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় রয়েছে।”

বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে বেশ কয়েক ধাপ এগিয়েছে অসম সরকার। অসমের যেসব যুবক ১৪ বছরের নিচে মেয়েদের বিয়ে করবে পকসো আইনে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে বলে সোমবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অসমের মন্ত্রিসভা। রাজ্যে শিশু মৃত্যুহার ও প্রসবের সময় মায়ের মৃত্যুহার কমানোর জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই মৃত্যুর অন্যতম কারণ বাল্যবিবাহ। তাই সেই সমস্যাটি গোড়া থেকে উপড়ে ফেলতে তৎপর অসমের প্রশাসন। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, অসমে প্রায় ৩০% অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের বিয়ে হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *