শ্রীরূপা চক্রবর্তী, আমাদের ভারত, ২৪ জুন: এই মুহূর্তে রাজ্য রাজনীতির অন্যতম বড় আলোচনার বিষয় বঙ্গ বিজেপি সভাপতি কে হবেন? বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এখন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। ফলে এবার তাহলে বঙ্গ বিজেপির দায়িত্ব কার কাঁধে তুলে দেবে পদ্ম শিবির। এই নিয়ে বিস্তর আলাপ আলোচনা চলছে রাজনৈতিক মহলে। নানা খবর প্রকাশিত হচ্ছে সংবাদ মাধ্যমে। কিন্তু নির্ভরযোগ্য সূত্রের খবর, এখনই তেমন কিছুই হবে না।
দিলীপ ঘোষের মেয়াদ শেষ হবার মুহূর্তে বঙ্গ বিজেপির ব্যাটন সুকান্ত মজুমদারের হাতে তুলে দিয়েছিল পদ্ম শিবির। যদিও তা নিয়ে কম আলোচনা হয়নি। তবে সবটা সামলে রাজনীতির ময়দানে সুকান্ত মজুমদার ভালোই ব্যাট করা শুরু করেন। কিন্তু এরমধ্যে দ্বিতীয়বার সাংসদ হয়ে জয় পেতেই তৃতীয় মোদী সরকারের মন্ত্রিসভায় তিনি জায়গা করে নেন। দু-দুটো গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার এই মুহূর্তে। এদিকে বিজেপির স্ট্যান্ড পয়েন্ট এক ব্যক্তি একসাথে দুটি পদে থাকতে পারেন না। ফলে সুকান্ত মজুমদারের নাম মন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা হতেই পরবর্তী জল্পনা শুরু হয়ে যায় কে হবেন এবার বঙ্গ বিজেপির সেনাপতি?
উঠে আসতে শুরু করে একাধিক নাম। কোনো সংবাদ পত্রের প্রতিবেদনে বলা হয় প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে দায়িত্বে ফেরানো হবে, কেউবা বলেছেন প্রাক্তন মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী, আবার কেউ বলছেন লকেট চট্টোপাধ্যায়, কেউ বলছেন শুভেন্দু অধিকারীকে এই দায়িত্বে আনা হবে। কিন্তু বিশ্বস্ত সূত্রের খবর এই মুহূর্তে কোনো পরিবর্তনেই যেতে চাইছে না পদ্ম শিবির। আর তার পেছনে রয়েছে একাধিক কারণ।
নতুন সভাপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে আরএসএস– এর যথেষ্ট ভূমিকা থাকবে। তার অন্যতম কারণ দ্রুত এই রাজ্যের জনবিন্যাস বদলে যাচ্ছে বলে মনে করে সংঘ। ফলে সেই চেষ্টাকে ব্যর্থ করতে হিন্দুত্ববাদী কোনও নেতাকেই বঙ্গের পদ্ম শিবিরের দায়িত্বে রাখতে চাইছে তারা। কারণ এই জনবিন্যাস বদলের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সংঘের সঙ্গে যুক্ত থাকা কোনও নেতাই সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবে বলেও মনে করে আরএসএস।
অন্যদিকে আগামী বছর সংঘের প্রতিষ্ঠার ১০০ বছর পূর্তি। ১৯২৫ সালের বিজয়া দশমীর দিন সংঘের পথ চলা শুরু হয়েছিল। তাই চলতি বছরের বিজয়া দশমী থেকেই নানা কর্মসূচি শুরু হয়ে যাবে বলে খবর। এই পরিস্থিতিতে সংঘ চাইবে এমন কেউ বঙ্গ বিজেপির দায়িত্ব থাকুক যে সংঘের সঙ্গে যুক্ত ছিল। যাতে বিজেপি ও সংঘের মধ্যে সামঞ্জস্য রেখে সে চলতে পারবে। সেকথা মাথায় রেখে ইতিমধ্যেই সভাপতির মুখ নিয়ে আলোচনা চলছে। সে ক্ষেত্রে পুরুষ বা মহিলা যে কোনও নেতা বা নেত্রীকে বঙ্গ বিজেপির দায়িত্বে আনা হতে পারে।
আবার সর্বভারতীয় স্তরে এই মুহূর্তে নতুন সভাপতি নির্বাচিত হবেন। কারণ জেপি নাড্ডার মেয়াদ শেষ হয়েছে গত এপ্রিলে। তাছাড়া তাঁকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই তিনি আর সভাপতি থাকতে পারবেন না। নতুন সভাপতি বেছে নেওয়ার আগে সংগঠনের একেবারে নিচু তলা থেকে সম্মেলন অনুষ্ঠিত করা সহ সাংগঠনিক নির্বাচন শুরু হবে। তার আগে বঙ্গ বিজেপির সভাপতি পদে কোনও বদল হচ্ছে না বলে বিজেপি সূত্রের খবর। বিজেপির নতুন সর্বভারতীয় সভাপতি নিযুক্ত হবার পর বঙ্গ বিজেপির সেনাপতি নিযুক্তিকরণ ভাবা হবে বলে খবর। আর এই সমস্ত কিছু করতে করতে চলতি বছরের ডিসেম্বর মাস হয়ে যেতে পারে বলে অনুমান। ফলে ততদিন মন্ত্রীত্ব ও সভাপতিত্ব দুই গুরু দায়িত্বই সুকান্ত মজুমদারকে একসাথে পালন করতে হবে।