সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা, ২ জানুয়ারি : অপারেশন থিয়েটারে যাওয়ার আগে বাড়ির লোকজনদের সঙ্গে হাসি-গল্প করেছেন। অপারেশন সফল হয়েছিল। চিকিৎসকের কথা অনুযায়ী, বছর শেষ হওয়ার আগেই হাসপাতাল থেকে তাঁর বাড়ি ফেরার কথা ছিল। কিন্তু নতুন বছরের প্রথম দিনেই পাল্টে গেল সব হিসেব।
২৪ ডিসেম্বর জরায়ুর টিউমার অপারেশন করার পর অতিরিক্ত অ্যানাস্থেশিয়া প্রয়োগে কোমায় চলে যান বর্ধমানের রানিগঞ্জের বাসিন্দা সোমিয়া মজুমদার। ভেন্টিলেশন থেকে তার মৃতদেহ নিয়ে ইংরেজি নববর্ষের প্রথম দিনে তাঁর মৃতদেহ নিয়ে বাড়িতে ফিরলেন আত্মীয়-স্বজনরা। পরিবারের সদস্য কে হারিয়ে এখন আইনি পদক্ষেপের ভাবনা ভাবছেন পরিবারের লোকজন।
জানা গিয়েছে, ঢাকুরিয়ার বেসরকারি হাসপাতালে
রানিগঞ্জের বাসিন্দা সোমিয়া ওই হাসপাতালে ২৩ ডিসেম্বর ভর্তি হয়েছিলেন। পরদিন তাঁর অপারেশন হয়। রোগীর মামা সুকুমার রায় জানান, “অপারেশনের পরে বেলা দুটো নাগাদ ডাক্তার বলে রোগী সুস্থ আছে। একদিন আইসিইউতে রাখা হবে৷ তারপর জেনারেল বেডে দেওয়া হবে। এর ঘণ্টা দেড়েক মতো পরে অ্যানাস্থেসিস্ট বলেন, একটা সমস্যা দেখা দিয়েছে। এই সমস্যার কারণে আমার ভাগ্নির শরীরে অক্সিজেন কমে গেছে। ওর ব্রেনে ৫-৬ মিনিট অক্সিজেন যায়নি। এর ফলে ওর হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। রিকভার করা হয়েছে তবে ব্রেন কাজ করছে না। ওকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে।
বুধবার বিকাল সাড়ে চারটে নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয় বলে হাসপাতালের তরফে পরিজনদের জানানো হয়। সুকুমার রায় বলেন, “৮ দিন পরে হাসপাতাল থেকে জানানো হল, আমার ভাগ্নি মারা গেছে। আমরা কোনও ভাবেই এটা মেনে নিতে পারছি না। এখানে আমরা যতখানি বুঝেছি, অপারেশন থিয়েটারের মধ্যে অবহেলা হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “ইতিমধ্যেই ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্লিনিকাল এস্টাব্লিশমেন্ট রেগুলেটরি কমিশনে তাঁরা বিষয়টি জানিয়েছি আমরা। কমিশন থেকে ডিটেলস রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। সেই রিপোর্ট দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।”