সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা, ১৮ ফেব্রুয়ারি: বাস্তব ফিরে আসে সিনেমায় নাকি সিনেমার থেকেও কঠোর বাস্তব! মঙ্গলবার সকাল ১১ টা নাগাদ কার্যত এমন ঘটনারই সাক্ষী থাকল রিজেন্ট পার্কের কুঁদঘাটের বাবুপাড়া।ঠিক যেন জনপ্রিয় বাংলা সিনেমা ‘ভিঞ্চি দা’ র প্রথম দৃশ্য। ওই সিনেমায় মাকে অত্যাচারিত হতে দেখে রাগে বাবাকে খুন করে ফোন করে থানায় জানিয়েছিল ছেলে। আর এখানে টাকা না পেয়ে মা নমিতা দত্ত (৫০) কে খুন করে জামাইবাবুকে জানাল অভিযুক্ত ছেলে রাকেশ দত্ত। ওই যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, খুব একটা পড়াশোনা করেনি রাকেশ। বাবা অনেক আগেই মারা গিয়েছেন। লোকের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করে সংসার চালাতেন নমিতা দত্ত। আর রাকেশ টেকনিশিয়ান স্টুডিওতে টুকটাক কাজ করত। মা প্রথমে ছেলেকে অল্প কিছু টাকা হাতখরচের জন্য দিতেন। কিন্তু ছেলে সেই টাকাতেই বিভিন্ন বদসঙ্গে এবং নেশায় জড়িয়ে পড়ে ওই যুবক।
প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, এরপরেই টাকাপয়সা নিয়ে ছেলের সঙ্গে নিত্য ঝামেলা লেগে থাকত মায়ের। কখনও কিছু জিনিস, আবার কখনও টাকাপয়সা দাবি করত অভিযুক্ত রাকেশ।
পরিচারিকার কাজ করে সামান্য আয়ে ছেলের সব দাবিদাওয়া পূরণ করতে পারতেন না মা। তা নিয়েই পরের দিকে মাকে মারধর করতে শুরু করেন রাকেশ। এর আগেও এভাবেই একাধিকবার রাকেশ মাকে মারধর করলে প্রতিবেশীরা ছাড়িয়ে দিয়ে এসেছেন।
অভিযোগ, এদিনও টাকাপয়সা নিয়ে মা মৌমিতা দত্তের সঙ্গে ঝামেলা বাধে ছেলে রাকেশের। বচসা চলাকালীন-ই আচমকা মায়ের বুকে ঘুসি মারে রাকেশ। সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় মায়ের। এরপরই অভিযুক্ত রাকেশ নিজেই জামাইবাবুকে ফোন করে বলে যে, “আমি মাকে মেরে দিয়েছি।”
স্থানীয় সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশও ঘটনাস্থলে পৌঁছে নমিতাকে নিজের ঘরের বিছানাতেই মৃত অবস্থায় দেখতে পায়। এরপরে রাকেশের সঙ্গে তার মায়ের প্রতিদিনের অশান্তির কথাও জানতে পারে। জামাইবাবুকে ফোন করে জানানোর বিষয়টিও প্রকাশ্যে আসে। এরপরেই ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়।