আমাদের ভারত, ৩ জুলাই: দীর্ঘ কয়েক বছর নির্বাচন হয়নি রাজ্যের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে কোনো নির্বাচিত ছাত্র ইউনিয়ন নেই। কিন্তু বহাল তবিয়তেই ইউনিয়ন চলছে। ইউনিয়ন রুমও খোলা থাকছে প্রতিদিন। এ বিষয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন আইনজীবী সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এবার সেই মামলায় গোটা রাজ্যে সব কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিয়ন রুম বন্ধ রাখার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। যতদিন পর্যন্ত ছাত্র সংসদ নির্বাচন না হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত রাজ্যের সব কলেজের ইউনিয়ন রুম বন্ধ থাকবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উচ্চ শিক্ষা দফতরকে এই বিষয়ে নোটিশ জারি করতে বলেছে আদালত।
গত কয়েক বছরে রাজ্যের প্রায় কোনো কলেজেই ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়নি। সেই ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বছর কয়েক আগে একটি মামলা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। আজ বৃহস্পতিবার সেই মামলায় বিচারপতিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন আইনজীবী সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি উল্লেখ করেন, কোনো নির্বাচন না হওয়া সত্বেও ইউনিয়ন চলছে কলেজগুলোতে, যা বেআইনি।
এরপরই বিচারপতি সৌমেন সেন স্মিতা দে-র ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত আজ থেকে গোটা রাজ্যের সব কলেজের ছাত্র ইউনিয়নের রুম বন্ধ থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টরের অনুমতি ছাড়া ছাত্র ইউনিয়নের রুম খোলা যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতিরা।
ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে রাজ্য? হলফনামাতে জানাতে হবে রাজ্যকে। আগামী ১৭ জুলাইয়ের মধ্যে রাজ্যকে জানাতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কোর্টের তরফে। নির্বাচন না হলেও কলেজে অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি থাকছে কিনা সে প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতিরা। মামলাকারী আইনজীবী সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, কোনো কলেজে এমন কিছু দেখেননি।
আগামী ১৭ জুলাই মামলার শুনানি। তার আগে হলফনামা দেবে রাজ্য। এই মামলায় কার্যত আইনের জয় বলে মনে করেছেন সায়ন বন্দোপাধ্যায়। আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন এসএফআইয়ের সর্বভারতীয় সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, দিনের পর দিন এই ইউনিয়ন রুমে নানা বেআইনি কাজকর্ম চলছে।বহিরাগতদের যাতে বের করে দেওয়া হয় তেমনই ব্যবস্থা করুক আদালত।
অন্যদিকে বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পন্ডা বলেন, ইউনিয়ন রুমে কী নেই, অস্ত্র টাকা-পয়সা সব আছে। অবিলম্বে এগুলি সব বন্ধ করা উচিত।
তবে এই রায় প্রসঙ্গে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি ত্রিণাঙ্কুর ভট্টাচার্য বলেছেন, আদালতের এই রায় কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের মধ্যে কোনো প্রভাব পড়বে না, কারণ ছাত্র-ছাত্রীরা আমাদের সঙ্গে আছে। ইউনিয়ন রুম খোলা থাকলো কিনা, তাতে কিছু যায় আসে না।
রাজ্যের সব কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিয়ন রুম ছাত্র সংসদ নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত বন্ধ করতে হবে, উচ্চশিক্ষা দপ্তরকে বিজ্ঞপ্তি জারি নির্দেশ হাইকোর্টের।