আশিস মণ্ডল, আমাদের ভারত, বীরভূম, ১৪ ফেব্রুয়ারি: দেউচা-পাঁচামি কয়লাখনি এলাকায় এবার গাছ প্রতিস্থাপনের কাজ শুরু করল প্রশাসন। হায়দ্রাবাদের একটি সংস্থাকে দিয়ে সুচারুভাবে প্রতিস্থাপনের কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন জেলা শাসক বিধান রায়।

প্রসঙ্গত, ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে দেওচা-পাঁচামির চাঁদা মৌজায় শুরু হয়েছে খনন কাজ। শুরুতেই আদিবাসীদের বাধার মুখে পড়ে প্রশাসন। পরে রাত থেকে খনন কাজ শুরু করা হয়। প্রথম পর্যায়ে পুলিশি ঘেরাটোপে ৩২৬ একর জমিতে লালমাটি তুলে কালো পাথর স্তর পর্যন্ত পৌঁছনো গিয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে। কালো পাথর তোলার পরেই মিলবে কয়লার সন্ধান। অন্যদিকে, প্রশাসনের আশ্বাস মতো পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে গাছ প্রতিস্থাপনের কাজও শুরু হয়েছে।শুক্রবার থেকেই দেউচা-পাঁচামি এলাকায় শুরু হয়েছে গাছ প্রতিস্থাপনের কাজ। শিল্প গড়ার ক্ষেত্রে যে প্রকৃতির কথাও মাথায় রাখা হচ্ছে, সেই বার্তা প্রথম থেকেই দিতে চেয়েছে জেলা প্রশাসন।
জেলাশাসক বিধান রায় জানান, প্রথম ধাপে কয়লা খনির প্রকল্পের জন্য ৯৮০টি গাছের মধ্যে ১৮০টি গাছকে প্রতিস্থাপন করা হবে। হায়দ্রাবাদের বিশেষজ্ঞদের হাত ধরেই এই গাছ প্রতিস্থাপন করার কাজ শুরু হয়েছে। চাঁদা মৌজার অন্তর্গত মথুরা পাহাড়িতে শুরু হয়েছে গাছ প্রতিস্থাপন করার কাজ। গাছগুলি তুলে আধ কিলোমিটার দূরে সেগুলি প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে।

জেলা শাসক বিধান রায় জানান, ৩২৬ একর জমির এই এলাকায় রয়েছে মোট ৯৮০টি গাছ, যার মধ্যে মহুয়া গাছ রয়েছে ৮২০টি। বাকি ১৬০টি শাল এবং অর্জুন গাছ। গাছগুলিকে প্রকল্প এলাকার বাইরে চাঁদা মৌজার মধ্যেই স্থানান্তর করা হবে। এই গাছ স্থানান্তর করার বরাত দেওয়া হয়েছে হায়দ্রাবাদের একটি সংস্থাকে। অন্যদিকে গাছগুলির স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও পরিচর্যা করবেন আন্তর্জাতিক হর্টিকালচার সোসাইটির চেয়ারম্যান এস কে মিত্র। বিশেষজ্ঞ রামচন্দ্র আপারির নজরদারিতেই এই গাছ স্থানান্তর করার কাজ চলবে। তিনি বলেন, “আধ কিলোমিটার দূরে গাছগুলি প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে। সেখানে খুব ভালো মাটি পাওয়া গিয়েছে। সেখানে আগে গাছের গোঁড়া মেপে গর্ত করা হচ্ছে। এরপর গাছ তুলে সেখানে প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে। এরপর নিয়মিত জৈব সার এবং জল দিয়ে গাছগুলিকে সুস্থ স্বাভাবিক করে তোলা হবে”। গাছ প্রতিস্থাপনে খুশি এলাকার মানুষ।কারণ আদিবাসীদের একটা বড় অংশ এই গাছের পাতা, ডাল কুড়িয়ে বাড়ির জ্বালানির সংস্থান করেন।

