ডাঃ প্রশান্ত কুমার ঝরিয়াৎ
আমাদের ভারত, ২৮ মার্চ: করোনার এই আবহে মানুষ জন গৃহেবন্দী। করোনাকে পরাস্ত করতে হলে এছাড়া আর কোনো উপায় নেই। মানুষের সঙ্গে শারীরিক দূরত্ব তৈরি করুন কিন্তু মানসিক দুরত্ব নয়। ফোনে অথবা চ্যাটে প্রিয়জনদের এই সময় বেশি করে খোঁজ রাখুন, যে সমস্ত প্রবীণ আত্মীয়রা একলা থাকেন তাদের খোঁজ নিন। এই আতঙ্কের আবহে তারা আরও বেশি অসহায় বোধ করছেন।
একজন হোমিওপ্যাথি ডাক্তার হিসেবে কিছু সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে এই লেখাটি আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। করোনার এই আতঙ্কে অনেকেই মানসিক ভাবে আতঙ্কিত, ভাবছেন এই বুঝি আমায় করোনা আক্রমন করল, ভয়ে বুক ধড়ফড় করছে, খিদে হচ্ছে না, ঘুম হচ্ছে না, এই রকম হলে একোনাইট ২০০ ওষুধটি দিনে দুবার হাফ কাপ জলে তিন ফোঁটা করে দিয়ে খান, উপকার পাবেন। বয়স্ক প্রবীণ ব্যক্তি যারা হার্টের বা সুগারের এলোপ্যাথি ঔষধ খাচ্ছেন তার সঙ্গেই এই ওষুধ খেতে পারেন।
এই সময় সিজন চেঞ্জের সময়, তাই নাক দিয়ে অনেকেরই কাঁচা জল ঝরছে, মনে ভয় এই বুঝি করোনায় আক্রান্ত হলাম, ভয় না করে আর্সেনিক এলবাম-৬ ওষুধটি তিন ফোঁটা করে দিনে তিন থেকে চার বার খান উপকার পাবেন।
এই সময়ে আরেকটি সাধারন সমস্যা হল গলায় ব্যথা। একটু গলায় ব্যথা হলেই আমরা ভাবছি করোনা ভাইরাস বোধহয় গলায় বাসা বেঁধেছে। ঠিক আছে পরীক্ষা করা যাক। ফাইটোলক্কা ২০০ আর বেলেডোনা ৩০ পাল্টা পাল্টি করে দিনে চারবার তিন ফোঁটা করে হাফ কাপ জলে দিয়ে খান আর ফাইটোলক্কা Q অথবা আর্নিকা Q একটু হালকা গরম জলে ১৫ থেকে ২০ ফোঁটা মিশিয়ে গার্গল করুন, দেখুন দুই তিন দিনের মধ্যেই কমে যাবে।
এখন এক জরুরীকালীন পরিস্থিতির সম্মুখীন আমরা।আমাদের বিবেচনা, আমাদের দায়বদ্ধতাই আমাদের এই বিপদ থেকে আমাদের মুক্তি দিতে পারে। তাই এখন অযথা আতঙ্ক নয়, সঠিক আচরনই এখন আমাদের করা উচিৎ।
যে সমস্ত রুগীদের দেখবেন জ্বর, গলাব্যাথা এবং শ্বাসকষ্ট আছে, যারা বিদেশ ফেরত কোনও ব্যক্তির সাথে কোনও না কোনও ভাবে সংস্পর্শে এসেছেন তারা কাল বিলম্ব না করে সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যান এবং নিজেদের পরীক্ষা করান।কেউ যদি মনে করেন তিনি করোনা আক্রান্ত কোনও ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছিলেন, তাহলে তিনি নিজেকে চৌদ্দ দিনের জন্য অন্যদের থেকে আলাদা করে ফেলুন, এর মধ্যে জ্বর,গলাব্যাথা বা শ্বাসকষ্ট হলে সরকারি হাসপাতালে যোগাযোগ করুন।
ঘরের মধ্যে থাকুন, বাইরে বেরোবেন না, এটা কিন্তু কোনো রাজনৈতিক দলের ডাকা ভারতবন্ধ অথবা বাংলা বন্ধ নয়, যে আপনি বাহাদুরি দেখিয়ে সারা রাজ্যময় ঘুরে এসে বীরদর্পে বন্ধুদের সাথে গল্প করবেন। এই বন্ধ ভাঙলে ক্ষতি আপনার, আপনার পরিবারের, আপনার প্রিয়জনের যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে তবে সে দায় আপনার।
তাই আবার বলি অযথা আতঙ্কিত না হয়ে আমরা সরকারী নির্দেশ পালন করি, ঘরে থাকি, সুষম খাদ্য গ্রহণ করি আর একটু ঘরেই শরীর চর্চা করি। শ্বাসপ্রশ্বাসের যে ব্যায়ামগুলি বিশেষত প্রাণায়ম গুলি এই সময় খুবই ফলপ্রদ।