সাথী দাস, পুরুলিয়া, ২ ফেব্রুয়ারি: দীর্ঘ চার বছর ধরে বার বার পুরুলিয়া পুরসভায় আবাস যোজনার বাড়ির জন্য আবেদন জানিয়ে এলেও সমস্যার সমাধান হয়নি। শেষমেষ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বার্তা পৌঁছতেই পুরুলিয়া শহরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের পোকা বাঁধ পাড়ার বাসিন্দা তপশিলি জাতিভুক্ত বৃদ্ধা আরতি বাউরির সরকারি আবাস পাওয়ার আশ্বাস মিলল। পায়ের চপ্পল খুইয়ে গেলেও কেউ ওই দুঃস্থ পরিবারকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়নি। নিরুপায় ওই বৃদ্ধা শেষমেষ চিঠি দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সেই চিঠির আবেদনের ভিত্তিতে পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনের কাছে বৃদ্ধার আবেদনের বিষয়টি দেখার নির্দেশিকা আসে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে। আর এই চিঠি পাওয়ার পরই নড়েচড়ে বসল পুরুলিয়া পৌরসভা। তড়িঘড়ি বুধবার সকালেই বৃদ্ধার বাড়িতে পৌর প্রশাসক নবেন্দু মাহালি হাজির হয়ে যান। সঙ্গে ছিলেন পৌরসভার আধিকারিক ও আবাস যোজনার দায়িত্বে থাকা লোকজন।
অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে ছেলে-বৌমা এবং কোলের নাতি-নাতনিদের নিয়ে ত্রিপলের ঘেরা দেওয়া ভাঙ্গা কাঁচা বাড়িতে বসবাস করছেন। বর্ষা হোক, বা চড়া রোদ সমস্যায় পড়তে হয় সকলকেই। ভোট আসে, ভোট যায়, কিন্তু এদের মতো দুঃস্থ পরিবারের সমস্যার সমাধান হয়নি কোনওদিন। তাই নিরুপায় হয়ে ওই বৃদ্ধা আরতি বাউরি ২০২১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর মেইল মারফৎ শেষমেশ চিঠি দিলেন মুখ্যমন্ত্রীকে। এই চিঠির ভিত্তিতে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে বিষয়টি দেখার নির্দেশিকা আসতেই শুরু হয় পৌর প্রশাসক মন্ডলীর দৌড়ঝাঁপ।
অবশেষে আজ ওই বৃদ্ধার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে শীঘ্রই আরতি বাউরি সহ আশপাশের দুঃস্থ পরিবারকে আবাস যোজনার বাড়ি দেওয়ার আশ্বাস দেন পৌর প্রশাসক নবেন্দু মাহালি। তিনি জানান, “গত কাল জেলাশাসকের কাছে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে এই বিষয়টি দেখার এবং দ্রুত কার্যকর করার জন্য নির্দেশ আসে। তা মহকুমা শাসকের মাধ্যমে আমার কাছে আসতেই তৎপরতার সঙ্গে খোঁজ নিই। ওই মহিলার আবাস যোজনার বাড়ি অনুমোদন হয়ে গিয়েছে। এখন চতুর্থ পর্যায়ের কাজ চলছে। পঞ্চম পর্যায়ে তাঁর নাম রয়েছে। আমরা দ্রুততার সঙ্গে কাজ করার চেষ্টা করছি।”
পুরসভার গড়িমসির কারণে বার বার এইভাবে হয়রানি হতে হচ্ছে অসহায়দের। এই অভিযোগে শাসক দলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিরোধী দলগুলো।