Hindus, Sandeshkhali, NCST, সন্দেশখালিতে হিন্দুদের ১০০ দিনের কাজের মজুরি কেড়ে নিত শেখ শাহজাহান, খরচ করে ফেললে ধার করতে বাধ্য করতো, জানাচ্ছে এনসিএসটি

আমাদের ভারত, ২৪ ফেব্রুয়ারি: সন্দেশখালির তৃণমূল কংগ্রেস নেতা শেখ শাহজাহান ও তার সহযোগীরা তাদের দলের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার জন্য আদিবাসীদের উপর অত্যাচার করেছে এবং তাদের কাছ থেকে জোর করে ১০০ দিনের কাজের মজুরিও ছিনিয়ে নিয়েছে। এমনটা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ওখানকার হিন্দুদের সঙ্গে হতো বলে জানিয়েছে জাতীয় তপশিলি উপজাতি কমিশন।

একাধিক বিস্ফোরক তথ্য সামনে তুলে এনেছেন কমিশনের কর্তারা। একটি সর্বভারতীয় দৈনিকের প্রতিবেদন অনুসারে সন্দেশখালির অভিযোগকারীরা কমিশনকে জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ শেখ শাহজাহান ও তার সঙ্গীদের সুরক্ষা দিত।

তিন সদস্যের এনসিএসটি দলের নেতৃত্ব দেওয়া ভাইস চেয়ারপার্সন অনন্ত নায়ক জানিয়েছেন, আদিবাসী মহিলাদের যৌন হেনস্থা এবং শাহজাহান ও তার সহযোগীদের জমি দখলের কমপক্ষে ৫০টির বেশি অভিযোগ পেয়েছেন তারা। এনসিএসটি টিম জানতে পেরেছে শাহজাহান দরিদ্র আদিবাসীদের তাদের ১০০ দিনের কাজের আয়ের টাকা দিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিতো। আর যদি তারা ইতিমধ্যে টাকা খরচ করে ফেলত তাহলে তাদের ঋণদাতাদের কাছ থেকে টাকা ধার করে দিতে বলা হতো। তিনি আরো জানান, সারাদেশে এই ধরনের ঘটনা তিনি আগে দেখেননি।

নায়েক বলেন, তাদের কাছে ৫০ জন অভিযোগকারী অভিযোগ করেছেন, তাদের বেশির ভাগই হিন্দু। অর্থাৎ শেখ শাহজাহানরা মূলত এলাকায় হিন্দুদের টার্গেট করত।
এই সব অভিযোগকারীরা তদন্তকারী দলকে বলেছেন যে, অভিযুক্ত ও তার সহযোগীরা নির্বাচনে অন্য দলকে ভোট দেওয়া লোকেদের নির্যাতন করেছিল।

উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে উত্তপ্ত। জমি দখল করে মাছের ভেড়িতে পরিণত করার অভিযোগ তুলে শাহজাহানকে গ্রেফতারের দাবিতে রাস্তায় নেমেছে স্থানীয় মানুষ। যাদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিল মহিলা। এর আগে কোটি কোটি টাকার রেশন বন্টন দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছিল শাহজাহানের। তার তদন্তে নেমেছিল ইডি। এই কেলেঙ্কারিতে অক্টোবর মাসে প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে গ্রেফতার করেছে ইডি। তিনি এখনো জেলে। এরপর শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গেলে আধিকারিকদের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে শাজাহান অনুগামীদের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত শাহজাহান, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। ইডি তাকে তিনটি সমান পাঠালেও কোনো সাড়া মেলেনি।

এনসিএসটি জানতে পেরেছে শাহজাহান ও তার সহযোগীরা স্থানীয় মহিলাদের গভীর রাতে সভায় আসতে বলতো। যারা তাদের দাবি মানতেন না তাদের পরিবারের সদস্যদের ওপর নির্যাতন চলতো। নির্যাতিতারা যদি পুলিশের কাছে যেতেন পুলিশ কোনো এফআইআর বা অভিযোগ দাখিল করত না, পরিবর্তে অভিযোগকারীদের শাহজাহানের সাথে আলোচনা করতে বলতেন পুলিশ।

এনসিএসটি টিম আরো বলেছে, অভিযুক্তরা আদিবাসী পরিবারগুলিকে তাদের জমি তাদের হাতে তুলে দিতে এবং মাঠের নোনা জল ছেড়ে দিতে বলতে বাধ্য করতো। তিনি জানান, শাহজাহানের বিরুদ্ধে ১০ কিলোমিটার এর বেশি এলাকায় এক হাজারেরও বেশি উপজাতি ও মানুষের জমি দখল করার অভিযোগ রয়েছে। সন্দেশখালিতে যৌন নির্যাতন, জমি দখল ও হিংসায় উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে এখনো পর্যন্ত শাহজাহানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী স্থানীয় তৃণমূল নেতা শিবপ্রসাদ হাজরা, উত্তম সর্দার সহ ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *