রাজেন রায়, কলকাতা, ৭ ফেব্রুয়ারি: কোনও সময় কোন মানুষ একজনের কাছে থাকে অত্যন্ত প্রিয়। আবার সময় পরিস্থিতি পাল্টে গেলে সেই মানুষ হয়ে পড়ে অত্যন্ত অপ্রিয়। ঠিক এমনটাই ঘটেছে শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং অভিনেত্রী দেবশ্রী রায়ের মধ্যে। একসময়ের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী দেবশ্রীকে এবার প্রকাশ্যে ‘ডাইনি’ বলে আক্রমণ করলেন তিনি।সম্পর্কের এই কদর্যতা চমকে দিয়েছে গোটা বঙ্গ সমাজকে। অন্যদিকে দেবশ্রীকে কারোর সম্পর্কেই কোনওদিন কুরুচিকর বা বিতর্কিত মন্তব্য করতে দেখা যায়নি। শোভনের এই ‘অশালীন’ আক্রমণকে মুখ বুজে তৃণমূল তথা বাঙালি যে মেনে নেবে না সেটা বেশ ভালই টের পেয়ে গিয়েছে গেরুয়া শিবির। তাই তাঁরা শোভনের এই মন্তব্যকে তাঁর ব্যক্তিগত মতামত বলে চালিয়ে দিচ্ছে। এর আগে সৌমিত্র খাঁ এবং এবার শোভন চট্টোপাধ্যায়ের এহেন বেফাঁস মন্তব্য অস্বস্তি বাড়িয়েছে বিজেপির। বৈশাখী নেশায় এবার যে শোভন মাত্রা ছাড়াচ্ছেন, তা মানছেন গেরুয়া শিবিরের একাংশ।

শোভনকে এখন রাজ্য বিজেপির কলকাতা জোনের পর্যবেক্ষক করা হয়েছে। সেই শোভন যদি মহিলাদের সম্পর্কে এহেন আক্রমণ শানান প্রকাশ্যেই, তাহলে দুই ২৪ পরগনা আর কলকাতায় পদ্ম ফোটা কঠিন হয়ে যাবে। একই সঙ্গে দেবশ্রীর প্রতি শোভনের এই আক্রমণ কিছুটা হলেও তৃণমূলের সঙ্গে অভিনেত্রীর দূরত্ব কমিয়ে দিয়েছে।

তৃণমূলের ক্ষমতায় আসার আগে থেকেই দেবশ্রীর সঙ্গে শোবনের যোগাযোগ ছিল। শোভনই দেবশ্রীকে রাজনীতির আঙিনায় এনেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। তৃণমূলের একাধিক অনুষ্ঠানে দেবশ্রী ও তাঁর নাচের গ্রুপকে নৃত্য পরিবেশন করতে দেখা গিয়েছে। ২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের সময় দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার তৃণমূল সভাপতি ছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। সেই সূত্রেই তৃণমূল নেত্রী দেবশ্রীকে রায়দিঘি আসনে তৎকালীন দাপুটে বামমন্ত্রী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী করেছিলেন। সেই ভোটে জিতে দেবশ্রী রায়দিঘির বিধায়ক হন। সেই বন্ধুত্ব নষ্ট হয় শোভনের জীবনে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের আগমনের পর থেকেই। অন্তত এমনটাই দাবি তৃণমূলের নেতানেত্রীদের।

