সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ২৮ জুলাই: সামান্য বৃষ্টি হলেই জল জমে পুকুরের চেহারা নেয় দুর্লভপুর মোড়। দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন স্হানীয় বাসিন্দা, নিত্যযাত্রী ও বানভাসি মোড়ের কিছু ব্যবসায়ী। নোংরা কাদা জলের উপর যাত্রীবাহী বাস দাঁড়াতে বাধ্য হয়। তা পেরিয়েই যাত্রীদের ওঠানামা করতে হয়। আর যে সব ব্যবসায়ীরা দোকান দিয়েছেন তাদের দোকানে খরিদ্দার আসতে চান না।
অন্যদিকে গৃহস্থের ভিতরের নিকাশি নালার জল বাইরে যাবে কী, ওই নোংরা জল ফিরে আসছে তাদের ঘরের ভিতরেই। পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির কর্তাদের বলেও কোনো লাভ হয়নি বলে এমনই অভিযোগ জানালেন ভুক্তভোগীরা।
বাঁকুড়া- রানিগঞ্জ ৬০ নং জাতীয় সড়ক ও দুর্লভপুর- বড়জোড়া শিল্প করিডোরের সংযোগস্থলে দুর্লভপুর মোড় একটি ব্যস্ততম জনবহুল এলাকা। মোড়ের পাশেই পূর্ব ভারতের সর্ববৃহৎ ডিভিসির মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প।
২টি সড়ক পথই ঝাঁ চকচকে ভাবে নির্মিত হলেও শিল্প করিডোরের একপাশে যে বিশাল নিকাশি নালা তৈরি হয়েছে পূর্ত দফতর তার ঢাল করেছে উল্টো দিকে। ফলে বর্ষার জল এবং গৃহস্থ বাড়ির ব্যবহার্য্য জল নিকাশের পরিবর্তে পিচ রাস্তার উপরই জমা হয়ে থাকছে। যে এলাকায় জল জমছে সেখানেই বাস স্টপেজ। সামনে রয়েছে জাগ্রত কালিমন্দির। রয়েছে চায়ের দোকান, মুদিখানা, স্টুডিও, ছোটো- বড় গাড়ির যন্ত্রপাতির দোকান এবং গৃহস্থ বাড়ি। জল যন্ত্রণার শিকার ব্যবসায়ী গোপাল চট্টরাজের অভিযোগ সব জায়গায় বলেছি। কেউ সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসেনি। এই জমা জল শুধু বৃষ্টির জল নয়। বাড়ির শৌচাগারের যে জল নালায় পড়ছে তা বের হচ্ছে না। জমে থাকা সেই জল বর্ষার জলে মিশে পুকুর হয়ে গেছে। নোংরা জল ঘেঁটে ক্রেতারা দোকানে আসতে চায় না। তবে এই জলে পা ডুবিয়েই মায়ের মন্দিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন ভক্তরা।
মুদিখানা ব্যবসায়ী নিত্যনন্দ ব্যানার্জি বলেন, ৬০ বছরের বেশি সময় ধরে এখানে আমার দোকান রয়েছে। নতুন করে রাস্তা নির্মাণের পর থেকে এই অবস্থা। তার দাবি, শিল্প করিডোর ও জাতীয় সড়কের মাঝে রোটারি না করে উঁচু করে ডিভাইডার নির্মিত হয়েছে এমন জায়গায় যে গাড়ি ঘুরতে পারে না। মাঝে মাঝেই ডিভাইডারে ধাক্কা মেরে দুর্ঘটনা ঘটে।
একই অবস্থা ডিভিসি কলোনি আবাসনের সামনের লাগাপাড়া বাজারের। শিল্প করিডোরের এই বাজারের ভিতর যে নিকাশি নালা তৈরি হয়েছে তার ঢালও কার্লভাটের উল্টো দিকে। এখানের বাসিন্দা সুজিত অগস্থি, ভবতারণ ঢাং, সুশীল মন্ডলের অভিযোগ, উল্টো ঢালের নালা যেখানে শেষ করেছে সেখানে কংক্রিট দিয়েই নালা বন্ধ। জল বের হয় না। ঘুরে বাড়িতে ঢুকছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সব পক্ষই জানে। কিন্তু সবাই উদাসীন।
এ নিয়ে দুর্লভপুর ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক বাচ্চু গোস্বামী বলেন, জানি না আর কোথায় জানালে কাজ হবে। রাস্তা অবরোধ করলে পুলিশ ধরে ঠ্যাঙাবে, মামলা দেবে। তাই প্রতিবাদ করতে ভুলে গেছেন নিরীহ বাসিন্দারা। কিন্তু বিরোধী সিপিএম বা বিজেপি কেন চুপ তারও জবাব মেলেনি। তবে শিল্পাঞ্চলের তৃণমূল নেতা তথা গঙ্গাজলঘাঁটি পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি নিমাই মাজি বলেন, এই বিড়ম্বনার শিকার তিনি নিজেও। বিষয়টি নিয়ে বিডিও এবং পূর্ত দফতরকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি বলেছেন বলে জানান।