বিগত ৮ বছরে নেই কুপার্স হল্ট স্টেশনে উন্নয়নের লেশ, রেল দাবি না মানলে এলাকার মানুষদের বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকি

স্নেহাশিস মুখার্জি, আমাদের ভারত, নদিয়া, ২৮ ডিসেম্বর: ২০১২ সালে কুপার্স হল্টকে ঘোষিত হল্ট স্টেশন হিসাবে রেলের খাতায় কলমে উল্লেখ থাকলেও বিগত ৮ বছরেও উন্নয়নের ছোঁয়া থেকে উপেক্ষিতই রয়েছেন কুপার্স হল্ট স্টেশন এমনই দাবি কুপার্স সংলগ্ন মানুষের।

কুপার্সের একশ্রেণির মানুষের অভিযোগ, বিগত ৮ বছরে জনস্বার্থে কোনও উন্নয়ণমূলক কাজই হয়নি এই স্টেশনে। এই হল্ট স্টেশনের পার্শ্ববর্তী কুপার্স ক্যাম্প, আরআইসি কলোনী, বৈদ্যপুর ১, বৈদ্যপুর ২, পশ্চিম শিমুলিয়া, কুমার সাতপুর, রুপশ্রী পল্লি, নোকারী, মাগুরখালী, কীর্তি নগর, অনাথা ক্যাম্প সংলগ্ন গ্রামগুলিতে প্রায় লক্ষ্যাধিক মানুষের বসবাস। অভিযোগ, এই গ্রামগুলি থেকে আগত নিত্য অফিস যাত্রী, স্কুল পড়ুয়া, হকার এবং সর্বপোরি সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের যাতায়াতের সুবিধাৰ্থে কুপার্স হল্ট স্টেশনে সমস্ত ট্রেন দাঁড়ায় না। কুপার্সের ফুল চাষি এবং কাঁচা বাজারের ব্যবসায়ীদের প্রতিনিয়ত প্রায় ৫.৩ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে রায়নগর স্টেশনে বা ৪ কিলোমিটার রাণাঘাটে গিয়ে কাঁচামাল আড়তদারদের ডেলিভারি দিতে হয়। এর ফলে প্রায়ই সঠিক সময়ে আড়তদারদের কাছে মাল ডেলিভারি দিতে তাঁরা অসমর্থ হয়। অভিযোগ, সেকারণে প্রতিনিয়ত তাঁদের কাঁচা মাল অল্প লভ্যাংশে আড়তদারদের বেচে দিতে বাধ্য হয়। দিনের শেষে প্রচুর ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। রাণাঘাট থেকে কুপার্স হল্ট সড়ক পথে যেতে গেলে জন পিছু ১৫ টাকা দিতে হয়। গভীর রাতে এই হল্ট স্টেশনের পার্শ্ববর্তী গ্ৰামে আসতে গেলে জন প্রতি ৩০ টাকাও দিতে হয় বলে অভিযোগ। যদি সমস্ত ট্রেন এই হল্ট স্টেশনে থামতো তাহলে তাদের এইসব সম্যসার সম্মুখীন হতে হত না বলে এলাকার মানুষের দাবি।

এছাড়াও প্লাটফর্মে পানীয় জল ও বাথরুমের অবস্থা খুবই শোচনীয় বলে অভিযোগ। প্রতীক্ষারত যাত্রীদের বসার শেডের অবস্থা খুবই খারাপ। সেকারণে গত ১১ এবং ১৬ তারিখ এই মর্মে মানুষের যাতায়াতের সুবিধার জন্য কুপার্স হল্ট সংলগ্ন একাধিক নাগরিক বৃন্দ নিয়মিত ট্রেন থামানোর দাবিতে আমজনতার স্বাক্ষর সম্বলিত এক প্রতিলিপি রানাঘাটের সাংসদ ও ডিআরএম ইস্টার্ন রেলওয়ে শিয়ালদহ ডিভিসনকে প্রদান করে। এই প্রতিলিপিতে বলা হয়েছে ২০১২ সালে কুপার্স হল্ট স্টেশন ঘোষণা হবার পর এই পর্যন্ত সর্ব মোট ৩৩ টা (১৭ টা আপ, ১৬ টা ডাউন) ট্রেনের মধ্যে (৭ টা আপ, ৬ টা ডাউন) ট্রেন এই হল্ট এ দাঁড়ায়, যা পৰ্যাপ্ত নয়। এতে সাধারণ মানুষের প্রচুর অসুবিধা হয়।

এলাকারই বাসিন্দা সোমা দাস শীল জানান, আমরা মানুষের অসুবিধার কথা জানিয়েছি এলাকার সাংসদ ও রেল কর্তৃপক্ষকে এখন দেখি রেল কি ব্যবস্থা নেয়। ফুলচাষি নিহার ঘোষ বলেন, আমাদের এখানে প্রচুর ফুলের চাষ হয়। প্রতিদিন আমাদের রায়নগরে যেতে হয় বাজার ধরতে। সমস্ত ট্রেন এখানে থামলে আমাদের আর অন্য কোন স্টেশনে গিয়ে ব্যবসা করতে হবে না। আর আমরা শুধু নয় সবজি বিক্রেতারাও একটু লাভের মুখ দেখবে।আমজনতার পক্ষ থেকে বাচ্চু মালি জানান আমরা নতুন বছর পরার আগে পর্যন্ত দেখব , যদি তার মধ্যে কিছু না হয় তাহলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে গিয়ে সরাসরি রেল মন্ত্রির দৃষ্টি আকর্ষণ করব।

এবিষয়ে রানাঘাটের সংসাদ জগন্নাথ সরকার জানান, এটা যেহেতু কোন ব্যক্তিগত স্বার্থ নয়, সমাজের এক শ্রেণির মানুষের স্বার্থ যেখানে জরিয়ে আছে সেহেতু আমি যত দ্রুত সম্ভব এই সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করব।
শিয়ালদহ ডিভিশনের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিহার চক্রবর্তীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেন নি তাই রেলের তরফ থেকে এখন পর্য্যন্ত কোন প্রতিক্রিয়া জানা সম্ভব হয় নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *