আমাদের ভারত, ১৩ এপ্রিল: আহ্বান করা হয়েছিল শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির প্রতিবাদে মিছিল। কিন্তু রাজ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে মুর্শিদাবাদ প্রসঙ্গ সেই মিছিলেজুড়ে গেল। কলেজ স্কোয়ার থেকে রানী রাসমণি এভিনিউ পর্যন্ত বিজেপির উদ্যোগে মহা মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছিল। রাজ্য বিজেপির তিন সর্বোচ্চ নেতাকে অনেকদিন পর পাশাপাশি হাঁটতে দেখা গেল কলকাতার রাজপথে। মিছিল শুরুর আগে কলেজ স্ট্রিটের মঞ্চে দাঁড়িয়ে জমায়েতের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রেখেছেন সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারী ও দিলীপ ঘোষ। সেই বক্তব্যে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, প্রতিবাদ শুধু শিক্ষা ও শিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতিতেই সীমাবদ্ধ থাকছে না। মুর্শিদাবাদে হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের ইস্যুতেও তারা প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।
সুকান্ত, শুভেন্দু ও দিলীপ ঘোষের সঙ্গে মিছিলে ছিলেন জ্যোতির্ময় মাহাতো, লকেট চট্টোপাধ্যায়, অগ্নিমিত্রা পাল, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, তাপস রায় ইন্দ্রনীল খাঁ সহ রাজ্য বিজেপির তাবড় মুখ।
সুপ্রিম কোর্ট প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষা কর্মীর নিয়োগ বাতিলের রায় দেয়। রাজ্য বিজেপির সভাপতি সেদিনই সন্ধ্যাতে দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করে ঘোষণা করেছিলেন, যুব মোর্চা ১৩ এপ্রিল পথে নামবে। রাজ্য সরকার যোগ্য- অযোগ্য বাছাই না করে দেওয়ার ফলেই সব চাকরি চলে গেল বলে দাবি সুকান্ত, শুভেন্দু ও দিলীপ ঘোষ সহ বিজেপির সব নেতার। সেই অভিযোগকে সামনে রেখেই মিছিল হবে বলে সুকান্ত মজুমদার সেদিন জানিয়েছিলেন। কিন্তু তার মধ্যেই মুর্শিদাবাদ সহ রাজ্যের বেশ কয়েকটি প্রান্ত অশান্ত হয়েছে। এই মুহূর্তে বাংলার রাজনীতির সবচেয়ে বড় চর্চিত বিষয় এখন এই অশান্তি। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এই ইস্যুকে ছেড়ে দেওয়া সম্ভব হবে না বলেই আজকের মিছিলে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে মুর্শিদাবাদের অশান্তিকেও জুড়ে নেন তারা।
রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ প্রথমে মুরলিধর সেনের দপ্তরে পৌঁছান। তিনটের পর সেখান থেকে তারা একসঙ্গে পায়ে হেঁটে কলেজ স্কোয়ারের দিকে যান। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উল্টো দিকে পথসভার মঞ্চ ছিল। সেই মঞ্চ থেকে জমায়েতের উদ্দেশ্যে তিনজনই বক্তব্য রাখেন। তিনজনের বক্তব্যে দুটি বার্তা স্পষ্ট ভাবে ধরা পড়ে। শুধু চাকরির দুর্নীতিতেই প্রতিবাদ নয়। এই মিছিল থেকে মুর্শিদাবাদের ঘটনা প্রবাহের প্রতিবাদ হবে। সব বিভেদ ভুলে রাজ্যজুড়ে বিজেপি কর্মীদের ঐক্যের ডাক দেন তাঁরা। আগামী কয়েক মাস এক হয়ে পথে নামার ডাক দেন তাঁরা। নেতৃত্বরা বলেন, তবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের মেয়াদ শেষ করা সম্ভব হবে। বিভেদ ভুলে এক হওয়ার ডাক দেন তাঁরা। তাঁদের স্লোগান ছিল, “বাটোগে তো কাটোগে, এক হ্যায় তো সেফ হ্যায়।”
বলাই বাহুল্য রাজ্য বিজেপির তিন শীর্ষ নেতাকে একইসঙ্গে মঞ্চে ও মিছিলে পা মেলাতে দেখে চাঙ্গা বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। তাই মিছিল থেকেও মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি আরও জোড়ালো হয়।