সায়ন ঘোষ, বসিরহাট, ২১ মার্চ: আমেরিকা থেকে ফিরে ‘তথ্য গোপনের অভিযোগ উঠল উত্তর ২৪ পরগণার বসিরহাটের এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। সিল করে দেওয়া হয় তাঁর নার্সিংহোম। দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ করার অভিযোগ উঠল বসিরহাটে ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। সদ্য আমেরিকা থেকে ফেরার পর কোনও রকম পরীক্ষা না করিয়েই হাসপাতালের কাজে যোগদেন ওই চিকিৎসক। নিজের নার্সিং হোমে দুটি অস্ত্রোপচারও করেন তিনি। গত তিন দিন ধরে নার্সিং হোম ও নিজের চেম্বারে প্রচুর রোগীও দেখেন বলে অভিযোগ।
তিনি যে আমেরিকা থেকে ফিরেছেন সে সম্পর্কে তথ্য গোপন করেছেন ওই দায়িত্বজ্ঞানহীন চিকিৎসক। স্থানীয়রা ওই দায়িত্বজ্ঞানহীন চিকিৎসকের কাছে জানতে চাইলে তিনি তাঁর উত্তরে বলেন, তিনি ব্যাঙ্গালোর থেকে ফিরেছেন। আমেরিকায় তিনি জাননি। এরপর স্থানীয়দের অভিযোগের পর বসিরহাট থানার আইসি নিজে চিকিৎসকের বাড়ি গিয়ে পাসপোর্ট দেখতে চাইলে ওই চিকিৎসক স্বীকার করেন তিনি আমেরিকা থেকেই ফিরেছেন।
দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ করার অভিযোগে তাঁর নার্সিংহোম সিল করেছে প্রশাসন। এর পর তাঁকে কোয়ারানটিনে পাঠানো হয়েছে বলে সূত্রের খবর। করোনা ভাইরাসের মোকাবিলার জন্য বিদেশফেরতদের দায়িত্বশীল হতে আর্জি জানিয়েছেন প্রধান মন্ত্রী থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিদেশ-ফেরত নাগরিকদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘দায়িত্বশীল হোন। যাঁরা ফিরেছেন, তাঁরা ১৪ দিন বাড়িতে থাকুন। কয়েক দিন বাড়িতে থাকলে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়। নিজে বাঁচুন, পরিবারকে বাঁচান। তাতে রাজ্য বাঁচবে। রাজ্য বাঁচলে দেশ বাঁচবে’। স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ, আমেরিকা, ব্রিটেন, চিন, মধ্য প্রাচ্যের মত দেশ থেকে এসে ১৪ দিন কোয়ারান্টাইনে থাকতে হবে, শ্বাসকষ্ট, সর্দি, কাশি, জ্বরভাব বা জ্বর- এই চারটি উপসর্গের কোনও একটি দেখা দিলেই হাসপাতালে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, সেই নির্দেশ বারবার উপেক্ষা করা হচ্ছে।
যদিও সতর্কতার তোয়াক্কা না করে যারা হোম কোয়ারানটিন ভাঙছে, তাদের আটকাতে আবার কড়া ব্যবস্থা নিতে চলেছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। হোম কোয়ারানটিন ভাঙলে ছয় মাসের পর্যন্ত জেল হতে পারে বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে। কারাবাসের পাশাপাশি হতে পারে ১০০০ টাকার জরিমানাও।