Suvendu, BJP, “রাজ্যের অভিপ্রয়াণ এক বাস্তব সত্য”, তোপ শুভেন্দুর

আমাদের ভারত, ২৭ মে: “আজ শিক্ষকতার চাকরির খোঁজে শিক্ষিত বাঙালি চাকরি প্রার্থীরা ঝড় জল উপেক্ষা করে বিহার রওনা হচ্ছে চাকরির পরীক্ষায় বসবে বলে। এটাই হলো রিভার্স মাইগ্রেশন অথবা উল্টো অভিপ্রয়াণ!”

একটি দৈনিকে প্রকাশিত সংশ্লিষ্ট খবরের কাটিং যুক্ত করে সোমবার এক্স হ্যান্ডেলে এই মন্তব্য করলেন পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

তিনি লিখেছেন! “অভিপ্রয়াণ, এক বাস্তব সত্য। ইতিহাসের পাতা ওল্টালে দেখা যাবে যে মানব সভ্যতার বর্তমান রূপরেখার ওপর যদি সব থেকে বেশি কোনো বিষয়ের প্রভাব থেকে থাকে তা হলো মাইগ্রেশনের। যুগ যুগান্তর ধরে ব্যবসা বাণিজ্য করতে অথবা কর্মসংস্থানের খোঁজে মানুষ বিভিন্ন জায়গায় পাড়ি দিয়েছে। পরে সেই সব জায়গায় বসবাস করতে শুরু করে।

পশ্চিমবঙ্গের দিকে তাকালে, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের রাজধানী কলকাতা এক বড় বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন কল কারখানা, বন্দর, দফতর স্থাপিত হয়। নানাবিধ কাজের জন্য নিত্য-নৈমিত্তিক লোকের প্রয়োজন হয়। দূর দুরান্ত থেকে বিভিন্ন জায়গার লোকজন কলকাতায় কাজের সন্ধানে আসতে থাকেন।

ভারতবর্ষের নানা প্রান্ত থেকে লোকজন কলকাতা আসলেও দুটি জায়গার বাসিন্দারা কলকাতায় আস্তানা গড়ে তোলেন। এক রাজস্থানের মাড়োয়ার ও দ্বিতীয় বিহার প্রদেশ (অধুনা ঝাড়খণ্ড সহ) এর বড় সংখ্যার লোকজন কলকাতা আসতে লাগলেন ব্যবসা ও চাকরির খোঁজে।

এই বাস্তব আগের শতকের আশির দশক অব্দি সারা দেশের মধ্যে সুপরিচিত ছিল। তার পরে পশ্চিমবঙ্গের একের পর এক কারখানায় তালা পড়তে লাগলো। এই প্রান্তের মানুষ দিল্লি, মুম্বই ইত্যাদি জায়গায়ও যাওয়া শুরু করলেন কলকাতার পাশাপাশি।

বামফ্রন্ট সরকারের আমলে ধুঁকতে থাকা শিল্পের পরিবেশ ও নিম্নমুখী কর্মসংস্থানের সুযোগ শিক্ষিত বাঙালি চাকরি প্রার্থীদের বাধ্য করে কাজের খোঁজে দিল্লি, বাঙ্গালোর, পুণে, হায়দরাবাদ, মুম্বই, চেন্নাই এর মত জায়গায় পাড়ি দেওয়ার।

তৃণমূল সরকারের আমলে কর্মসংস্থানের অবস্থা এমন জায়গায় পৌঁছে যায় যে করোনা লকডাউনের সময়ে জানা যায় যে, ৫০ লক্ষ বাঙালি ভিন রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবেই কাজ করেন।

শেষ সম্বল ছিল সরকারি চাকরি, বিশেষত শিক্ষকতার সুযোগ। এই ক্ষেত্রে তৃণমূল সরকার এমন সীমাহীন দুর্নীতি করে যে আজ প্রতিটি নিয়োগ আদালতের আতস কাঁচের নিচে পড়েছে এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে অযোগ্যদের চাকরি বিক্রি করেছেন, তাদের বাঁচাতে গিয়ে যোগ্যদেরও বলি দিচ্ছেন।

যে পশ্চিমবঙ্গ এক সময়ে বিহারীদের কর্মসংস্থান যোগাতো সেই বিহারে বাঙালি সন্তানরা কাজের খোঁজে যাচ্ছে। এটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কৃতিত্ব’।

আর কী কী যে দেখা বাকি আছে বাঙালিদের, কে জানে?”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *