দুর্গাপুজোর মন্ডপে হামলা চালানো দুষ্কৃতিরা ২ বছরেও সাজা পায়নি, উৎসবেও আতঙ্কে বাংলাদেশের হিন্দুরা

আমাদের ভারত, ১৪ অক্টোবর: দু’বছর আগে ২০২১ সালে দুর্গাপুজোয় বাংলাদেশের কুমিল্লায় একাধিক দুর্গা পুজোর মণ্ডপে হামলা চালানোর ঘটনা ঘটেছিল। সেই ঘটনার অভিযুক্তরা সবাই প্রায় এখন জামিনে মুক্ত। আর এর ফলে দুর্গাপুজোর মুখে নতুন করে হামলার আশঙ্কায় ভুগছেন কুমিল্লা শহর সহ সেই জেলার হিন্দু বাসিন্দারা।

বাংলাদেশের একটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে হিন্দু নাগরিকদের আশঙ্কা আতঙ্কের কথা উঠে এসেছে। কুমিল্লা শহরের দুর্গা পুজো উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক অচিন্ত্য দাস (টিটু) বলেছেন, দোষীদের সঠিক সময়ে বিচার হলে এই ধরনের ঘটনা অনেকটা কমে যেত।

২০২১ সালে দুর্গা পুজো চলার সময় বাংলাদেশের ব্যাপক হিন্দু বিরোধী হিংসা ছড়ায়। ইসলামী চরমপন্থীরা একের পর এক মণ্ডপে ও মন্দিরে হামলা করে। হামলায় মৃত্যু হয়েছিল কমপক্ষে ৯ জন হিন্দুর। ২০২১ সালের ১৩ অক্টোবর অষ্টমীর দিন কুমিল্লা শহরের একটি মন্ডপে হিংসার সূত্রপাত। হনুমান মূর্তির হাতে কোরান রাখা দেখে হিংসা ছড়ায়। গোটা বাংলাদেশে এরপর দুর্গা পুজোর মন্ডপে একের পর এক হামলা হতে থাকে। হামলা ঠেকাতে গিয়ে আহত হন অনেকে। তার মধ্যে অন্তত ৯ জনের মৃত্যু হয়। সেই সময় পুলিশ প্রায় ১২টি মামলা দায়ের করেছিল এই ঘটনায়।

হনুমানের মূর্তির হাতে কোরান রাখার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় ইকবাল হোসেন নামে এক যুবককে। ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিলেন আরো চারজনকে। কিন্তু দু’বছর পরে ১২টি মামলার কোনোটির বিচার শেষ হয়নি। মার্চে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করে পুলিশ। তারমধ্যেই জামিন পেয়ে যান ইকবাল ছাড়াও বাকি চারজন। পুলিশ যদিও দাবি করেছে বারোটি মামলার প্রত্যেকটির চার্জশিট পেশ করা হয়েছে অতএব তদন্ত শেষ, কিন্তু বিচার প্রক্রিয়া চলছে।

অভিযুক্তরা জামিনে থাকায় পুজোর মুখে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে বাংলাদেশের হিন্দুদের মধ্যে। অনেকেরই ধারণা বিচার প্রক্রিয়া শেষ না হওয়ায় অপরাধীরা নতুন করে অপরাধ করতে উৎসাহিত হতে পারে। সঠিক সময় বিচার হলে সে দেশে এ ধরনের ঘটনা অনেকটাই কমে যেত। প্রত্যেকটি মামলার দ্রুত বিচার ও অপরাধীদের সাজার দাবি জানাচ্ছেন বাংলাদেশের হিন্দুরা। তবে আশঙ্কা, আতঙ্ক থাকলেও শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপুজো কাটবে আশা করেই দেবীর আগমন প্রস্তুতি তুঙ্গে এখন সেখানে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *