President’s rule, Sandeshkhali, NCW, রাষ্ট্রপতি শাসন জারি ছাড়া উপায় নেই, সন্দেশখালির নির্যাতিতাদের সঙ্গে কথা বলার পর দাবি জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সনের

আমাদের ভারত, ১৯ ফেব্রুয়ারি: সন্দেশখালির অবস্থা ভয়াবহ। ধর্ষণ শ্লীলতাহানির ঘটনায় মহিলারা আতঙ্কে রয়েছেন। রাজ্য পুলিশের উপর আস্থা নেই মহিলাদের। তাই রাষ্ট্রপতি শাসন ছাড়া উপায় নেই। এসসি কমিশনের পর এবার রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি করলেন জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মাও।

বৃহস্পতিবার উত্তর ২৪ পরগণার সন্দেশখালিতে এসেছিলেন জাতীয় তপশিলি কমিশনের প্রতিনিধি দল। কমিশনের চেয়ারম্যান অরুণ হালদার বলেছিলেন, রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা ছাড়া কোনো উপায় নেই। সুপারিশ রিপোর্ট আকারে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে জমা দেওয়া হয়। এবার জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সনও স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন সন্দেশখালির যা পরিস্থিতি তাতে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।

সোমবার সন্দেশখালির পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে যান জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা। সারা দুপুর তিনি গ্রামের নির্যাতিতা মহিলাদের সঙ্গে কথা বলেন। আর তারপরেই রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি করেন তিনি। জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা জানান, সন্দেশখালিতে দিনের পর দিন মহিলাদের ওপর অত্যাচার হয়ে চলেছে। তিনি জানান, তার কাছে আজ ১৮টা অভিযোগ জমা পড়েছে। বহু মহিলার সঙ্গে মারাত্মক পর্যায়ের শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছে। জামা কাপড় খুলে ফেলতে বলা হয়েছে দেহের বিভিন্ন জায়গায় হাত দেওয়া হয়েছে মহিলাদের বলেও জানান তিনি। রেখা শর্মা বলেন, “দুটি ধর্ষণের ঘটনা আমি নিজে শুনেছি। একটি ধর্ষণের ঘটনায় এখনই অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।” গ্রামের সব মহিলারাই আতঙ্কে রয়েছে বলে জানান তিনি।

সোমবার সকালে বিমানবন্দর থেকে সোজা সন্দেশখালি পৌঁছেছিলেন রেখা শর্মা। বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ গ্রামের মহিলাদের সঙ্গে কথা বলেন চার ঘন্টা। একের পর এক নির্যাতিতাদের অভিযোগ শোনেন তিনি। সন্দেশখালির অসহায় মহিলারা তাঁর কাছে কেঁদে দুঃখের কথা ব্যক্ত করেন বলে জানান তিনি।

এরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রেখা শর্মা জানান, মহিলারা আমাকে ধরে কেঁদে সব বলেছেন। আমি সারাদিন তাদের দুঃখের কথা শুনেছি। এতটাই খারাপ পরিস্থিতি যে ওরা আমাকে ছাড়ছেন না। মায়েরা আতঙ্কে রয়েছে, ভয়ে তাদের কিশোরী, যুবতী মেয়েদের অন্যত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন। তাঁর আরো সংযোজন, আমার মনে হয়, রাষ্ট্রপতি শাসন ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। কারণ পুলিশকেও মহিলারা ভয় পাচ্ছেন। তিনি জানান, “ওরা আমাকে ছেড়ে থানায় যেতেও ভয় পাচ্ছেন।”

সন্দেশখালির মহিলাদের সঙ্গে কথা বলার পর টোটোয় চেপে সন্দেশখালি থানায় যান জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন। তাঁর সঙ্গে ছিল সন্দেশখালির চার মহিলা। থানায় ঢুকে পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। রেখা শর্মা জানান, আগে মহিলারা থানায় অভিযোগ জানালেও তাদের হাতে অভিযোগের কপি দেওয়া হয়নি। শাসন ব্যবস্থার চুড়ান্ত বাজে অবস্থা সন্দেশখালিতে, বলে জানান রেখা শর্মা। একই সঙ্গে এই পরিস্থিতির জন্য মু্খ্যমন্ত্রীকে দায়ী করে তাঁর পদত্যাগ করা উচিত বলে দাবি করেন জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন।

গত কয়েকদিন ধরে সন্দেশখালিতে মহিলাদের উপর একাধিক নির্যাতনের অভিযোগে তোলপাড় হয়েছে রাজ্য রাজনীতি। অভিযোগ, তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান ও তার অনুগামীরা দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতন চলিয়ে চলেছে সন্দেশখালিতে। রাত বিরেতে তৃণমূলের পার্টি অফিসে ডেকে পাঠানো হতো মহিলাদের। গত কয়েকদিনে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে একের পর এক ভয়াবহ মহিলা নির্যাতনের ঘটনা উঠে এসেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *