Sixth pay commission, Barajora, Spinning Mill, তিন দশক পর বড়জোড়া স্পিনিং মিলে ষষ্ঠ পে কমিশন চালু, উল্লসিত শ্রমিকদের বিজয় মিছিল

সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ৮ মার্চ: তিন দশক পর সরাসরি ষষ্ঠ পে কমিশন লাগু হওয়ায় উল্লসিত বড়জোড়া কংসাবতী কো আপারেটিভ স্পিনিং মিলের কর্মীরা। এতদিন সরকারি সংস্থার স্থায়ী কর্মী হয়েও সরকারি কর্মীর মর্যাদা পাননি এই স্পিনিং মিলের কর্মীরা। গত বুধবার সেই সুখবরটি এসে পৌছানোর পর আজ শুক্রবার কারখানার তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের সদস্যরা বিধায়ক অলক মুখার্জির নেতৃত্বে একটি বিজয় মিছিল করে শিল্পাঞ্চলের পথ চলতি মানুষ, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষকে মিষ্টিমুখ করান।

বাম জমানায় রাজ্যে বেশ কয়েকটি স্পিনিং মিল চালু হয়। তার মধ্যে বীরভূমের ময়ূরাক্ষী কটন মিল, বড়জোড়ার কংসাবতী কো-অপারেটিভ স্পিনিং মিল এবং শ্রীরামপুর ওয়েস্ট বেঙ্গল স্পিনিং মিলের কর্মীদের জন্য সরকারি কোনো বেতন কাঠামো ছিল না। রাজ্য সরকারের যুগ্ম সচিব এই ৩ সংস্থার কর্মীদের জন্য সরাসরি ষষ্ঠ পে-কমিশনের নির্দেশিকা প্রকাশ করছেন। সেই নির্দেশিকা হাতে পেয়ে এদিন শ্রমিকরা উল্লসিত হয়ে বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাদের যন্ত্রণার অবসান ঘটিয়েছেন।

তৃণমূল শ্রমিক সংগঠন কংসাবতী শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক বিশ্বনাথ মল্লিক বলেন, এর জন্য বড়জোড়ার বিধায়ক অলক মুখার্জি তৎপর না হলে আমরা সেই তিমিরেই পড়ে থাকতাম। তিনি বলেন, বামফ্রন্ট সরকার বেতন কাঠামো নিয়ে আমাদের দাবিকে মান্যতা দেয়নি। তারা আলোচনাতেই বসেনি কোনোদিন।

সংগঠনের পরিচালক প্রদীপ নন্দী বলেন, কংসাবতী কো-অপারেটিভ স্পিনিং মিল উৎপাদন শুরু করে ১৯৯২ সালে। তখন থেকেই নো ওয়ার্ক নো পে ছিল। সর্বোচ্চ বেতন ছিল দৈনিক ৫০০ টাকা। তার আগে ছিল ১৫০ /২০০ টাকা। এই কম মাইনে পেয়ে অনেকে অবসর নিয়েছেন। পেনশন পাননা। নির্দিষ্ট বেতন কাঠামোর জন্য আমরা আমরন অনশন পর্যন্ত করেছি। ২০২১ সালে অলক মুখার্জি বিধায়ক হয়ে আমাদের জন্য বিধানসভায় লড়াই করেছেন।

এপ্রসঙ্গে প্রাক্তন বাম বিধায়ক সুজিত চক্রবর্তী বলেন, আমি শিল্প বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য ছিলাম। রাজ্য সরকার ৯টি সংস্থা বন্ধ করে দিয়েছে। কংসাবতী স্পিনিং মিল বন্ধ করার সমস্ত পরিকল্পনা করে ফেলেছিল তৎকালীন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। আমি একা লড়াই করে গেছি। তখন ২০০০ টাকা বেতন বাড়ানো হয়েছিল এবং ১৫ কোটি টাকা লোনের ব্যবস্থা করেছিল সরকার। সেই কথা ভুলে গেলে সেটা দুর্ভাগ্য, বলে মন্তব্য করেন সুজিত চক্রবর্তী।

বিধায়ক অলক মুখার্জি বামফ্রন্ট সরকার ও বড়জোড়ার বাম বিধায়কদের দিকে আঙুল তুলে বলেন, ২০২১ পর্যন্ত বড়জোড়ায় সিপিআইএম বিধায়ক ছিলেন। তিনি কিচ্ছুটি করেননি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বোঝাতে পেরেছিলাম এই কারখানার কর্মীদের দাবি কতটা ন্যায় সঙ্গত। মানবিক মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি ষষ্ঠ পে কমিশন লাগু করলেন সংশ্লিষ্ট ৩ সংস্থার কর্মীদের জন্য। সরকারি বেতন কাঠামোর সমস্ত সুযোগ সুবিধা পাবেন কর্মীরা। ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এই পে কমিশন লাগু হবে বলে জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *