আশিস মণ্ডল, আমাদের ভারত, রামপুরহাট, ১৪ এপ্রিল: পুলিশি নিষ্ক্রিয়তায় এক গৃহবধূর অস্বভাবিক মৃত্যুর অভিযোগ উঠল বীরভূমের পাইকর থানার বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে পাইকর থানার যোগাই গ্রামে। অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে তদন্তের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
ঘটনার সূত্রপাত ৯ এপ্রিল। ওই দিন যোগাই গ্রামের দেবী মালের জমিতে গরু নেমে ধান নষ্ট করে। দেবী ও তার নিকট আত্মীয় শুকদেব মাল প্রতিবাদ করতে গেলে ভীম মাল, সুদীপ মাল, কৌশিক মাল, অভিজিৎ মাল ও পুণ্য মালরা বাঁশ দিয়ে শুকদেবের মাথা ফাটিয়ে দেয়। ওই দিনই পাইকর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন শুকদেব। কিন্তু পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ।
শুকদেব মালের অভিযোগ, থানার এএসআই শিশির মালের নিকট আত্মীয় হচ্ছেন অভিযুক্তরা। ফলে শিশিরবাবু এবং থানার ওসি যোগসাজশ করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে তাদের মস্তানিতে মদত দিয়েছেন। এর ফলে অভিযুক্তরা বাড়তি সাহস পেয়ে শনিবার বিকেলে দেবীর বাড়িতে ঢুকে তাকে একা পেয়ে লোহার শাবল দিয়ে এলোপাথাড়ি মারধর করে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে পাইকর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় গ্রামে উত্তেজনা ছড়ায়। এরপরেই থানার দুই অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে মৃতদেহ নিতে অস্বীকার করেন পরিবারের লোকজন।
গ্রামবাসীদেরও দাবি, অভিযুক্তরা পুলিশের মদতে গ্রামে অত্যাচার চালিয়ে গিয়েছে। প্রতিবাদ করতে গেলে প্রাণ নাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে রবিবার দুপুরে গ্রামে যান রামপুরহাটের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক গোবিন্দ সিকদার, নলহাটির বিধায়ক রাজেন্দ্র প্রসাদ সিং। তাঁরা পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে তদন্তের আশ্বাস দেন। সেই সঙ্গে কৌশিক মাল ও অভিজিৎ মালকে গ্রেফতার করার পর এদিন সন্ধ্যার দিকে মৃতদেহ নেয় পরিবার।
মৃত দেবী মালের স্বামী সুভাষ মাল বলেন, “পুলিশ প্রথমেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করলে স্ত্রীকে খুন হতে হত না। আমি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে দুই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। এনিয়ে আমি জেলা পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি”।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ আধিকারিক জানান, কেন পুলিশ অভিযুক্তদের ধরতে পারল না তার বিভাগীয় তদন্ত হবে।