পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৫ মার্চ: মেদিনীপুরের কংসাবতী নদীতে স্নান করতে গিয়ে তলিয়ে প্রাণ গেল এক কিশোরের। ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে আসে এলাকায়।
হোলি উপলক্ষে রঙিন উৎসবে মেতেছিল অন্যান্যদের সঙ্গে তারাও। রং মেখে আনন্দ করতে করতে ১২ বছরের এক কিশোর তার আরো দুই সঙ্গীকে নিয়ে নদীতে স্নান করতে গিয়েছিল। পরিবারের লোকের অজান্তেই তারা মেদিনীপুর শহরের প্রান্তে আমতলা ঘাটে কংসাবতী নদীতে স্নান করতে গিয়েছিল। সেখানেই ঘটে বিপত্তি। তলিয়ে যায় এক কিশোর। প্রায় দেড় ঘন্টা পর তার নিথর দেহ উদ্ধার হয় ডুবুরি দিয়ে। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় মেদিনীপুর শহরের আমতলা ঘাট এলাকায়। দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায় পুলিশ। ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার দুপুর দুটো নাগাদ মেদিনীপুর শহরের আমতলা ঘাট এলাকায়।
মেদিনীপুর শহরে ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কবিরাজ পাড়ার বাসিন্দা সোহান দাস(১২)। মেদিনীপুর শহরের বিদ্যাসাগর বিদ্যাপীঠের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। হোলির দিনে পাড়ার অন্য কিশোরদের সঙ্গে বেরিয়ে পড়েছিল রং খেলতে। বাড়ির লোকেরা সেভাবে বিষয়টা বুঝতে পারেনি। পাড়ার ছেলেদের সঙ্গে রং খেলতে খেলতে নদীতে স্নান করার পরামর্শ করে তারা। এরপরেই তিন বন্ধু মিলে শটান হাজির হয়ে যায় সেখান থেকে কিছুটা দূরে কংসাবতী নদীর ধারে আমতলা ঘাট এলাকায়। ওই এলাকার লোকজন তাদের নদীর পাড়ে দেখতে পেয়েই মতলব বুঝতে পেরেছিল। তাদের সেখান থেকে ফিরতে বললেও ওই কিশোররা জানায় তারা পরিবারের লোকজনের সঙ্গে এসেছে। ফলে আর বেশি গুরুত্ব দেয়নি স্থানীয়রা।
অন্যদিকে তিনজনেই নদীতে স্নান করতে নামতেই, সোহন হঠাৎ করে গভীর জলে চলে যায়। তাকে দেখতে পেলেও বাকি দু’জন উদ্ধার করার সাহস পায়নি। তাড়াতাড়ি সবাইকে ডাকাডাকি করলেও ততক্ষণে সোহনের আর হদিস মেলেনি।
খবর যায় পৌরসভা ও পুলিশের কাছে। ছুটে আসেন কোতোয়ালি থানার পুলিশ ও মেদিনীপুর পৌরসভার পৌর প্রধান সৌমেন খান সহ ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃ সাইফুল সহ সকলে। প্রাথমিকভাবে স্থানীয়রা কিছুটা খুঁজলেও কোনো সন্ধান পায়নি। অবশেষে মেদিনীপুর সদরের রামনগর এলাকার বাসিন্দা এক ব্যক্তি যিনি ডুবুরির কাজ করে থাকেন তাকে ডাকা হয়। তিনি দীর্ঘক্ষণ খোঁজার পরে প্রায় দেড় ঘণ্টা পর নিথর দেহ উদ্ধার হয়েছে কিশোরের। দ্রুত তার দেহ উদ্ধার করে কোতোয়ালি থানার পুলিশ নিয়ে যায় মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
এই ঘটনার পর, কাউন্সিলর মোঃ সাইফুল বলেন,
“কবিরাজ পাড়ার বাসিন্দা ওই কিশোর এভাবে নদীর পাড়ে চলে আসবে কেউই বুঝতে পারেনি। ঘটনাটি মর্মান্তিক।”
মেদিনীপুর পৌরসভার পৌর প্রধান সৌমেন খান জানিয়েছেন, “মর্মান্তিক ঘটনা। তবে এই ঘটনায় একটা স্থায়ী ডুবুরির অভাব খুব বোঝা যাচ্ছে। মহকুমা শাসককে আমি আবেদন করেছি অক্সিজেন সিলিন্ডারসহ একজন ডুবুরি যাতে সব সময় পাওয়া যায় তার ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলে এই ধরনের ঘটনা হলে অন্তত উদ্ধার প্রক্রিয়া দ্রুত সম্ভব হবে।