আমাদের ভারত, রামপুরহাট, ৮ জানুয়ারি: বাম-কংগ্রেস এবং অন্যান্য দলের ডাকা সাধারণ ধর্মঘট শান্তিপূর্ণ ছিল রামপুরহাট মহকুমায়। ভোর থেকে বাম-কংগ্রেস ও
এসইউসিআই’য়ের মিছিল শহর পরিক্রমা করে। ট্রেন অবরোধের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় ধর্মঘটীরা। তবে ঘণ্টাখানেক ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে তিন দল।
অন্যদিকে নলহাটি থানার লোহাপুরে ধর্মঘট ব্যর্থ করে পথে বের হওয়ার জন্য গাড়ি চালক এবং বাস যাত্রীদের মিষ্টি খাইয়ে অভিনন্দন জানায় তৃণমূল। বুধবার ভোরে আচমকা রামপুরহাট ষ্টেশনে হানা দেয় বাম-কংগ্রেস। তারা রামপুরহাট ষ্টেশনের এক নম্বর লাইন ধরে হাঁটতে হাঁটতে বিশ্বভারতী ফার্স্ট পাসেঞ্জারের ইঞ্জিনের উপর উঠে পড়ে। রেল পুলিশ তাদের লাইন থেকে জোর করে তুলে দেয়। এরপরেই নির্ধারিত সময়ে বিশ্বভারতী ফার্স্ট প্যাসেঞ্জার, ময়ূরাক্ষী ফার্স্ট প্যাসেঞ্জার ছেড়ে যায়। সেখান থেকে ধর্মঘটীদের মিছিল রামপুরহাট বাস স্ট্যান্ডে যায়। সকাল ৯ টার পর ফের বাম-কংগ্রেস যৌথ মিছিল বের করে। তার আগেই রামপুরহাট মাড়্গ্রাম মোড়ে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কঅবরোধ করে এসইউসিআই। আয়েসা খাতুনের নেতৃত্বে আধঘণ্টা অবরোধ চলার পর সেখানে হাজির হয় বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস। তারাও পথ অবরোধে সামিল হয়। টায়ার জ্বালিয়ে ঘন্টাখানেক অবরোধের পর পুলিশের অনুরোধে পথ অবরোধ তুলে নেন সকলে। এরপর শহরে মিছিল সহকারে জোড় হাত করে দোকান বন্ধের অনুরোধ করেন। দুপুর পর্যন্ত শহরে মিছিল করে তারা।
সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য সঞ্জীব বর্মণ বলেন, “ধর্মঘট সর্বাত্মক। দু-একটি দোকান খোলা থাকা মানেই ধর্মঘট ব্যর্থ বলা যাবে না। মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ধর্মঘটকে সর্বাত্মক করেছে। কেন্দ্র সরকার তাদের পুলিশ বাহিনী দিয়ে ট্রেন চালিয়েছে তবে যাত্রী ছিল না। রাজ্য সরকার তাদের পুলিশ দিয়ে জোড় করে বাস চালিয়েছে যাত্রী ছাড়াই। এই ধর্মঘটে মানুষের অংশগ্রহণ ছিল। আর মানুষের এই স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণই আগামী দিনে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনকে জোরদার করতে আমাদের উজ্জীবিত করবে। ধর্মঘটকে সমর্থন করার জন্য আমরা সমস্ত মানুষকে অভিনন্দন জানাচ্ছি”।
হাঁসন কেন্দ্রের কংগ্রেস বিধায়ক মিল্টন রশিদ বলেন, “রাজ্য সরকার নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা করছেন। আবার একই দাবিতে আমাদের ডাকা ধর্মঘটের বিরোধিতা করছেন। আসলে উনি সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জিকে সমর্থন করেন। তা না হলে বিল পাশের সময় তার সাংসদরা লোকসভায় এবং রাজ্যসভায় অনুপস্থিত থাকতেন না। তাছাড়া একসময় লোকসভায় স্পিকারকে কাগজ ছুঁড়ে তিনিই নাগরিকপঞ্জির দাবি তুলেছিলেন। এখন এখানে নাটক করছেন। উনি একসময় মানুষের সহানুভূতি কুড়োতে গাড়ির বনেটে চেপে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যার নাটক করেছিলেন”।
এদিকে সকাল থেকে লোহাপুর কাঁটাগড়িয়া মোড়ে জাতীয় সড়কের উপর বাস, লরি থামিয়ে চালক এবং যাত্রীদের মিষ্টিমুখ করায় তৃণমূল। তৃণমূলের নলহাটি ২ নম্বর ব্লক সভাপতি আব্দুর রহমান বলেন, “এই আন্দোলন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম শুরু করেছিলেন। তিনিই জোড়ালো ভাবে আন্দোলন করার পর সারা দেশ আন্দোলন করেছে। আর এখন বামফ্রন্ট-কংগ্রেস ঘোলা জলে মাছ ধরার চেষ্টা করছে”।