আশিস মণ্ডল, আমাদের ভারত, বীরভূম, ২২ জুন:
সাত সকালে রাস্তার ধারে জমির মধ্যে থেকে উদ্ধার হল মা ও ছেলের রক্তাক্ত মৃতদেহ। তাদের বাড়ি মুর্শিদাবাদের পাঁচগ্রাম থানার মোল্লাপাড়া বলে জানা গিয়েছে। মৃতদেহ দুটি কিভাবে সীমান্ত পেরিয়ে বীরভূম সীমানায় এলো তার তদন্ত করছে নলহাটি থানার পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সকালে মুর্শিদাবাদ সীমানায় নাকপুর চেকপোস্টের কাছে বীরভূমের নলহাটি থানার ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের কিছুটা দূরে জমির মধ্যে মা ও শিশু পুত্রের রক্তাক্ত মৃতদেহ দেখতে পান এলাকার মানুষ। খবর পেয়ে অজ্ঞাত পরিচয় মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ। বিকেলের দিকে মৃতদেহ দুটির পরিচয় জানতে পারে পুলিশ। মৃত মহিলার নাম রিনা খাতুন (২৬)। মৃত শিশুর নাম নাজিকুল ইসলাম (৬)। দু’জনের শরীরেই ধারাল অস্ত্র দিয়ে ক্ষতবিক্ষতর দাগ রয়েছে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে ওই মহিলার দু’বার বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু সংসার করতে না পারায় বিবাহ বিচ্ছেদ করে বাপের বাড়ি পাঁচগ্রামের মোল্লাপাড়ায় থাকত।
পাঁচগ্রাম পঞ্চায়েতের আলম শেখ বলেন, “প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে মেয়েটি আমাদের গ্রামের। তার বাপের বাড়ির লোকজন নলহাটি থানায় গিয়েছে। তারা সনাক্ত করার পরেই আসল তথ্য সামনে আসবে”।
মৃত মেয়ের বাবা ফাইজুদ্দিন শেখ বলেন, “মেয়ের দ্বিতীয় বিয়ের পর ওদের মধ্যে অশান্তি হত। তবে মেয়ে আমার বাড়িতেই থাকত। শুক্রবার বিকেলে ওষুধ কিনতে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। তারপর আর ফেরেনি। আমরা আশেপাশে খোঁজখবর করেছিলাম। কিন্তু পাইনি। শনিবার দুপুরে মোবাইলে মেয়ের মৃতদেহ দেখে চিনতে পারি। তবে কারা খুন করেছে বলতে পারব না”।
মহিলার মামা কাইমুদ্দিন শেখ বলেন, “নবগ্রাম থানার বুন্দাই ডাঙ্গা গ্রামে মহারাজ নামে এক যুবকের সঙ্গে ভাগ্নির দ্বিতীয় বিয়ে দিয়েছিলাম। এক বছর শ্বশুর ঘরে থাকার পর সেখানেও অশান্তির সৃষ্টি হয়। ফলে বছরখানেক ধরে আমাদের পাঁচগ্রামেই থাকত। তবে তাদের মধ্যে যাতায়াত ছিল। ফোনে কথা হত। কুরবানির পরের দিন ভাগ্নি এবং নাততিকে নিয়ে মহারাজ লালবাগ গিয়েছিল। তারপরের দিন কান্দি থানার গোকর্ণ গিয়েছিল। তারপর বাড়ি ফেরে। কিন্তু কারা খুন করল বলতে পারব না”।