করোনায় বাড়াবাড়ি পুলিশের, হস্তক্ষেপে বাধ্যই হলেন মুখ্যমন্ত্রী

চিন্ময় ভট্টাচার্য
আমাদের ভারত, ২৫ মার্চ: কখনও বাজারে গিয়ে লাঠি হাতে ক্রেতা-বিক্রেতাদের খেদানো। কখনও আবার ইসিএলের কর্মী বা খাবারের ডেলিভারি বয়, ওষুধ কিনতে যাওয়া মানুষকে লাঠিপেটা। কখন আবার সবজি নামিয়ে ফিরে আসা ভ্যানের চালককে মার। আবার কখনও জোর করে মুদির দোকান বন্ধ করানো। সময়ের হিসেব না-কষেই দিনভর টহলদারি আর সক্রিয়তার জন্য যতটুকু বাহবা লকডাউনের বাজারে পুলিশকর্মীদের পাওয়ার কথা ছিল, বুধবার তা যেন কেড়ে নিল পুলিশের অতিসক্রিয়তাই। পরিস্থিতি এমন হল যে নবান্নে জমা হতে লাগল পুলিশের বিরুদ্ধেই একের পর এক অভিযোগ।

বাধ্য হয়ে হস্তক্ষেপে বাধ্য হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি পুলিশকে পরিষ্কার হুঁশিয়ারি দেন, বুঝে-শুনে চলতে। পরিস্থিতি সামলানোর বদলে বাড়াবাড়ি করলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শুধু পুলিশই নয়, প্রশাসনের এক আধিকারিকও নিজের দায়িত্ব ভুলে এদিন পুলিশের ভূমিকা নিয়েছেন বলে রীতিমতো অভিযোগ ওঠে। লকডাউনের বাজারে নাম না-করে সেই আধিকারিক-সহ প্রশাসনের অন্যান্য কর্তাদেরও তাই সমঝে চলার হুঁশিয়ারি দেন মুখ্যমন্ত্রী।

পুলিশের এই বাড়াবাড়িতে অবশ্য এদিন অবস্থা জটিল হয়ে ওঠে। ইসিএলের কর্মীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। এক ইসিএলকর্মীর পরিচয়পত্র না-দেখেই পুলিশ লাঠিচার্জ করায় ওই কর্মীর পিঠে লাঠির মোটা দাগ পড়ে যায়। সেই দাগ সংবাদমাধ্যমকে দেখিয়ে ইসিএলকর্মীরা কাজ বন্ধ করার হুমকি দেন। তাঁরা জানিয়ে দেন, কয়লা তুলবেন না। সরকার যেন বিদুৎ উৎপাদনের বিকল্প ব্যবস্থা করে।

বিভিন্ন জায়গায় সবজির পাইকারি বিক্রেতারাও সবজি বিক্রি বন্ধ করে দেন। যার জেরে খুচরো বিক্রেতারা অনেকেই জানিয়ে দেন, কাল থেকে আর সবজি বিক্রি করতে বসবেন না। ডেলিভারি বয়রা খাবার সরবরাহকারী সংস্থাকে জানিয়ে দেন, তারা খাবার সরবরাহ করতে পারবেন না। সংস্থার কর্তারা কোনওমতে পরিস্থিতি সামলান। অবস্থা বুঝেই হস্তক্ষেপে বাধ্য হন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি খাবারের ডেলিভারি বয়দের জন্য পরিচয়পত্রের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *