কলকাতা পুরসভা থেকে জন্ম-মৃত‍্যুর শংসাপত্র নিতে দুর্গতিতে পড়তে হয় জেলার বাসিন্দাদের!

চিন্ময় ভট্টাচার্য
আমাদের ভারত, ১৯ মার্চ: সকাল ১০টায় খোলে কলকাতা পুরসভার মূল ফটক। কিন্তু তার অনেক আগে, সূর্যের আলো ফুটতে না-ফুটতেই পুরসভার বাইরে প্রতিদিনই লম্বা লাইন পড়ে যায়। কারণ, লাইনের প্রথম ১০০ জনকেই ঢুকতে দেওয়া হয় জন্ম এবং মৃত‍্যুর শংসাপত্র নেওয়ার জন‍্য। জন্মের শংসাপত্র নেওয়ার সুযোগ পান ১০০ জন। আর সমসংখ‍্যক ব‍্যক্তিই পান মৃত‍্যুর শংসাপত্র নেওয়ার সুযোগ। লাইনের শেষদিকে যাঁরা থাকেন, শংসাপত্র হাতে পেতে তাঁদের সন্ধে হয়ে যায়।

সেজন‍্য, লাইনের প্রথমদিকে থাকার উদ্দ‍েশ‍্যে অনেকে কাগজ-চাদর পেতে রাতটা পুরসভার সামনেই কাটিয়ে দেন। সকাল ১০টা বাজার একটু আগে, কোনও না-কোনও পুলিশকর্মী এসে শতজন সৌভাগ্যবানের হাতে রাখা কাগজে প্রথমে সই করে নম্বর এবং তারিখ লিখে দিয়ে যান। সেটাই সকাল ১০টার পর হয়ে ওঠে পুরসভায় ঢোকার প্রবেশপত্র। শুধু তাই নয়, মূল গেটে প্রবেশের পরও দুর্ভোগের হাত থেকে রেহাই পান না জন্ম-মৃত‍্যুর শংসাপত্র নিতে আসা লোকজন। তাদের বেলা ১১টা পর্যন্ত দাঁড় করিয়ে রাখা হয় কলকাতা পুরসভার অভ‍্যন্তরীণ প্রাঙ্গণে। এর পর যে ঘরে শংসাপত্র দেওয়া হয়, সেই ঘরে ঢুকিয়ে দুপুর একটা পর্যন্ত লাইনে দাঁড় করিয়ে রাখা হয় শংসাপত্র নিতে আসা লোকজনকে।

ওই হলঘরে বসার আসন রয়েছে ৬৮টি। সন্ধে পর্যন্ত সেখানেই বসে বা ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ‍্য হন ২০০ জন। তাঁদের কাগজপত্র পরীক্ষার সময় বা জিজ্ঞাসাবাদের সময় পুরকর্মীরা এমন আচরণ করেন, যেন শংসাপত্র নিতে আসা লোকজন আসলে অচ্ছুত। শংসাপত্র নিতে এসে তাঁরা কার্যত অপরাধ করে ফেলেছেন। এই কঠিন পরিস্থিতি কাটিয়ে ফেরার সময় অনেকেরই মুখ থেকে স্বগতোক্তির মতো বেরিয়ে আসে একটাই উক্তি, ‘সত‍্যিই! নরক যন্ত্রণা ভোগ করলাম।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *