Sukanta, BJP, এটা হিন্দুদের অপমান, বাস থেকে গেরুয়া পতাকা খুলতে বাধ্য করার ঘটনায় সরব সুকান্ত মজুমদার, তোপ দাগলেন মমতা ও কলকাতা পুলিশকে

আমাদের ভারত, ১১ এপ্রিল: সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে কলকাতায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাস থেকে একদল মুসলিম জনতা বাস কর্মীকে গেরুয়া পতাকা খুলতে বাধ্য করছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক পারদ এবার উর্ধ্বমুখী। এই ঘটনাকে হিন্দুদের অপমান বলে তোপ দেগেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। রাজ্যের হিন্দুদের প্রতি এর প্রতিবাদ জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

সোশ্যাল মিডিয়ার ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিও ঘিরে নতুন করে রাজনৈতিক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, কলকাতার কোনো একটি জায়গায় একটি বাস থেকে গেরুয়া পতাকা খুলতে বাধ্য করা হচ্ছে। বড় সংখ্যায় একদল মুসলিম জনতা এই কাজ করতে বাধ্য করছে। সেই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।

এই ঘটনাকে হিন্দুদের অপমান হিসেবে চিহ্নিত করে সুকান্ত মজুমদার বলেন, “এটা শুধু গেরুয়া পতাকার নয়, হিন্দু সংস্কৃতির উপর আঘাত। এর প্রতিবাদে তিনি ঘোষণা করেছেন, আগামী শনিবার হনুমান জয়ন্তীতে রাজ্যের প্রতিটি হিন্দু যেন নিজেদের বাড়িতে গেরুয়া পতাকা উত্তোলন করেন। বিজিপির রাজ্য সভাপতি আরও দাবি করেন, পুলিশের সামনে এই ধরনের আচরণ রাজ্যে ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর সরাসরি হস্তক্ষেপ। তিনি বলেন, যেভাবে গেরুয়া পতাকা নামানো হয়েছে তা শুধু দুঃখজনক নয়, নিন্দনীয়।

তিনি লিখেছেন, “আমি পশ্চিমবঙ্গের ব্যর্থ মুখ্যমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করতে চাই, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর তার মেরুদণ্ডহীন, কাপুরুষ কলকাতা পুলিশের এই পৈশাচিক উদযাপন আসলে কী প্রমাণ করে? ধর্মনিরপেক্ষতা? ভারতীয় গর্ব এবং আধ্যাত্মিক শক্তির আলোকবর্তিকা স্বামী বিবেকানন্দের পৈতৃক বাড়ির সামনে, একটি বিশেষ “শান্তিপ্রেমী” সম্প্রদায়ের এক উন্মত্ত জনতা একজন ভীত হিন্দু বাস চালককে ঘিরে ধরে এবং তাকে তার গাড়ি থেকে গেরুয়া পতাকা নামাতে বাধ্য করে। ভিডিওটিতে দেখুন তার মুখের দিকে তাকান। তিনি ভীত, কাঁপছেন, অপমানিত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পশ্চিমবঙ্গে “ধর্মনিরপেক্ষতা” দেখতে এমনই দেখাচ্ছে- একটি রাজ্য যা এখন ভয়, তুষ্টি এবং দ্বিমুখী মানদণ্ডে পচে গেছে। জনতা একজন বিশ্বখ্যাত আইকনের বাড়ির সামনে একজন ব্যক্তির পরিচয় কেড়ে নিতে বাধ্য করার সময় তাঁকে তিরস্কার করেছিল। আর রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী নীরব? অনুপস্থিত পুলিশ? কাপুরুষতার ঢালের আড়ালে লুকিয়ে আছে।” তিনি পুলিশের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেছেন, “কলকাতা পুলিশ তুমি কী পদক্ষেপ করেছো? এফআইআর কোথায়? শান্তিপূর্ণ হিন্দু সমাবেশের ক্ষেত্রে তুমি যে স্বতঃপ্রণোদিত মামলাগুলো এত পছন্দ করো, সেগুলো কোথায়? যখন ৫০ জন নিরীহ হিন্দু তেরঙ্গা এবং গেরুয়া পতাকা হাতে জড়ো হয়, তখন তুমি ৫০০ জন দাঙ্গা পুলিশ, লাঠি, কাঁদানে গ্যাস এবং ড্রোন মোতায়েন করো। কিন্তু যখন একজন হিন্দুকে জনতার দ্বারা হয়রানি করা হয় এবং প্রকাশ্যে অপমান করা হয়? তুমি মৃতের মতো অভিনয় করো। তোমার ভণ্ডামি দুর্গন্ধযুক্ত। তোমার নির্বাচনী প্রয়োগ অপরাধমূলক। তোমার নীরবতা হলো সহযোগিতা। তোমার রাজনৈতিক প্রভুদের খুশি করার জন্য তুমি আর কত অপমান চুপচাপ দেখবে?”

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি লিখেছেন, “মনে রাখবেন ইতিহাস ক্ষমা করে না। আপনার শাসন আমলে নিরপরাধদের মুখোমুখি হওয়া প্রতিটি ইঞ্চি অন্যায়, প্রতিটি সেকেন্ডের অপমান নথিভুক্ত করা হবে। আপনি এখন তুষ্টির আড়ালে লুকাতে পারেন, কিন্তু হিসাব‌ হবে। আর যখন তা হবে, তখন যত স্লোগান বা সাজানো সহানুভূতিই হোক না কেন, এই অপরাধবোধ ধুয়ে ফেলা যাবে না।’

বিজেপি সুত্রে খবর, তারা বিষয়টি নিয়ে রাজ্যজুড়ে প্রচার শুরু করবেন। হনুমান জয়ন্তীকে সামনে রেখে গেরুয়া পতাকা লাগানোর আহ্বান আরো জোরালো ভাবে তোলা হবে। এ বিষয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি ওই বাস থেকে গেরুয়া পতাকা খুলে ফেলার ভিডিও পোস্ট করে লেখেন, গেরুয়া কেবল একটি রং নয়। এটি অস্তিত্ব এবং প্রতিরোধের প্রতিনিধিত্ব করে। স্বামী বিবেকানন্দ, স্বামী প্রণবানন্দ সহ অগণিত সাধু যারা মানবতার সেবায় নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন তারা গর্বের সঙ্গে এই রং পরিধান করেন। আমাদের জাতীয় পতাকায় এটি সাহস ও ত্যাগের প্রতীক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *