ফেব্রুয়ারির শুরুতেই রাজ্যে কোভ্যাক্সিনের প্রয়োগ শুরু করবে স্বাস্থ্য দফতর

রাজেন রায়, কলকাতা, ৩০ জানুয়ারি: অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজেনেকার কোভিশিল্ড-এর প্রয়োগ আগেই শুরু হয়েছে রাজ্যে। কিন্তু দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি কোভ্যাকসিন প্রয়োগ নিয়ে বিভিন্ন নিয়মের সমস্যা থাকায় তা চালু করা নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত ছিল স্বাস্থ্য দফতর। বিশেষত এই ভ্যাকসিন প্রয়োগের আগে রোগীর সম্মতিপত্র এবং তারপর রোগীর নিয়মিত শারীরিক অবস্থার নথিভুক্তিকরণ নিয়ে কিছু সমস্যা ছিল। তবে সেই সমস্ত সমস্যা কাটিয়ে এবার ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই পশ্চিমবঙ্গেও করোনার প্রতিষেধক কোভ্যাক্সিন-এর প্রয়োগ শুরু হচ্ছে বলে জানাল স্বাস্থ্য দফতর। জানা গিয়েছে, কলকাতায় এসএসকেএম, আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল ও স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন থেকে কোভ্যাক্সিন প্রয়োগ করা হবে।

প্রসঙ্গত, দেশজুড়ে টিকাকরণ শুরু হওয়ার ১৪ দিন পার হলেও এখনো পর্যন্ত করোনা যোদ্ধা এবং প্রবীনদের প্রথম পর্বে টিকা দেওয়া হচ্ছে। এরপরে সারা দেশজুড়ে সমস্ত নাগরিককে ধাপে ধাপে ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে। কিন্তু তার জন্য যে পরিমাণ ভ্যাকসিন প্রয়োজন, তা শুধুমাত্র একটি সংস্থা থেকে দেওয়া সম্ভব হবে না বলে দাবি স্বাস্থ্যমন্ত্রকের। ইতিমধ্যেই পুনের সিরাম ইনস্টিটিউটে বিপুল পরিমাণ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজেনেকার কোভিশিল্ড তৈরির নির্দেশ দেওয়া হলেও তার পাশাপাশি এবার কোভ্যাকসিনের ওপরেও ভরসা রাখতে চাইছে স্বাস্থ্য দপ্তর। কবে কোভিশিল্ড প্রয়োগ হলেও হায়দরাবাদের ভারত বায়োটেক ও আইসিএমআর-এর তৈরি কোভ্যাক্সিন নিয়ে কিছু প্রশ্নচিহ্ন থেকে গিয়েছিল।

তৃতীয় পর্বের ট্রায়াল শেষের আগেই জরুরি ভিত্তিতে কোভ্যাক্সিন’কে ছাড়পত্র দেয় কেন্দ্র। যা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে বিভিন্ন মহলে। এরই মধ্যে দিল্লিতে রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালের রেসিডেন্ট চিকিৎসকেরা কেভ্যাক্সিনে অনাস্থা প্রকাশ করে তা নিতে অস্বীকার করেন। যা নিয়ে ঘোরতর অস্বস্তিতে পড়ে যায় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। কোভ্যাক্সিন নিয়ে এখনও বিশেষজ্ঞদের একাংশের মধ্যে প্রশ্ন এখনও রয়েই গিয়েছে। ইতিমধ্যেই বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলের একাধিক নেতাও কোভ্যাক্সিন-কে তড়িঘড়ি ছাড়পত্র দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এই আবহেই গত ২২ জানুয়ারি ১ লক্ষ ৬৮ হাজার কোভ্যাক্সিনের ডোজ রাজ্যে এসে গিয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ছাড়া কোভ্যাক্সিন প্রয়োগ নিয়ে আগে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি স্বাস্থ্য দফতর। এরই মধ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রক কোভ্যাক্সিন প্রয়োগ নিয়ে নয়া নির্দেশিকা জারি করে। আর সেই নির্দেশিকা অগ্রাহ্য করতে চাইছে না রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর। প্রত্যেক টিকাগ্রহীতাকে সম্মতিপত্রে সই করতে হবে বলে জানায় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। সেই মতো তৎপরতা নিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। এমনকি নির্দিষ্ট সময় অন্তর প্রাপকের শারীরিক অবস্থা সম্বন্ধেও টিকা গ্রহীতার শারীরিক অবস্থা সম্বন্ধেও খোঁজ নেওয়া নিয়ে পরিকল্পনা করে নেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, সব কিছু ঠিকঠাক এগোলে ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই রাজ্যে কোভ্যাক্সিনের প্রয়োগ শুরু হয়ে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *