কুড়িয়ে পাওয়া মেয়েকে ১২ বছর পর ফিরিয়ে নিতে এল আসল মা

কুমারেশ রায়, অামাদের ভারত, মেদিনীপুর, ২ জানুয়ারি: ঠিক যেন চিত্রনাট্য। রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া মেয়ের পরিচয় জানা গেল ১২ বছর পর। বলতে গেলে এক যুগ।

দীর্ঘ ১২ বছর ধরে কুড়িয়ে পাওয়া মেয়েকে মায়ের স্নেহে বড় করার পর, আসল মা তাকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য এলেন। স্বাভাবিক ভাবেই এই বিদায় বেলার কাহিনীতে চোখ জলে ভিজে গেছে অনেকেরই। আর যিনি এতদিন ওই মেয়েকে বড় করেছেন তিনিও দিশেহারা।
ঘাটাল থানা সূত্রে এরকমই এক ঘটনা জানা গিয়েছে।

আজ থেকে ১২ বছর আগে খড়ার পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সোনালী সামন্তর মেয়ে নিখোঁজ হয়। তখন সোনালী মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন।ইতিমধ্যে সেই হারিয়ে যাওয়া মেয়েকে হরেন দোলুই নামে এক ব্যক্তি অজব নগরে রাস্তার পাশ থেকে কুড়িয়ে পান। হরেনবাবুর স্ত্রী চন্দনাদেবী সেই কুড়িয়ে পাওয়া মেয়েকে এত বছর ধরে মায়ের স্নেহে বড় করেছেন। সেই মেয়ের নাম রেখেছেন দেবযানী। এখন সে স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। শুধু তাই নয়, হরেনবাবু দেবযানীর বার্থ সার্টিফিকেট পঞ্চায়েত অফিস থেকে বের করেন।

ইতিমধ্যে আসল মা সোনালী সামন্ত মানসিক ভারসাম্য হীনতা থেকে সুস্থ হয়েছেন। এখন সোনালী দেবী তার মেয়েকে ফেরত পেতে চাইছেন। তিনি জানতে পারেন, তার মেয়েকে এতদিন লালন পালন করেছেন হরেন দোলুই। সোনালীদেবী শনিবার হরেনবাবুর বাড়িতে এসে ধরনায় বসেছেন। তিনি তার মেয়েকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি করেন। কিন্তু হরেনবাবুর স্ত্রী চন্দনা দেবী এখন সেই ১২ বছর আগের কুড়িয়ে পাওয়া মেয়ে, যার নাম দেবযানী তাকে ফেরত দিতে নারাজ। সোনালী দেবীও মেয়ের বার্থ সার্টিফিকেট দেখান। শেষমেষ পুলিশি হস্তক্ষেপ করতে হয়। দেবযানীকে (নামগুলি পরিবর্তিত) পুলিশ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা শিশু সুরক্ষা কমিশনের হাতে তুলে দিয়েছে। এই ঘটনায় এলাকার মানুষ আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। তাদের চোখ জলে ভিজে যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *