সাথী প্রামানিক, পুরুলিয়া, ৫ জানুয়ারি: নিতুড়িয়ার রানিপুরের কয়লা খাদানে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী যুবতী সুস্মিতা গোপের দেহ উদ্ধার হল না। রবিবার ন্যাশন্যাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্সের দলও কার্যত ব্যর্থ হল দেহ উদ্ধার করতে। অসুস্থ হয়ে পড়লেন ডুবুরি। আর এই কারণেই থমকে গেল উদ্ধার কাজ। গত শুক্রবার নিতুড়িয়া থানার রানিপুর এলাকায় একটি পরিত্যক্ত খাদানে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হন স্থানীয় যুবতী সুস্মিতা গোপ। তাঁর বিয়ের জন্য টাকা যোগাড় করতে বাবা অসমর্থ হচ্ছিল বলে জানা গিয়েছে। আর তাই সেই গ্লানি থেকেই ওই যুবতী পরিত্যক্ত খাদানে ঝাঁপ দেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এক খনি কর্মী গোটা ঘটনার কথা এলাকাবাসীকে জানান। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় ইসিএলের মাইন্স রেসকিউ টিম। তারা ব্যর্থ হয়ে ফিরে যায়। এরপর বিপর্যয় মোকাবিলা কেন্দ্রও ওই যুবতীর দেহ তুলতে পারেনি। প্রায় ৭০০ ফুট গভীর রয়েছে ওই পরিত্যক্ত খাদান। যাতে জল ভর্তি হয়ে আছে। শনিবার সন্ধ্যায় এনডিআরএফের দল আসে উদ্ধারকাজ চালাতে। এনডিআরএফের সেকেন্ড ব্যাটেলিয়ানের ইন্সপেক্টার চিন্ময় কাত্যায়ণের নেতৃত্ব ২০ জনের দল শুরু করে উদ্ধার কাজ। গতকাল রাতে তেমন সুবিধে করা যায়নি। এদিন সকাল থেকে খাদানের জমে থাকা জলে বিশেষ পদ্ধতির মাধ্যমে আলোড়ন করা হয়। যদি দেহ পুরানো জলের আবর্জনায় কোথাও ফেঁসে থাকে এই ভেবে। কিন্তু দেহ ভেসে ওঠেনি। শেষে ডুবুরি নামানো হয়। কিন্তু জলের গভীরে নামতেই খনির গ্যাসে অসুস্থ হয়ে যান এক উদ্ধারকারি। তাঁর নাম বিশ্বজিত্ মাণ্ডি। গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে নামলেও তিনি শ্বাস কষ্ট জনিত কারণে উপরে উঠে আসেন। এর পরই কার্যত একপ্রকার হাত তুলে নেয় এনডিআরএফ।
ইন্সপেক্টার চিন্ময় কার্তিকেয়ন জানিয়েছেন, এই গভীর খনিতে নামা সম্ভব নয়। তিনি ওই যুবতীর পিতাকেও স্বান্তনা দেন। কিন্তু উপায় কিছু নেই। এখন দেহ যদি ভেসে ওঠে সেদিকেই তাকিয়ে পরিবার ও রানিপুরের বাসিন্দারা। তবে, যুবতীর এই আত্মঘাতীর ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকায়।