জনসভায় এসে চাকরির আবেদন জানালেন হাতির হানায় মৃতের পরিবারের সদস্যরা

পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, মেদিনীপুর, ৬ মার্চ: হাতির হানায় মৃতের পরিবারের সদস্যরা চাকরি না পেয়ে জনসভায় মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলান। কিন্তু নিরাপত্তার ঘেরাটোপ পেরিয়ে দেখা করাই ছিল সমস্যা। শেষ পর্যন্ত সাংবাদিকদের মধ্যস্থতায় কথা বললেন মন্ত্রীর সঙ্গে। আবেদন জানালেন চাকরি দেওয়ার।

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, হাতির হানায় মৃতের পরিবারের একজন বন দফতরে চাকরি পাবে। সেই মতো পশ্চিম মেদিনীপুরে গতবছর বেশ কয়েকজন চাকরি পেয়েছেন। কিন্তু এখনও তিন পরিবারের লোকজন চাকরি পায়নি। চাকরির দাবিতে তারা দেখা করলেন রাজ্যের বনমন্ত্রীর সাথে।

রবিবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গোপগড় ইকো পার্কে বন বান্ধব উৎসবে উপস্থিত হয়েছিলেন বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। মঞ্চে বক্তৃতায় তিনি হাতির হানায় মৃতের পরিবারের সদস্যদের চাকরি দেওয়ার কাজও শেষ পর্যায়ে বলে জানান। তিনি বলেন, আট জনের মতো বাকি রয়েছেন। তাদের ফরেস্ট গার্ডে নিয়োগ দেওয়া হবে। তখন দর্শকের আসনে আর বসে থাকতে পারলেন না পশ্চিম মেদিনীপুরের গোয়ালতোড়ের রামগড়ের দুই মহিলা এবং শালবনীর মধুপুরের এক যুবক। আসন ছেড়ে সোজা হাজির মঞ্চের বামদিকে। বনমন্ত্রী সাথে দেখা করার অপেক্ষায় থাকেন। যদি চাকরি মেলে সংসারটি বেঁচে যাবে।

ওই দুই মহিলার স্বামী এবং যুবকের বাবা মারা গিয়েছেন হাতির হানায়। তারা বলেন, বহুবার বিভিন্ন দফতরে ঘুরেছি সুফল মেলেনি। তাই এদিন তারা উপস্থিত হয়েছিলেন মন্ত্রীর সাথে দেখা করার জন্য। মঞ্চের কাছে এলেও নিরাপত্তা ভেঙে কাছে পৌঁছানো খুব একটা সহজ নয়। কষ্টের কথা জানালেন সাংবাদিকদের। আর্তি জানালেন মন্ত্রীর সাথে দেখা করার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য। সাংবাদিকদের সহযোগিতায় অবশেষে কথা বললেন বনমন্ত্রীর সাথে। জানালেন সমস্যা।

গোয়ালতোড়ের বালিবাঁধ এলাকায় বাসিন্দা গৌরি পাল দাস বলেন, ২০১৩ সালে আমার স্বামী সঞ্জয় পালের মৃত্যু হয় হাতির হানায়। তৎকালীন সময়ে এক লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ পেলেও, মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরেও চাকরি এখনো মেলেনি। বিভিন্ন দফতরে ঘুরেছেন, কোনো সুরাহা হয়নি। স্বামী মারা যাওয়ার পর শ্বশুরবাড়ির লোকজন বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন।

পুত্র সন্তানকে নিয়ে বাপের বাড়ি শালবনীর পাটাঝরিয়াতে আশ্রয় নেন। বৃদ্ধ বাবা, মায়ের সংসারে নিত্যদিন অনটন। শালপাতা সেলাই করে সংসার চলে। বাধ্য হয়ে এদিন তিনি বনমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। গৌরি দেবী বলেন, বনমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন চাকরিটা দ্রুত হয়ে যাবে। বিষয়টি দেখার জন্য পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমারকে দায়িত্ব দিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *