আমাদের ভারত, ৮ ফেব্রুয়ারি: কিছুদিন আগেই অযোধ্যার রাম মন্দিরে প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয়েছে রামলালার। নিজের ঘর ফিরে পেয়েছেন ভগবান রাম। এরপরই জ্ঞানব্যাপী ও মথুরার ইদগাহ নিয়েও তৎপরতা দেখা গেছে। এই পরিস্থিতির মধ্যেই তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তাঁর কথায়, রাম ঘর ফিরে পেতেই অস্থির হয়ে উঠেছেন কৃষ্ণ। অর্থাৎ তিনি মথুরার দিকে ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের।
রামধারী সিং দিনকরের রাশমীরাঠি নামক বইয়ের, কৃষ্ণ কি চেতাবনি নামক কবিতা থেকে কয়টি লাইন উদ্ধৃত করে যোগী আদিত্যনাথ বলেন, মহাভারতে পাণ্ডবদের কাছে পাঁচটি গ্রাম চেয়েছিলেন কৃষ্ণ। আর হিন্দুরা তাদের আস্থার সঙ্গে যুক্ত তিনটি জায়গা চাইছেন শুধু।
যোগী বলেন, তারা অযোধ্যার সঙ্গে কাশী, মথুরাও চেয়েছিলেন। কিন্তু এখনো তা হয়নি। যদিও তিনি নিশ্চিত করে দিয়েছেন হাল ছাড়ার কোন প্রশ্ন নেই তাদের। তাঁর কথায়, অযোধ্যার উৎসব দেখেছেন কৃষ্ণ, তিনি যেমন খুশি হয়েছেন, তেমন অস্থির হয়ে উঠেছেন। রাম নিজের ঘরে ফিরে এসেছেন, এখন কৃষ্ণ ফিরতে চাইছেন। অযোধ্যা নিয়ে তারা যেভাবে সাফল্য পেয়েছেন, কাশী ও মথুরা নিয়েও সমান আশাবাদী যোগী। এখন অযোধ্যায় রামলালা ফিরে এসেছেন, বাকি দুই জায়গার সমস্যার সমাধান হবে।
কয়েক বছর ধরে চলা আইনি বিবাদ মিটে গেছে। অযোধ্যার জমি জট কাটিয়ে বাবরি মসজিদের বিতর্কিত জমিতে বিরাট রাম মন্দির তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে আবার নতুন করে বিতর্কে উঠে এসেছে কাশীর জ্ঞানব্যাপী মসজিদ। হিন্দুদের দাবি মেনে ইতিমধ্যে জ্ঞানব্যাপী মসজিদের একটি নির্দিষ্ট অংশে পূজার অনুমতি দিয়েছে আদালত। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে জ্ঞানব্যাপীর বেসমেন্টে পুজোপাঠও শুরু হয়েছে। হিন্দুপক্ষের আইনজীবী বিষ্ণু শংকর জৈন আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার রিপোর্ট দেখিয়ে দাবি করেছেন, বারানসীতে জ্ঞানব্যাপী মসজিদ তৈরির আগে বিরাট হিন্দু মন্দির ছিল। কারণ এএসআই রিপোর্টে বলা হয়েছে, মসজিদ তৈরির জন্য মন্দির ভেঙ্গে ফেলা হয়েছিল। এখনো মসজিদের নিচে পুরনো কাঠামো থেকে গেছে।
অন্যদিকে আরটিআই- এর জবাব দিতে গিয়ে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া মথুরা শাহী ইদগাহ মসজিদের জায়গায় কাটারায় কেশব দেবের মন্দির ছিল বলে জানিয়েছে। প্রমাণ হিসেবে ব্রিটিশ শাসনকালের গণপূর্ত বিভাগ বিল্ডিং এর সড়ক বিভাগকে উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন স্থানে ৩৯টি স্মৃতিস্তমের একটি তালিকা সরবরাহ করেছিল। সেই তালিকায় কাটরা কেশব দেব শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি ৩৭ নম্বরে উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে লেখা আছে আগে কাটরা টিলায় কেশব দেবের মন্দির ছিল। ফলে হিন্দুরা দাবি করেছে, মসজিদের ১৩ একর জমি শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি। সেখানেই ছিল মূল মন্দির। সেটা তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হোক।
অযোধ্যা মামলার রায়ের পরই কাশী ও মথুরা পুনরুদ্ধার যে পরবর্তী লক্ষ্য সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কারণ, বাবরি মসজিদের পরেই, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের বরাবরের স্লোগান,”ইয়ে তো সিরফ ঝাঁকি হ্যায়, কাশী মাথুরা আভি বাকি হ্যায়।”