পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, ঝাড়গ্রাম, ৬ মার্চ: বৃহস্পতিবার দুপুরে সংকল্প সৃষ্টি শিক্ষানকেতন পরিদর্শন করলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। ঝাড়গ্রাম ব্লকের পাটাশিমূল গ্রাম পঞ্চায়েতের গোবিন্দপুর গ্রামে সংকল্প সৃষ্টি শিক্ষানিকেতন পরিদর্শনের পাশাপাশি একটি গোশালার উদ্বোধন করেন রাজ্যপাল। মঞ্চে সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে বাংলায় বক্তব্য রাখেন। এলাকার লোধা শবর, আদিবাসী, মাহাতো সম্প্রদায়ের ছেলে মেয়েদের দীর্ঘ ছয় বছর ধরে বিনামূল্যে কোচিং দেওয়ার পাশাপাশি অঙ্কন, নৃত্য, শারীরিক গঠন সহ একাধিক বিষয়ে পারদর্শী করে তোলারও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় সংকল্প সৃষ্টি শিক্ষানিকেতনে। শিক্ষানিকেতনের নতুন ভবনের ভিত্তি পুজোয় অংশগ্রহণ করেন রাজ্যপাল। পরিদর্শনে এসে অত্যন্ত খুশি বলে জানিয়েছেন তিনি।
শালবনির বাসিন্দা বিজলী মুর্মু মাথায় ৩টি কলসি ও ৯টি ঘটি নিয়ে নৃত্য পরিবেশন করেন। নৃত্য দেখার পর বিজলীকে মঞ্চে ডেকে রাজভবনের সাংস্কৃতি দলের সদস্য করে নেন রাজ্যপাল। বিদ্যালয়ের মধ্যে নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর পুজোয় অংশগ্রহণ করেন। এদিন তিনি কোনো রকম রাজনৈতিক মন্তব্য করেননি। তিনি কেবলমাত্র এলাকার মানুষজনের বিষয় প্রসঙ্গেই কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের সঙ্গে সময় কাটাতে চাই, কোনো কর্মকর্তা হিসেবে নয়, একজন বন্ধু হিসেবে। আমি আপনাদের সঙ্গে হাসতে চাই, একসঙ্গে খেলতে চাই। আপনাদের আনন্দ আমি ভাগ করে নিতে চাই। দয়া করে আমাকে আপনাদের এক জন হিসেবে গ্রহণ করুন, একজন জনজাতি হিসেবে। আপনাদের শিল্প, ঐতিহ্য, জীবনযাত্রা অসীম সমৃদ্ধ। আপনাদের জীবনযাত্রা থেকে অনেক কিছু শেখার আছে যেমন সরলতা, নিষ্ঠা, প্রকৃতির সঙ্গে গাভীর সম্পর্ক। ইতিহাস সাক্ষী যে ভারতের প্রথম কবি, আদি কবি ঋষি বাল্মিকী একজন বনচারীর ঋষি। জনজাতি সম্প্রদায়ের অবদান চিরকাল আমাদের দেশকে সম্পৃক্ত করেছে এবং ভবিষ্যতেও করবে। গোবিন্দপুর গ্রামে দীর্ঘ ছয় বছর ধরে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে এলাকার লোধা, শবর, আদিবাসী, মাহাতো সহ নিম্ন আয়ের পরিবারের ছেলেমেয়েদের বিনা পয়সায় কোচিং দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে পড়ুয়া সংখ্যা ১৮৯ জন।
শিক্ষানিকেতনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শক্তিপদ মাহাতো বলেন, রাজ্যপালকে কাছে পেয়ে আমরা খুবই গর্বিত। উনার কথা যেন আমরা বুঝতে পারি তার জন্য উনি বাংলায় বলেছেন এতে আমরা খুবই আনন্দিত।