আমাদের ভারত, ২৯ নভেম্বর: পশ্চিমবঙ্গে বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ হাতছাড়া হচ্ছে তৃণমূল সরকারের তরফে কোনো সদুত্তর না মেলায়। কেবল কর্মসংস্থান নয়, রাজ্য সরকার বড় অঙ্কের টাকা রোজগারের সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে না। হ্যাঁ রানাঘাটের সাংসদ রাজ্যে পেট্রোলিয়াম শিল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে সংসদে প্রশ্ন তোলায় এমনই বড় তথ্য উঠে এসেছে। তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, ১০০ বর্গ কিলোমিটার জমিতে খননের অনুমতি চেয়ে রাজ্য সরকারকে বহু চিঠি দিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু তার কোনো জবাব দেয়নি রাজ্য সরকার।
উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর ছাড়া একাধিক জায়গায় খনিজ তেলের সন্ধান মিলেছে, কিন্তু এখনো সেসব জায়গায় খননকার্য বা তেল উত্তোলন শুরু করা যায়নি। এর জন্য রাজ্য সরকারের প্রয়োজনীয় অনুমতি পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী হরদ্বীপ সিং পুরি।
পেট্রোলিয়াম বা খনিজ তেল বিবেচিত হয় দেশের সম্পত্তি হিসেবে। তবে কোনো রাজ্যের মাটির তলায় এই সম্পদ থাকলে কেন্দ্রকে সেখানে খননের জন্য রাজ্যের কাছে পেট্রোলিয়াম মায়েলিং লিজ বা পি এম এল সংগ্রহ করতে হয়। ২০২০ সালে অশোকনগর থেকে খনিজ তেল উত্তোলনের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে পি এম এল- এর আবেদন জানায় খনিজ তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাস কর্পোরেশন। অভিযোগ, চার বছর পেরিয়ে গেলেও পিএমএল দেয়নি রাজ্য সরকার।
সূত্রের খবর, ওই সংক্রান্ত অনুমতি চেয়ে কেন্দ্রের তরফে ১৯টি চিঠি পাঠানো হয়েছে রাজ্যের কাছে। তার মধ্যে ১৪টি গিয়েছে ওএনজিসি থেকে, তিনটি চিঠি রাজ্য সরকারেরকে সরাসরি কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক পাঠিয়েছে। ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ হাইড্রোকার্বন থেকে আরো দুটো চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনো রাজ্য সরকারের সাড়া পাওয়া যায়নি।
২০১৮ সালে উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরে খনিজ তেলের সন্ধান পাওয়া যায়। সেখানে মোট ৫.৮৮ বর্গকিলোমিটার এলাকায় তেল রয়েছে বলে জানিয়েছে ওএনজিসি। কেন্দ্রের দাবি, তারপরও আরো একাধিক জায়গায় সন্ধান পাওয়া গেছে। তালিকায় রয়েছে রানাঘাট, কাকপুলির মত এলাকা। রাজ্যের অন্তত ৯৯.০৬ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় খনিজ তেল রয়েছে বলে দাবি কেন্দ্রের। ওইসব এলাকায় খননের জন্য রাজ্যকে দফায় দফায় চিঠি দিয়েছে কেন্দ্র।
সংসদে শীতকালীন অধিবেশনে রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার রাজ্যে পেট্রোলিয়াম শিল্পের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানতে চেয়ে প্রশ্ন করেছিলেন। তার জবাবে রাজ্যকে দেওয়া চিঠিগুলির কথা জানিয়েছে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী। কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি, পশ্চিমবঙ্গে খনিজ তেলের জন্য ইতিমধ্যে ১০৪৫.৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। যদি খনন কার্যের মাধ্যমে রাজ্যের মাটির তলা থেকে তেল উত্তোলন শুরু করা যায় তবে সেই বাবদ প্রতিবছর পশ্চিমবঙ্গের আয় হতে পারে ৮ হাজার ১২৬ কোটি টাকা। এছাড়াও রাজ্যে প্রচুর কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হতে পারে।