রাজেন রায়, কলকাতা, ২৯ জানুয়ারি: জয় শ্রীরাম স্লোগান নিয়ে মন্তব্য করার জেরে পাল্টা অভিনেত্রী সায়নী ঘোষের টুইটার অ্যাকাউন্টে বছর পাঁচেক আগেকার একটি টুইট নিয়ে তোলপাড় হয়েছে রাজ্য রাজনীতি। ওই ছবিতে দেখা গিয়েছিল শিবলিঙ্গে কন্ডোম পড়াচ্ছেন এক মহিলা। এই ঘটনায় সায়নী তার টুইটার অ্যাকাউন্ট টি হ্যাক হয়েছে বললেও তাকে ঘরে-বাইরে আক্রমণ করতে ছাড়েননি বিজেপি নেতারা। তবে বৃহস্পতিবার সমস্ত সীমা অতিক্রম করে যান বিজেপি নেতা সৌমিত্র খাঁ। সায়নী ঘোষকে খোলাখুলি যৌনকর্মী বলে বসেন তিনি। এমনকি সায়নী মা সরস্বতীকে নিয়েও অশ্লীল মন্তব্য করেছেন বলে তিনি দাবি করেন।
এই মন্তব্যের পর শুক্রবার সকাল থেকে অস্বস্তিতে বিজেপি শিবির। দিলীপ ঘোষ এ প্রসঙ্গ এড়িয়ে গেলেও শমিক ঘোষ বলেছেন, দল এ ধরনের বক্তব্য সমর্থন করে না।
ছেড়ে কথা বলার পাত্রী নন টলিউড অভিনেত্রীও। সৌমিত্রর উদ্দেশে সায়নীর সাফ মন্তব্য, “মহিলাদের সম্মান করা তো আপনাদের রক্ততে নেই। আপনার পরিবারের একজন প্রাক্তনই দিন কয়েক আগে এই অভিযোগটি করেছিলেন। এবার তো আপনি সেই অভিযোগটিকেই আরও পরিস্কার করে দিলেন দেখছি! যা দেখছি, বাংলার মা-বোনেদের জন্য বিশেষভাবে চিন্তার কারণ।” তাঁর কথায়, “সৌমিত্র খাঁয়ের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করলে করাই যায়, কিন্তু ওঁর বেঁফাস মন্তব্যের জন্য ওঁর পার্টির লোকই ওঁকে নিতে পারে না!”
‘যৌনকর্মী’ প্রসঙ্গে সৌমিত্র খাঁ’র উদ্দেশে টলিউড অভিনেত্রীর মন্তব্য, “আপনার কষ্টটা আমি বুঝি। রাগে, শোকে আপনার ভারসাম্য হারানোটা খুবই স্বাভাবিক! আমি কে বা কী সেই সার্টিফিকেট আপনার কাছ থেকে আমি নেব না এবং সব পেশাকেই আমি সমানভাবে সম্মান করি। ফলত, আপনি আমাকে বিশেষ ছোট করতে পারলেন না। তবে আপনি নিজে অনেকটা ছোট হয়ে গেলেন।”
একই সঙ্গে গেরুয়া শিবিরের ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতি নিয়েও কটাক্ষ করলেন সায়নী। বললেন, “কাজের কথা বলুন। মন্দির, মসজিদ, গির্জা যা ইচ্ছে বানান, কিন্ত তার সঙ্গে কয়েকটি স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, কর্মক্ষেত্র তৈরি করতে পারলে, বাত বন যায়ে.. ও ও হো বাত বন যায়ে। কিন্তু না, আপনি সে নিয়ে কিছু বলতে পারবেন না। কারণ সেই বিষয়ে আপনার কোনও দৃষ্টিভঙ্গি নেই। মানুষকে সবসময় ভুল বোঝানো এবং ‘ভাষণ পলিটিকসের’ বাদশা আপনি।” মোদী সরকারের ক্ষমতায় পেট্রোল-ডিজেলের বাড়তি দাম নিয়েও কটাক্ষ করেছেন অভিনেত্রী। তার কথায়, “যেখানে দেশে উত্তরোত্তর জ্বালানি তেলের মূল্য ক্রমবর্ধমান, সেই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে আপনি ভাষণে স্কুটি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। খুব ভাল কথা। আপনি ফ্রিতে পেট্রোল-ডিজেল পান বলে, সাধারণ মানুষের কথা ভাবেন না। যাঁরা আপনাকে ভোট দিয়ে জিতিয়েছেন তাঁদের পাশে একটু দাঁড়ান ও দায়িত্ববান হোন।”