Sunflower, Bankura, ভালো ফলন ও লাভের জন্য সূর্যমুখী চাষে ঝুঁকছে বাঁকুড়া জেলার চাষিরা

সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ২৬ এপ্রিল: ভালো ফলন ও লাভের জন্য বাঁকুড়া জেলার চাষিরা সূর্যমুখী চাষে মনোনিবেশ করেছে। চাষিদের এই ভালবাসার প্রতিদানে সূর্যমুখীও যেন চাষিদের মুখে হাঁসি ফোটাতে তৎপর। বাঁকুড়া জেলায় সূর্যমুখী ফুল চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখে জেলার বহু কৃষকই এখন সূর্যমুখী ফুল চাষে ঝুঁকছেন।

শালতোড়া ও খাতড়ার ছোটবড় টিলা ও পাথরে ভরা জমি থেকে শুরু করে বড়জোড়া, মেজিয়া, পখন্না ও রাঙামাটির নদী সংলগ্ন এলাকা এমনকি বিষ্ণুপুর ও কোতুলপুরের মত উর্বর জমিতেও এই তৈলবীজ সূর্যমুখীর চাষ হতে দেখা যাচ্ছে। জেলার কিছু এলাকায় জমি ফুলে ফুলে হলুদ হয়ে উঠতেও দেখা যাচ্ছে। বর্তমানে সূর্যমুখী তৈলবীজের চাহিদা বাড়ছে।সূর্যমুখীর বীজ থেকে তৈরি হয় উচ্চমানের খাওয়ার তেল যা হৃদরোগী সহ সকলের জন্য উপযোগী। বাজারে সূর্যমুখী তেলের বেশ ভালো চাহিদা রয়েছে। এই তৈলবীজ থেকে তুলনামূলক বেশি পরিমাণে তেলও পাওয়া যায়। তাছাড়া খাদ্যশস্য হিসেবে সূর্যমুখী বীজের ব্যবহার বাড়ছে।

অন্যদিকে সূর্যমুখী চাষে অন্য তৈলবীজের তুলনায় কম খরচ ও পরিশ্রম লাগে। পোকামাকড়ের হানাও অনেক কম। অবশ্য এই চাষে জমির মাটি প্রস্তুতিতে একটু বেশি যত্ন নিতে হয়। জমিতে ভালোভাবে চাষ দিয়ে আগাছা তুলে ফেলে সারি দিয়ে বুনতে হয় বীজ। প্রতি হেক্টরে লাগে ৮-১০ কেজি বীজ। এই তৈল বীজের চাষ ভাদ্র-আশ্বিন মাসে ব্যাপক হলেও শুখা বা খরিফ মৌসুম বৈশাখের শেষে ও জৈষ্ঠ্য মাসেও জেলায় দেখা যাচ্ছে সূর্যমুখীকে। বাঁকুড়ায় বিভিন্ন জাতের সূর্যমুখী ফুলের চাষ হলেও ডি এস-১ ও বারি সূর্যমুখী-২ বর্তমানে চাষিদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়। এই জাতের সূর্যমুখীর ফলন বেশি ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম। তাছাড়া এই চাষ কম জলেও ভাল হয়। জেলা কৃষি দপ্তরের পক্ষ থেকেও চাষিদের সূর্যমুখী চাষে উৎসাহিত করা হচ্ছে। তাদের মতে, বাঁকুড়া জেলার আবহাওয়া এবং মাটি সূর্যমুখী চাষের উপযুক্ত। গরমের সময়ও সূর্যমুখী জেলার চাষিদের পকেট ভরে দিতে পারে। এই তৈলবীজ কৃষকদের আয় বাড়াবে।

শুশুনিয়া পাহাড়ের পিছন দিকের সূর্যমুখী ফুল চাষি অনন্ত হেমব্রম ও ক্ষিতীশ রায় জানান যে, গতবছর গরমের সময় সামান্য সূর্যমুখীর চাষ করেছিলেন। গতবার ভালো লাভ হওয়ায় এবার তাদের বেশকিছু জমিতে এই চাষ করেছেন। তাদের বক্তব্য, জেলায় সরিষার চাষ কমার ফলে মৌমাছি পালকেরা সমস্যায় পড়েছেন। সূর্যমুখীর চাষ বাড়তে থাকায় তারাও আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন। তাদের বক্তব্য, এই হলুদ ফুলই যেন এখন তাদের আশা ও ভরসা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *