gang beating, TMC, ক্লাব ঘরে হাত পা ধরে চ্যাংদোলা করে বেধড়ক মার! ফের গণপিটুনির ভিডিও ভাইরাল, অভিযোগের আঙুল আবারও তৃণমূলের দিকে

আমাদের ভারত, ৯ জুলাই: চারজন মিলে হাত পা ধরে রেখেছে। আর চ্যাংদোলা করে ঝুলিয়ে চলছে বেপরোয়া মার। বেশ কয়েকজন মিলে ধরে নানা দিক থেকে মোটা লাঠি দিয়ে অনবরত মেরে চলেছে। যখন তৃণমূলের একাধিক নেতার ঘনিষ্ঠদের দাদাগিরির ঘটনা নিয়ে রাজ্য তোলপাড় তখনই বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারে পোস্ট করা আর একটি গণপিটুনির ভিডিও প্রকাশ্যে চলে এলো। ভিডিওটি সামনে আসতেই বিতর্কের ঝড় উঠেছে। (ভাইরাল ভিডিও’র সত্যতা যাচাই করেনি আমাদের ভারত।) ঘটনায় ব্যারাকপুর পুলিশের তরফে পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে জানাগেছে। ভিডিওটি’র বিষয়ে স্বতঃপ্রনোদিত মামলার রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, ভিডিওটি পুরনো। যাদের দেখা যাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হবে। তাদের মধ্যে ইতিমধ্যেই দুজন অন্য ঘটনায় জেলে রয়েছে। এই ঘটনাটি ঘটেছে কামারহাটির আড়িয়াদহ তালতলা স্পোর্টিং ক্লাবে। বিজেপির দাবি, স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব এই ঘটনার পেছনে রয়েছে। তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এই কাজ করেছে বলে অভিযোগ পদ্ম শিবিরের একাধিক নেতার।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ভিডিওটি পোস্ট করে লিখেছেন, কামারহাটির তালতলা ক্লাবের ভিডিওটি দেখে আতঙ্কিত। সেখানে তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রের ঘনিষ্ঠ সহযোগী জয়ন্ত সিংকে ও তার অনুগামীদের একটি মেয়েকে নির্মমভাবে মারধর করতে দেখা যাচ্ছে। নারী অধিকারের দাবি করা সরকারের অধীনে হওয়া এই জঘন্য কাজটি মানবতার জন্য কলঙ্ক।

ভিডিওতে তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত কয়েকজনকে দেখা গিয়েছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয় মানুষ। অভিযোগ, তারা সকলেই জয়ন্ত সিংয়ের লোক। কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রের ঘনিষ্ঠ বলে এলাকায় জয়ন্তর যথেষ্ট পরিচিতি রয়েছে।

তৃণমূলের পাল্টা দাবি, ভিডিওটি তিন বছরের পুরনো। সেখানে যাদের দেখা গেছে তাদের মধ্যে দু’জন এখন জেলে।

ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় তৎপর হয়েছে জাতীয় মহিলা কমিশন। ঘটনার তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তারা। রাজ্য পুলিশের ডিজির কাছে এই ঘটনা সংক্রান্ত রিপোর্টও তলব করা হয়েছে।

কামারহাটি ক্লাবের এই ভিডিওটি সোমবার রাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির তরফে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। বিজেপি ওই ভিডিও পোস্ট করে লেখে, কামারহাটি তালতলা ক্লাবে মদন ঘনিষ্ঠ জয়ন্ত সিং কিভাবে নিরস্ত্র মহিলাকে মারছে দেখা যাচ্ছে। যে রাজ্য সরকার নারীদের সুরক্ষা নিয়ে গর্ব করে সেখানেই এই বর্বরতা মানবতার কলঙ্ক। এর দ্রুত তদন্ত চাই ও বিচার চাই।

এদিকে ভিডিও প্রসঙ্গে বিজেপির পাল্টায় পোস্ট করেছে তৃণমূলের দলের মুখপাত্র ঋজু দত্ত। তাঁর দাবি, এটি ২০২১ সালের মার্চ মাসের ভিডিও। অভিযুক্তরা জয়ন্ত সিং ও তার অনুগামী। ভিডিওতে যাদের দেখা যাচ্ছে তাদের মধ্যে দু’জন এখন জেলে। বিজেপি দাবি করেছে, এক মহিলাকে মারধর করতে দেখা যাচ্ছে। তৃণমূল এই প্রসঙ্গে দাবি করেছে যিনি মার খাচ্ছেন তিনি পুরুষও হতে পারেন। তা খতিয়ে দেখা দরকার। তৃণমূল নেতা আরো লিখেছেন, বাংলা বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। তৃণমূলকে টার্গেট করতে এখন সবরকম ভিডিও ব্যবহার করা হচ্ছে। এভাবে বদনাম করার চেষ্টা চলছে।

কিন্তু তৃণমূলের এই বক্তব্যের পাল্টায় বিজেপির অনেকেই প্রশ্ন করেছেন, যদি ২০২১ সালেও এই ঘটনা হয়ে থাকে তখনও কি অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছিল?

ভিডিওটি পুরনো বলে ধারণা অনেক এলাকাবাসীদেরও। তাদের বক্তব্য, এলাকায় জয়ন্ত সিং ও তার দলবলের দাপট রয়েছে। নানা ভাবে এলাকায় তারা ত্রাস সৃষ্টি করে। ভিডিওটিতে যাদের দেখা যাচ্ছে, এরা সকলেই জয়ন্তর ঘনিষ্ঠ বলে এলাকায় পরিচিত। কেউ কেউ বলেছেন একটি চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই অভিযুক্তকে ক্লাবের ভেতরে এভাবে মারধর করা হয়েছিল।

প্রসঙ্গত, এর আগে গত রবিবার আড়িয়াদহে মা এবং ছেলেকে রাস্তায় ফেলে মারধরের ঘটনা ঘটেছিল। সেখানে অভিযুক্ত ছিলেন জয়ন্ত ও তার অনুগামীরা। অভিযোগ ছিল, দুই যুবকের ব্যক্তিগত ঝামেলার মধ্যে জয়ন্তরা ঢুকে পড়েন। মহিলা এবং তার পুত্রকে হকি স্টিক, লাঠি, ইট, পাথর দিয়ে মারধর করা হয়। এই ঘটনার পর জয়ন্ত সহ একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ৭-৮ বছর আগে জয়ন্ত মদন মিত্রের হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিল বলে স্থানীয় সূত্রে খবর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *