পুরভোট কি পিছোবে! করোনা আশঙ্কার মধ্যেই পুরভোটের দিনক্ষণ নির্ধারণে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকল রাজ্য নির্বাচন কমিশন

সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা, ১৩ মার্চ: বিশ্বের সঙ্গে দেশজুড়ে থাবা বসিয়েছে করোনা আতঙ্ক। এর মধ্যেই পুরভোটে দিনক্ষণ নির্ধারণ চূড়ান্ত করতে সোমবার সর্বদলীয় বৈঠক ডাকল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। আগামী সোমবার, ১৬ মার্চ বেলা ৩ টেয় রাজনৈতিক দলগুলিকে বৈঠকে ডাকা হয়েছে। এদিকে ইতিমধ্যেই করোনা সংক্রমণ রুখতে বড় জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই পরিস্থিতিতে কিভাবে পুরভোট সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে।

কমিশন সূত্রে খবর, রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাস নিজে উপস্থিত থেকে এই বৈঠকে পরিচালনা করবেন।১০টি জাতীয় এবং আঞ্চলিক স্তরের দলকে ডাকা হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপি ছাড়াও জাতীয় কংগ্রেস, সমাজবাদী পার্টি, আরএসপি, সিপিআই, সিপিআইএম সহ দলগুলিকে বৈঠকের জন্য ডাকা হয়েছে। সেই সঙ্গে ১০টি দলের পদাধিকারীকে চিঠি পাঠানো হচ্ছে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এবং প্রতিটি দলের দু’জনকে সোমবার নির্বাচন কমিশনের বৈঠকে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

কমিশন সূত্রে খবর, আগামী এপ্রিল মাসেই কলকাতা হাওড়া সহ রাজ্যের শতাধিক পুরসভায় ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। ভোটের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে রাজ্য সরকারকে একাধিক চিঠিও দেওয়া হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী রাজ্য সরকার পুরভোটের দিনক্ষণ স্থির করে তা কমিশনকে জানিয়ে দেবে। তারপর আনুষ্ঠানিক ভাবে তা ঘোষণা করবে কমিশন। সোমবার সব দলের সঙ্গে কথা বলার পর আগামী সপ্তাহেই পুরভোটের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হতে পারে।

এদিকে দিন স্থির না হলেও, শাসক-বিরোধী সব রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকেই রাজ্যে পুরসভা নির্বাচন ঘিরে প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। এদিকে করোনা ভাইরাসের বিশ্বজুড়ে মারণ সংক্রমণের পরিস্থিতিতে কিভাবে ভোট গ্রহণ সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলে। তাই সোমবার দিন চূড়ান্ত হবে নাকি ভোটগ্রহণ স্থগিত হবে, সেটা নিয়েই আপাতত বিভিন্ন মহলে ঘুরপাক খাচ্ছে জল্পনা।

কারণ একটা নয় বরং অনেকগুলি। ভোট প্রচার অথবা ভোট গ্রহণ করার সময় প্রচুর মানুষ একসঙ্গে জড়ো হন।ভোটপ্রচার-মিছিল-রাজনৈতিক সভা তো বটেই, এমনকি এই ভোটযজ্ঞে জড়িত থাকেন ভোটকর্মী, নিরাপত্তা কর্মীরা।
পুরভোট হবে আর প্রচার হবে না, তা তো হয় না। প্রচার মিছিলই হোক বা জনসভা- সেখানে হাজার, হাজার মানুষ জড়ো হন। করোনার জেরে এই মানুষের জমায়েতেই নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে।

ভোটের আগে থেকে ভোটকর্মী ও নিরাপত্তা কর্মীরা একসঙ্গে যাতায়াত করেন। এক জায়গায় থাকেন, খাওয়া-দাওয়া করেন। একই শৌচালয় ব্যবহার করেন। যেখানে স্কুল, সিনেমা হল- সব বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সেখানে এঁরা একসঙ্গে থাকবেন কী ভাবে? করোনার সংক্রমণ রুখতে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানেটাইজার সহ বিভিন্ন জিনিস ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদি, ভোটের সময় ভোটকর্মী, বুথকর্মী ও নিরাপত্তা বাহিনীকে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানেটাইজার দিতে হয়, তাতে ভোটের খরচ বিপুল বেড়ে যাবে। এইসব ঝামেলা সামাল দিয়ে আদৌ হবে তো পুরভোট? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর মিলবে হয়তো সোমবারই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *