আমাদের ভারত, আলিপুরদুয়ার, ৪ ডিসেম্বর: সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী দুমাসের মধ্যে উত্তরবঙ্গে চা শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি হতে চলেছে। শুক্রবার আলিপুরদুয়ারের ১নং ব্লকে একটি জনসভায় চা-শ্রমিকদের এমনটাই জানালেন রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক। পাশাপাশি কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ও বাম সরকারের চা নীতির সমালোচনা করে বলেন, বিজেপি সরকার ২০১৬ সালে ডানকানসের ৭টি চা বাগান অধিগ্রহন করে।তবে তারা চা-বাগানগুলি খুলতে পারেনি। শ্রমিকদের বেতনের ব্যবস্থা করেনি। সবকটি চা-বাগান আমরা খুলেছি। বামফ্রন্ট সরকারের আমলে চা-শ্রমিকদের বেতন বাড়ত ১,২ টাকা করে। ২০১১ সালে চা-শ্রমিকদের বামফ্রন্ট সরকার মজুরি দিত ৬৭ টাকা। ঠিক তারপর মাত্র ১০ বছরে আমরা চা-শ্রমিকদের মজুরি ১৭৬ টাকায় নিয়ে গেছি। এখানেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বাকিদের পার্থক্য।আবার চা-শ্রমিকদের আবাসন খারাপ হয়ে গিয়েছিল। সেদিকেও লক্ষ্য রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। শুধু আলিপুরদুয়ার জেলায় ২০০ কোটি টাকার বেশি খরচ করে ৩৬০০-র বেশি বাড়ি চা সুন্দরী প্রকল্পে তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। ঘটনাটি দেশের চা শিল্পের মধ্যে নজির তৈরি করেছে।
উল্লেখ্য, চা শিল্পে এই মুহূর্তে স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে উত্তরবঙ্গে প্রায় ৫ লক্ষ্য চা-শ্রমিক রয়েছে। চা শিল্পে বেতন বৃদ্ধি মানেই উত্তরবঙ্গের অর্থনীতির উপর তার গভীর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। বছর কয়েক আগে চা শিল্পে শেষবার বেতন বৃদ্ধি হয়েছিল। তবে কোভিড পরিস্থিতিতে গত ১১মাস চা-শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি নিয়ে কোন বৈঠক হতে পারেনি। চা-বাগান তৃণমূল কংগ্রেস মজদুর ইউনিয়নের রাজ্য সভাপতি মোহন শর্মা বলেন, “আমরা ইতিমধ্যেই শ্রমমন্ত্রীকে মজুরি বৃদ্ধি নিয়ে সবকিছু বিস্তারিত জানিয়েছি।চা-বলয়ের প্রায় ৫ লক্ষ চা-শ্রমিক ও তাদের পরিবারের মানুষ আজ খুশি। কারন গত ১০ বছরে ১১০ টাকা মজুরি বেড়েছে চা-শ্রমিকদের, যা রেকর্ড।”
প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, ২০১৭ সালে উত্তরবঙ্গে শেষবার চা শিল্পে বেতন বৃদ্ধি হয়েছিল। তৃণমূল সরকারের আমলে প্রতিবার কমবেশি ১৫ থেকে ২০ টাকার কাছাকাছি বেতন বৃদ্ধি হয়েছে। কখনো তার থেকেও বেশি।বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানান, চা শিল্পে যথেষ্ট ভাল পরিস্থিতি রয়েছে। চায়ের উৎপাদন বাজার দুই ভাল।স্বাভাবিকভাবেই কাম্য মজুরি বৃদ্ধির যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে দ্রুত।

আলিপুরদুয়ারে এদিনের এক জনসভা থেকে কেন্দ্রে কড়া সমালোচনা করেন মন্ত্রী মলয় ঘটক। মন্ত্রী ছাড়াও জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামী, বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী, মোহন শর্মা সহ জেলার প্রায় সব নেতা উপস্থিত ছিলেন। বৃহস্পতিবার বিজেপি-র যুব মোর্চার র্যালির পর এদিনের জনসভায় ভিড় জেলা তৃণমূল নেতৃত্বকে কিছুটা হলেও বাড়তি অক্সিজেন দেবে বলে মনে করছে জেলার রাজনৈতিকমহল।

