আমাদের ভারত, ২০ ফেব্রুয়ারি: শেষ পর্যন্ত সন্দেশখালি পৌছে গিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। আর সেখানে গিয়েই তাঁর স্লোগান, শাজাহান ফিনিশ। একইসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের আশ্বাস, আপনারা পাশে থাকুন সন্দেশখালির সবকিছু পরিবর্তন হবে। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ পাওয়ার পরই শুভেন্দু অধিকারী, শংকর ঘোষ আজ সন্দেশখালিতে পৌঁছান।
বৃহস্পতিবার সন্দেশখালিতে প্রথমে ঢুকতে বাধা পান শুভেন্দু অধিকারী। ঐদিন জায়গায় জায়গায় ব্যারিকেট তৈরি করেছিল পুলিশ। রামপুরে তাদের আটকে দেয় পুলিশ। এসডিপিও আমিনুল ইসলাম জানান, ১৪৪ ধারা জারি আছে। তারা ওখানে গেলে নতুন করে অশান্তি তৈরি হতে পারে, কোনো রকম গন্ডগোল হতে দেওয়া যাবে না। আদালত ১৪৪ ধারা বাতিল করার পরও ফের ১৪৪ ধারা জারি করে পুলিশ। তাকে সন্দেশখালি যেতে আটকানো হয়েছে বলে অভিযোগ করে বিচারপতি কৌশিক চন্দ্রের কাছে শুক্রবার মামলা দায়ের করেন শুভেন্দু অধিকারী। সোমবার মামলার শুনানিতে তাঁর সন্দেশখালি ঢোকায় কোনো বাধা নেই বলে জানিয়ে দেয় হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার শুভেন্দু সন্দেশখালি রওনা হলে, আবারো ধামাখালিতে তাকে আটকে দেয় পুলিশ। জানানো হয়, সোমবারের রায়ের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করেছে রাজ্য। কিন্তু তৈরি ছিলেন শুভেন্দুবাবুর আইনজীবীরাও। শেষ পর্যন্ত আজ শুভেন্দু অধিকারীকে সন্দেশখালি যাওয়ার অনুমতি দিয়ে দেয় সকলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এ শিবজ্ঞনম এবং বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। আদালত জানায়, শুভেন্দু অধিকারী এবং শংকর ঘোষ সন্দেশখালিতে যেতে পারবেন, তবে যেতে হবে কেবলমাত্র তাদের দু’জনকেই।
ফলে সন্দেশখালি পৌঁছানোর বাধা কাটে। ধামাখালি থেকে টোটোতে চেপে সন্দেশখালি রওনা হয় শুভেন্দু অধিকারী ও বিধায়ক শংকর ঘোষ। টোটোতে বসে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, এলাকার মানুষ শান্তি চায়। শেখ শাহজাহানের ফাঁসি চায়। শাহজাহানের পালানোর উপায় নেই।
সন্দেশখালিতে ঢোকার পরই গ্রামের মহিলারা ফুল ছিটিয়ে অভ্যর্থনা জানান শুভেন্দু অধিকারীকে। এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলতে পাড়ায় পাড়ায় পরিদর্শনে যান তারা। পাত্র পাড়ায় এক নির্যাতিতার বাড়ির সিঁড়িতে বসে কথা বলেন মহিলাদের সঙ্গে। ভয় না পেয়ে তাদের শক্ত হওয়ার পরামর্শ দেন, প্রয়োজনে গ্রামের মানুষ যেন তার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে সেজন্য নিজের ফোন নাম্বারও দেন তাদের।
তিনি সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলার সময় বলেন, আপনারা সঙ্গে থাকবেন তো? তাহলেই হবে। শেখ শাহজাহান ফিনিশ। সন্দেশখালির সব পরিবর্তন হয়ে যাবে। শান্তি ফিরে আসবে।
এরপর বিজেপি নেতা বিকাশ সিংয়ের বাড়িতেও যান শুভেন্দু অধিকারী।সন্দেশখালির অশান্তিতে প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে তাকে জামিন দিয়েছে আদালত, কিন্তু আদালত থেকে বেরনোর সঙ্গে সঙ্গেই বিকাশকে আবার গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ধৃত বিজেপি নেতার পরিবারের সঙ্গে কথা বলতেই তার বাড়িতে যান শুভেন্দু অধিকারী। সেই সময় বিকাশের বাড়ির বাইরে মানুষের ভিড় ছিল দেখার মতো। বিকাশের বাড়ি থেকে বেরিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, গ্রামের সকলকে একটা করে মাইক দেবো, কেউ ঘরে এলেই চোর এসেছে দস্যু এসেছে বলে ঐ মাইকে চিৎকার করতে হবে, তখন বাকিরা ঘর থেকে বেরিয়ে আসবেন।
শেষ পর্যন্ত সন্দেশখালি ঘুরে যাওয়ার সময় তিনি বলেন, লক্ষ্য স্থির থাকলে জয় হবেই। তাঁর কথায়, আমাদের লক্ষ্য স্থির ছিল তাই সন্দেশখালি পৌঁছেছি। এখানকার স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলতে পেরেছি। মহিলাদের উপর অত্যাচার হয়েছে।আদিবাসীদের জমি নিয়ে নেওয়া হয়েছে। কাউকে আইন হাতে তুলে নিতে বারণ করেছি। শাহজাহান এখানে ঘোরাফেরা করছে। যদি সে বাংলাদেশ চলে যায় সেখান থেকে চুলের মুঠি ধরে ফিরিয়ে আনতে হবে বিএসএফকে সতর্ক থাকতে হবে।