সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা, ২ জানুয়ারি: ২০১৮ থেকে ২০১৯ এ কলকাতায় পথদুর্ঘটনায় মৃত্যুহার কমেছে। বৃহস্পতিবার লালবাজারে বিশেষ সাংবাদিক বৈঠকে এমনটাই দাবি করলেন যুগ্ম কমিশনার ট্রাফিক সন্তোষ পান্ডে এবং ডিসি ট্রাফিক রুপেশ কুমার।
এদিন জানানো হয়, ২০১৬-য় শহরে পথদুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন ৪০৭ জন। ২০১৭-য় সংখ্যাটা দাঁড়ায় ৩২৯-এ এবং ২০১৮-য় আরও কমে গিয়ে হয় ২৯৪।২০১৯-এ এই সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে দাঁড়িয়েছে ২৬৭-তে, যা কলকাতা পুলিশের ইতিহাসে সর্বনিম্ন।
যাতে মৃত্যু হয়নি, এমন পথদুর্ঘটনার সংখ্যাও কমেছে অনেক। ২০১৬-য় সংখ্যাটা ছিল ৩১৮২। সেটা ২০১৭-য় কমে হয়েছিল ২৫৫৯। আর ২০১৮-য় আরও কমে ২১৮২। গত বছরে আরও অনেকটা কমে দাঁড়িয়েছে ২০১২-য়।
২০১৬-য় ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ প্রকল্পের সূচনার পর থেকে প্রতি বছরেই পথদুর্ঘটনার সংখ্যা নিম্নগামী হয়েছে শহরে।
২০১৮-য় ৫০ জন হেলমেটহীন বাইকচালক পথদুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন বা আহত হয়েছিলেন। ২০১৯-এ সেই সংখ্যাটা কমে দাঁড়িয়েছে ২০-তে।
শহরে পথদুর্ঘটনা কমাতে গত বছরের শুরুতেই কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের তরফে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করা হয়েছিল। দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকাগুলিকে চিহ্নিত করে সেখানে ট্রাফিক আইন ভঙ্গকারীদের উপর কড়া নজরদারি, অতিরিক্ত গতির জন্য সম্ভাব্য দুর্ঘটনা কমাতে সিসিটিভি এবং স্পিড ক্যামেরা দিয়ে কিছু নির্দিষ্ট রাস্তায় ২৪x৭ প্রযুক্তি- প্রহরা, সিগন্যাল-ব্যবস্থার যথাসাধ্য আধুনিকীকরণ, দুর্ঘটনায় জড়িয়ে পড়া বাস-অটো-ট্যাক্সির চালকদের বিশেষ প্রশিক্ষণ আমাদের ট্রাফিক ট্রেনিং স্কুলে, এবং অবশ্যই পথসচেতনতা নিয়ে তিনশো পঁয়ষট্টি দিনের বিরামহীন প্রচার। সব মিলিয়ে পথদুর্ঘটনা রুখতে কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের নিরলস প্রয়াসের ভালোই ফল মিলেছে।
তবে এদিন যুগ্ম কমিশনার ট্রাফিক সন্তোষ পান্ডে জানান, বেসরকারি বাসের দুর্ঘটনার সংখ্যা শুধুমাত্র বেড়েছে। এই বিষয়ে এবার বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে কলকাতার ১২ টি ট্রাফিক গার্ডে ২২ টি ব্ল্যাক স্পট অর্থাৎ দুর্ঘটনা প্রবণ এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে সেগুলো নিরাপদ করার চেষ্টা হচ্ছে। তবে কলকাতা সে আগের তুলনায় দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে অনেক নিরাপদ, তা বলে দিচ্ছে পরিসংখ্যানই, দাবি লালবাজারের আধিকারিকদের।