রাজেন রায়, কলকাতা, ৬ ফেব্রুয়ারি: বিধানসভা ভোটের আগে সকলে যেন নিজের অবস্থান ঠিক করে নিচ্ছেন। কিছুদিন আগেই অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ তৃণমূল ছেড়ে যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। এবার সাম্প্রতিক সময়ে খবরের শিরোনামে থাকা অভিনেত্রী সায়নী ঘোষের একটি মন্তব্য তার তৃণমূলে যোগদানের সম্ভাবনা সম্পর্কে রাজনৈতিক জল্পনা ফের উস্কে দিল।
বরাবর মনেপ্রাণে বামপন্থী মতাদর্শেই বিশ্বাসী সায়নী ঘোষ। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে একটি বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমে বিজেপির শ্লোগান সংক্রান্ত একটি মন্তব্য নিয়ে তাকে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্নভাবে আক্রমণের শিকার হতে হয়। এমনকি তার টুইটার অ্যাকাউন্টে পুরোনো একটি ছবি নিয়েও তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। এবার সেই টলিউড অভিনেত্রীই তৃণমূল নেতা মদন মিত্রের সঙ্গে একমঞ্চে। শুধু তাই নয়, সায়নীর মুখে শোনা গেল তৃণমূলের প্রাক্তন মন্ত্রী সম্পর্কে একরাশ প্রশংসাও। আর সেই প্রেক্ষিতেই এবার জোরালো প্রশ্ন উঠেছে যে, বামপন্থী মতাদর্শে বিশ্বাসী সায়নী ঘোষ কি তাহলে তৃণমূলে যোগ দিতে চলছেন?
শনিবার ‘শক্তিরূপেণ’ নামে ভবানীপুরে একটি মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন সায়নী ঘোষ ও মদন মিত্র। অরাজনৈতিক অনুষ্ঠান হলেও মদন মিত্র ও বর্তমানে সায়নীর অবস্থান দেখে যে, এই প্রসঙ্গে রাজনীতির কথা উঠেই আসে, তা বলাই বাহুল্য। সেখানেই টলিউড অভিনেত্রীর দাবি, দেশের অন্যান্য শহরের তুলনায় বাংলায় মহিলারা নিরাপদ। রাত ২টোয় নিশ্চিতে বাড়ি ফিরতে পারেন তিনি।
অনুষ্ঠানে টলি-অভিনেত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে তৃণমূল নেতা মদন মিত্র বলেন, “এই মুহূর্তে বাংলার প্রতিবাদী কণ্ঠ সায়নী ঘোষ। সায়নী তুমি এগিয়ে চলো। গোটা সরকার, বাংলা তোমার পাশে আছে। সায়নী তো দূরের কথা, একটা কারও গায়ে আঁচ পড়লে গোটা বাংলায় আগুন জ্বলবে। বাংলা বরদাস্ত করবে না এসব।”
ঘাসফুল শিবিরের নেতার প্রতি সৌজন্যতা দেখিয়ে সায়নীও পালটা রসিকতা করে বলেন, “মদনদা অনেক বড় লিডার। সম্মান রেখেই বলছি, মদনদা কিন্তু বাংলার ক্রাশও বটে। এই যে এত সুন্দর আদানপ্রদান পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া কোথাও সম্ভব নয়।” এর পাশাপাশি সায়নী এও বলেন যে, “আমি কোথায় যাব, কার সঙ্গে থাকব। সেটা আমরাই ঠিক করব। পশ্চিমবঙ্গ আলাদা জিনিস। এখানে মহিলাদের যে জায়গা দেওয়া হয়, তা অন্যত্র নেই। বাংলায় থাকি বলে নয়, জীবনে ও কর্মক্ষেত্রেও বুঝতে পেরেছি।”
অভিনেত্রীর সমর্থনে মুখ খুলেছেন মমতা। বিজেপিকে হুঁশিয়ারি দেগে বলেছেন, “ক্ষমতা থাকে তো সায়নীর গায়ে হাত দিয়ে দেখাক”। ‘দিদি’র এমন আন্তরিকতা ভোলেননি সায়নী। শনিবারের অনুষ্ঠানের মঞ্চে সে কারণে অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতাও স্বীকার করেছেন অভিনেত্রী।