আমাদের ভারত, হুগলী, ১৯ আগস্ট: ২০০০ সাল নাগাদ সংসারের অভাব দূর করতে বাবার হাত ধরে ওড়িশা থেকে বাংলায় আসা সূর্য্যকান্ত পান্ডার। বাবা পূন্যচন্দ্রবাবু হুগলির চুঁচুড়ায় জেলা খাদ্য ভবনের কাছে ভাড়া থেকে রান্নার কাজ করতেন। প্রথম প্রথম বাবার সাথে হেলপার হিসাবে কাজে গিয়ে শারীরিক সমস্যা শুরু হয়। এরপর চিকিৎসকের পরামর্শ মত সূর্য্যকান্তকে রান্নার কাজ ছেড়ে দিতে হয়। কিন্তু সংসারে যে বড় অভাব। তাই চুঁচুড়ার খড়ুয়াবাজারে বিশ্বনাথ সাঁধুখার মুদিখানার দোকানে কাজে যোগ দেয় সূর্য্যকান্ত।
ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা থাকলেও সময় অর্থের অভাবে আর খেলা হয়নি। তবে ইচ্ছাটা ছিলই। তাই চুঁচুড়া ময়দানে হুগলি স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েসনের ক্রিকেট ম্যাচগুলিতে স্কোরার হিসাবে কাজ শুরু করে। ২০১০-এ সূর্য্যকান্তর বাবা এবং ২০১৪-তে মা গত হন। এরপর মুদিখানার দোকানে কাজ করতে করতেই ক্রিকেটের নিয়মাবলি নিয়ে পড়াশুনা শুরু করেন তিনি। ২০১৫ সালে ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েসন অফ বেঙ্গলের স্কোরার পরীক্ষায় বসে উত্তীর্ণ হন সূর্য্যকান্ত। এরপর রঞ্জি সহ একের পর এক খেলায় স্কোরার হিসাবে দ্বায়িত্ত্ব সামলান।
২০১৮সালে সিএবির সেরা স্কোরার হিসাবে পুরস্কৃত হন। আর ২০২০-তে সরাসরি আইপিএলের স্কোরার হিসাবে সুযোগ করে নিলেন সূর্য্যকান্ত। আগামীকালই বেঙ্গালুরুতে উড়ে যাবেন তিনি। সেখান থেকে সোজা দুবাই।
তবে, এখানেই শেষ নয়, সূর্য্যের স্বপ্ন একদিন তিনি আন্তর্জাতিক ম্যাচের স্কোরার হবেন। কিন্তু তারজন্য তাঁকে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের পরীক্ষায় উত্তীর্ন হতে হবে। আইপিএলের পরই সেদিক নিয়ে ভাবতে চান তিনি। ওড়িশা জন্মভূমি, আর বাংলা কর্মভূমি। সূর্য্যকাম্তের কথায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণও তো এক জায়গায় জন্মেছিলেন আর এক জায়গাকে কর্মভূমি হিসাবে বেছে নিয়েছিলেন। যে মুদিখানার দোকানে সূর্য্যকান্ত কাজ করেন সেই দোকান মালিক বিশ্বনাথের কথায় দোকান কামাই করলে আমার কোনও অসুবিধা নেই, ও আরও এগিয়ে যাক!