সাথী দাস, পুরুলিয়া, ১৮ আগস্ট: কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পে জেলায় কতটা কাজ হয়েছে তা সরেজমিনে খতিয়ে দেখলেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। দলটিতে ছিলেন চারজন। আজ তাঁরা নির্ধারিত তালিকা মতো বলরামপুরে পৌছান। মূলত একশো দিনের কাজ, আবাস যোজনায় বাড়ি নির্মাণ থেকে প্রধান মন্ত্রী সড়ক যোজনা এই সব প্রকল্পের কাজ খতিয়ে দেখতে আসেন। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সঙ্গে জেলা থেকে জাতীয় কর্ম নিশ্চয়তা প্রকল্পের জেলা আধিকারিক সহ বলরামপুর ব্লকের বিডিও, জয়েন্ট বিডিও এবং অন্যান্য আধিকারিক মিলিয়ে প্রায় কুড়িজন ছিলেন।
কেন্দ্রীয় দলের প্রতিনিধিরা প্রথমেই যান তেঁতলো গ্রাম পঞ্চায়েতের পতিডি গ্রামে। সেখানে তাঁরা স্থানীয় বাসিন্দা এবং সুবিধাপ্রাপক কুশল পতির প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় নির্মিত বাড়িটি দেখেন। কথা বলেন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। এরপর তাঁরা বলরামপুর কলেজ ময়দানে নির্মিত একটি বৃক্ষ রোপনের কাজ এবং জমি সমতলিকরণের কাজ দেখেন। তারপর বাঘাডি গ্রামের একটি একশো দিনের কাজে নির্মিত ঢালাই রাস্তা খতিয়ে দেখেন। ফিতে নিয়ে মাপজোক করেন রাস্তাটি। মাটি খুঁড়ে গভীরতার মাপ নেন। তারপর নির্মিত কাজের বোর্ডটি অবহেলায় পড়ে থাকার কারণ জানতে চান। এরপর ওই দলটি চলে যায় সুপুরডি গ্রামে।সেখানে গিয়ে তাঁরা একটি চাষবাসের জলের ব্যবহারের জন্য নির্মিত ডোবার কাজ দেখেন। ডোবার মধ্যে জল থাকায় তাতে বাঁশ ঢুকিয়ে মাপ নেন। সেখান থেকে মালতি গ্রামে স্থানীয় পোড়োগোড়া বড়চাতরমা হয়ে গিদিঘাটি গ্রাম পর্যন্ত নির্মিত প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার রাস্তাটি পরিদর্শন করেন। মাপ করে দেখেন কতটা চওড়া হিসাবে তৈরি হয়েছে। এরপর তারা জেলা সদরের উদ্দেশ্য ফিরে যান। তাঁদের এই পরিদর্শনের বিষয়ে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল সংবাদমাধ্যমের সাথে কথা বলতে চাননি।
আজকের কেন্দ্রীয় দলের পরিদর্শন বিশেষ করে বলরামপুর ব্লকে আসায় বিজেপিকে খোঁচা মারেন ক্ষমতায় থাকা তৃণমূলের স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মন্টু মাহাতো। তিনি বলেন, “যে কোনও কাজের পরিদর্শন করতেই পারেন কেন্দ্রীয় দল। কাজের ভুল বা ঠিক সবটা খতিয়ে দেখবেন তাঁরা। তবে, নির্দিষ্ট এই ব্লকের বিভিন্ন গ্রামে দিন ভর পরিদর্শন করার উদ্দেশ্য পরিষ্কার হচ্ছে না। বিজেপি এটা পরিকল্পনা করে করেছে। তবে, বিজেপির এটাও দেখা উচিত যে একশো দিনের বকেয়া টাকা মিটিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা।”
বলরামপুরের বিজেপি বিধায়ক বাণেশ্বর মাহাতো বলেন, “দুর্নীতি করলে আশঙ্কা থাকবেই। কেন্দ্রীয় দল পরিদর্শন করে কী পেল না পেল তা নজরে রাখবো আমরা। এটা সবারই স্বাগত জানানো উচিত।”
এদিকে ওই এলাকায় একশো দিনের কাজের টাকা না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সুপুরডি গ্রামে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের কাছেই একশো দিনের বকেয়া টাকা মেটানোর জন্য বলেন স্থানীয় বাসিন্দা বঙ্কিম মাহাতো। তিনি অবশ্য এর জন্য প্রধান, বিডিওর উদ্দেশ্যে মিটিয়ে দেওয়ার কথা বলেন।