আমাদের ভারত, রামপুরহাট, ১২ ফেব্রুয়ারি: একটি নির্দিষ্ট দোকান থেকে ওষুধ কিনতে বাধ্য করছেন চিকিৎসক। রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন চিকিৎসক প্রিয়দর্শী বাগচির বিরুদ্ধে এমনই গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। ওই চিকিৎসককে শো-কজ করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। যদিও চিকিৎসক তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে কিছু বলতে চাননি।
রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন চিকিৎসক প্রিয়দর্শী বাগচি রোগী দেখার পর হাসপাতালের বাইরে একটি নির্দিষ্ট দোকানে ওষুধ কিনতে পাঠান রোগীর আত্মীয়দের। এমনকি একটি ছোট্ট চিরকুটে তিন চারটে ওষুধের নাম লিখে নিচে নিচের মোবাইল নম্বর দিয়েছেন। এনিয়ে দীর্ঘদিন থেকে রোগীর আত্মীয়রা অভিযোগ জানিয়ে আসছিলেন। বেশ কয়েকবার তাকে সতর্ক করা হয়েছিল। কিন্তু তাতেও সচেতন হননি তিনি। মঙ্গলবার রাত্রে ফের মেডিসিন বিভাগে গিয়ে ওই চিকিৎসক রোগীর আত্মীয়দের একইভাবে চিরকুটে ওষুধ লিখতে শুরু করেন। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন রোগীর আত্মীয়রা।
আন্নাবানু খাতুন বলেন, “আমি ভোরের দিকে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলাম পেটে ব্যাথা নিয়ে। চিকিৎসক আমাকে দেখে চিরকুটে ওষুধ লিখতে লাগলেন। আমার কি হয়েছে তা শোনার প্রয়োজন বোধ করলেন না। এমনটা আসা করিনি”।
সাকিনা বিবি বলেন, “হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসা পাওয়ার জন্য আমরা গরিব মানুষ ভর্তি হয়েছি। কিন্তু চিকিৎসক বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে বলছেন। এমনকি চিরকুটে নিজের মোবাইল নম্বর দিয়ে একটি নির্দিষ্ট দোকানে যেতে বলছেন। কিন্তু এতো দোকান থাকতে আমরা চিকিৎসকের বলা নির্দিষ্ট দোকানে যাব কেন”?
জাকির শেখ বলেন, “চিকিৎসকের সঙ্গে ওই ওষুধের দোকানের আঁতাত রয়েছে। কমিশনের ভিত্তিতে চিকিৎসক রোগীর আত্মীয়দের ওষুধ কিনতে পাঠাচ্ছেন। আমরা গরিব মানুষ। ছ’শো টাকার ওষুধ কিনতে হয়েছে। আমরা যদি ওষুধ কিনতেই পারব তাহলে সরকারি হাসপাতালে কেন ভর্তি হব”।
অভিযুক্ত চিকিৎসক বলেন, “আমি যা বলার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে বলব”। হাসপাতালের ডেপুটি সুপারিন্টেনডেন্ট শর্মিলা মৌলিক বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার পর ওই চিকিৎসককে শো-কজ করা হয়েছে। তাকে সচেতন করে বলা হয়েছিল এরকম করবেন না। কিন্তু তারপরও তার বিরুদ্ধে একই অভিযোগ আছে। বিষয়টি স্বাস্থ্য ভবনে জানানো হয়েছে। রোগী কল্যান সমিতির চেয়ারম্যানকেও জানানো হয়েছে”।