আমাদের ভারত, ১০ জুন: ২০১৪ সাল থেকে টানা নরেন্দ্র মোদী সরকারের মন্ত্রী ছিলেন স্মৃতি ইরানি। বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের ভরসার পাত্রীও ছিলেন বটে। এবার নির্বাচনে হেরে গিয়ে বাদ পড়লেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে। কিন্তু তিনি রাতারাতি স্মৃতি হয়ে যাবেন, মানতে নারাজ পর্যবেক্ষকদের অনেকেই।
মানবসম্পদ, তথ্য ও সম্প্রচার, বস্ত্র, মহিলা ও শিশু কল্যাণ এবং সংখ্যালঘু মন্ত্রকের দায়িত্বও সামলেছেন। এবার উত্তর প্রদেশের অমেঠি থেকে লড়াই করে জয় ছিনিয়ে আনতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। আর তাই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় জায়গাও হারালেন।
প্রাক্তন মডেল, টেলিভিশন অভিনেত্রী এবং প্রযোজক হিসাবে বরাবরই নজর কেড়েছেন আকর্ষণীর ব্যক্তিত্বের অধিকারী স্মৃতি। ১৯৯৭-এ ‘মিস ফেমিনা’ সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় হন ফাইনালিস্ট। ‘কিয়ুকি সাস ভি কাভি বহু থি’, ‘তুলসি’ প্রভৃতির দৌলতে স্মৃতি মালহোত্রা হয়ে উঠেছিলেন জনপ্রিয় মুখ। হন ‘রামায়ণ’-এর সীতা। এরপর রাজনীতিতে আসেন। ২০১১-র ১৯ আগস্ট তিনি হন বিজেপি-র সহ সভাপতি। গুজরাট থেকে হন দলের রাজ্যসভার সদস্য।
২০১৪-র ২৬ মে থেকে ২০১৬-র ৫ জুলাই ছিলেন মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক, এরপর ২০১৬-র ৭ জুলাই হন বস্ত্রমন্ত্রী। ওই দায়িত্বে ছিলেন ’২১-এর ৭ জুলাই পর্যন্ত। ২০১৭-র ১৮ জুলাই তিনি হন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী। ওই দায়িত্বে ছিলেন ’১৮ পর্যন্ত। ২০১৯ থেকে ২০২৪ নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রক, ’২২ থেকে ’২৪ প্রথম অমুসলিম হিসাবে পান সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রকের দায়িত্ব।
২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে ৫৫ হাজারের কিছু বেশি ভোটে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে হারিয়ে অমেঠিতে ইতিহাস তৈরি করেছিলেন স্মৃতি ইরানি। কিন্তু পাঁচ বছরেই সেই চিত্র পুরো পাল্টে গেল। সেই অমেঠিতে এ বার স্মৃতির হার হলো লাখ খানেকের বেশি ভোটে। তিনি হারলেন গান্ধী পরিবারের কারও কাছে নয়। গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ কিশোরীলাল শর্মার কাছে হারতে হল স্মৃতিকে। অমেঠিতে এবার স্মৃতি পেয়েছেন ৩ লক্ষ ৭২ হাজার ০৩২ ভোট। আর কংগ্রেসের কিশোরী লাল পেয়েছেন প্রদত্ত ভোটের ৫৫ শতাংশ— ৫ লক্ষ ৩৯ হাজার ২২৮।
সেই স্মৃতি রাজনীতি থেকে একেবারে মুছে যাবেন, এ কথা প্রায় কেউই বিশ্বাস করেন না। তবে, কবে, কীভাবে ফের ভেসে উঠে প্রভাবশালীদের মাঝে জায়গা করতে পারবেন, সেদিকে লক্ষ্য রাখছেন আগ্রহীরা।
এবার মন্ত্রিসভায় জায়গা হয়নি আরও অন্তত দুই প্রভাবশালীর। এঁদের একজন রাজীব চন্দ্রশেখর। ২০২১ সালে বৈদ্যুতিন ও তথ্য প্রযুক্তি বিভাগের মন্ত্রী ছিলেন রাজীব। লোকসভা নির্বাচনে তিরুবনন্তপুরমে কংগ্রেসের শশী থারুরের কাছে পরাজয় হয় তাঁর। হেরে গিয়েছেন সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি।